ডেস্ক রিপোর্টঃ তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বা অন্য যেসব আইন নিয়ে সাংবাদিকদের উদ্বেগ আছে তা নিরসন করা হবে। এ লক্ষ্যে আমি দায়িত্ব নেয়ার প্রথম দিন থেকেই কাজ শুরু করেছি।

মঙ্গলবার চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

দেশে গজিয়ে ওঠা ভুঁইফোড় অনলাইন নিউজ পোর্টাল প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, শুধু বাংলাদেশে নয়, সমগ্র পৃথিবীতে অনলাইন মিডিয়ার ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটেছে। এই বিস্তৃতি বন্ধ করা সঠিক নয়। কিন্তু এটা যাতে সঠিকভাবে ও নিয়মনীতির মধ্য দিয়ে হয়, সেটা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য।

তিনি বলেন, অনেকে ঘরে বসে অনলাইন চালু করে দেন। অনলাইনের জন্য নীতিমালা হচ্ছে। রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা হচ্ছে। নীতিমালার ভিত্তিতে অনলাইনের যখন রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা হবে, তখন ভুঁইফোড় অনলাইন বন্ধ হয়ে যাবে। এ জন্য আমরা কাজ করছি। আমার পূর্বসূরি কাজটি অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে গেছেন। আমি সেই কাজে সফল হব ইনশাআল্লাহ।’

অনলাইন টেলিভিশন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যখন অনেক টিভি ক্যামেরা সামনে আসে, তখন বোঝা সম্ভব হয় না কোনটি অনলাইন টিভি আর কোনটি আসল টিভি। যে কেউ একটা অনলাইন টেলিভিশন খুলে ফেলবে অনুমোদন ছাড়া-সেটা হতে পারে না। অনলাইন টেলিভিশন থাকবে। আইপি টিভি এখন বাস্তবতা। অনলাইন টেলিভিশনের অনুমোদন নেয়ার একটা ব্যবস্থা আমরা করব। এগুলোকে নীতিমালার মধ্যে আনার কার্যক্রম শুরু করেছি। তবে একটু সময় লাগবে। সাংবাদিকদের পরামর্শ লাগবে। আলোচনা করেই আমরা এটি করব।’

সাংবাদিকদের ওয়েজবোর্ড প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, যত দ্রুত সম্ভব নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করব। ২৮ তারিখ একটি সময়সীমা আছে। চেষ্টা করব এই সময়সীমার মধ্যে করা যায় কি না। এটা করতে গেলে অনেক ধাপ অতিক্রম করতে হয়।

তিনি বলেন, বর্তমান ওয়েজ বোর্ডে টেলিভিশনের সাংবাদিকরা নেই। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, সেখানে টেলিভিশন আসা দরকার। পরবর্তীতে আমরা এ নিয়ে কাজ করব। ওয়েজ বোর্ড শুধু ঘোষণা নয়, বাস্তবায়ন করা হচ্ছে কিনা সেটাও তদারক করা হবে। জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা ইতিমধ্যে তৈরি করা হয়েছে। সেটা এখন আইন মন্ত্রণালয়ে আছে। এটি নিয়ে কাজ হচ্ছে। এটিও হবে।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, দক্ষিণ জেলা অওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ, উত্তর জেলা সাধারণ সম্পাদক এম এ সালাম।

এর আগে বক্তব্য দিতে গিয়ে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশ টেলিভিশনের চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সম্প্রচার ৬ ঘণ্টা থেকে বাড়িয়ে ১২ ঘণ্টায় উন্নীত করা হবে। তবে তাতে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে। এছাড়া বাংলাদেশ টেলিভিশনের মতোই চট্টগ্রাম কেন্দ্রকে পূর্ণাঙ্গ টিরেস্টেরিয়াল হিসেবে গড়ে তোলা হবে যাতে সারা দেশের মানুষ এই কেন্দ্রের অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারেন।’

তিনি বলেন, ‘১০ বছর আগে আওয়ামী লীগ যখন ডিজিটাল বাংলাদেশ ও দিন বদলের কথা বলেছিল, তখন অনেকেই হাস্যরস করেছিলেন। আজ দেশের মানুষ ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল ভোগ করছেন। হাতে হাতে পৌঁছে গেছে মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট। তথ্য আদান-প্রদান ছাড়াও প্রত্যন্ত এলাকার লোকজন বিদেশ থেকে টাকা-পয়সা ঘরে বসে পাচ্ছেন। একসময় মানুষ ছেঁড়া কাপড়ে খালি পায়ে হাঁটত। এখন তা নেই। অন্ন সমস্যার সমাধান হয়েছে। লোকসংখ্যা অনেক বাড়লেও দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। খাদ্য উদ্বৃত্তও থাকছে। একসময় আমাদের দেশকে দরিদ্র দেশ বলা হতো। এখন আমরা মধ্যম আয়ের দেশ। অর্থাৎ দিন বদল হয়েছে।’

মন্ত্রী বলেন, আমরা যে ডিজিটাল বাংলাদেশ ও দিন বদলের স্বপ্ন দেখিয়েছিলাম তা বাস্তবায়িত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু স্বপ্ন দেখান না, স্বপ্ন বাস্তবায়নও করেন। ব্যক্তিজীবনের মতো রাষ্ট্রীয় পর্যায়েও স্বপ্ন দেখতে হয়। না দেখলে উন্নতি করা যায় না। গত নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী আরেকটি স্বপ্ন বাস্তবায়নের কথা বলেছেন। তা হলো প্রতিটি গ্রামে শহরের সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দেয়া। ইতিমধ্যে গ্রামে শহরের সুযোগ সুবিধা পৌঁছে গেছে।

তিনি বলেন, গ্রামের আরও উন্নতি হবে। এই যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাদুকরি নেতৃত্বের কারণে হয়েছে। স্বপ্ন বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ নিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার যাত্রা শুরু করেছে। চ্যালেঞ্জবিহীন কাজে কোনো আনন্দ নেই। আওয়ামী লীগ চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছে। ১০ বছর আগে যে স্বপ্ন শেখ হাসিনা দেখিয়েছিলেন তা যেমন বাস্তবায়িত হয়েছে, তেমনি আগামী ৫ বছরের জন্য যেসব স্বপ্নের কথা বলেছেন,তাও বাস্তবায়িত হবে।

J/N.

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে