ডেস্ক রিপোর্ট : শস্য ভান্ডর নামে খ্যাত জয়পুরহাট জেলার পাঁচ উপজেলার সর্বত্র এখন চলছে বোরো ধান কাটা-মাড়াই উৎসব। ফলন ভাল ও বাজারে ধানের দাম বেশী হওয়ায় কৃষকেরা বেশ খুশি। জেলায় সরকারীভাবে বোরো ধান কেনা এখন শুরু হয়নি । বোরো চাল সংগ্রহের জন্য চাতাল মালিকদের সঙ্গে চুক্তি কার্যক্রম চলছে।
জেলায় মাঠের পর মাঠ জুড়ে এখন সোনালী ধান। ঘামঝরা ফসল ধানটুকু ঘরে তোলা নিয়ে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন জয়পুরহাটের কৃষকরা। ইতোমধ্যে শতকরা ৪৬ ভাগ বোরো ধান কাটা-মাড়াই সম্পন্ন হয়েছে। কৃষকরা জানান, সার, বীজ, কীটনাশক, পানি সেচ ও লেবার সহ প্রতি বিঘা জমিতে গড়ে ৭-৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ফলন হয়েছে জাত ভেদে বিঘা প্রতি ২৮-৩৩ মন ধান। এ হিসেবে প্রতি মণ ধান উৎপাদনে সার, কীটনাশক, লেবার ও পানি সেচসহ খরচ পড়েছে ৪ শ’ টাকার মতো। জেলার ধানের বাজার হিসাবে খ্যাত পুরানাপৈল, জামালগঞ্জ ও বটতলী বাজারসহ বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে ধান বিক্রি হচ্ছে প্রকার ভেদে সাড়ে ৭শ’ থেকে ৮শ’ টাকা মণ (৪০ কেজি)। দাম ভাল পাওয়ায় কৃষকরা আনন্দিত । সরকারী ভাবে এখনো ধান সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়নি।
জয়পুরহাট সদরের পুরানাপৈল গ্রামের কৃষক আফতাব উদ্দিন , আশরাফ আলী, সিরাজুল ইসলাম জানান, জমিতে বোরো ধানের ফলন দেখে তারা খুশি হয়েছেন । বাজারে ধানের দামও ভাল কিন্তু মজুরের সংকট থাকায় মাড়াইয়ের খরচ বেশী পড়ছে বলে তারা জানান। এক বিঘা জমির ধান কাটতে এবার সাড়ে ৩ হাজার থেকে চার হাজার টাকা দিতে হচ্ছে মজুরদের। গত বছর এ খরচ ছিল আড়াই হাজার টাকা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুধেন্দ্রনাথ রায় বাসস’কে জানান, চলতি ২০১৬-২০১৭ মৌসুমে জেলায় এবার ৭২ হাজার ৩শ ১৩ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও চাষ হয়েছে ৭২ হাজার ৩শ ৫ হেক্টর। এতে চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৩ লাখ মে.টন। গত ২০১৫-২০১৬ মৌসুমে জেলায় ৭২ হাজার ৩শ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়। এতে চাল উৎপাদন হয়েছিল ৩ লাখ ১০ হাজার ৩শ ৭৮ মে. টন । যা জেলার খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্যান্য স্থানে সরবরাহ করা সম্ভব হয়েছে।
কৃষি বিভাগ জানায়, অর্জিত ৭২ হাজার ৩শ ৫ হেক্টরের মধ্যে উচ্চ ফলনশীল জাতের বোরো রয়েছে ৫৮ হাজার ৫২৫ হেক্টর ও হাইব্রিড জাতের ১৩ হাজার ৭৮০ হেক্টর। উপজেলা ভিত্তিক বোরো চাষের মধ্যে রয়েছে সদর উপজেলায় ১৬ হাজার ৭৮৫ হেক্টর, পাঁচবিবি উপজেলায় ২০ হাজার ৬০ হেক্টর, আক্কেলপুরে ১০ হাজার ৩৫০ হেক্টর, ক্ষেতলালে ১১ হাজার ৪৩০হেক্টর এবং কালাই উপজেলায় ১৩ হাজার ৬৮০ হেক্টর। উচ্চ ফলনশীল (উফশী) জাতের বোরো’র মধ্যে রয়েছে ব্রি-ধান-১৬, ২৮, ২৯, ৫০, ৫৮, ৬২, ৬৩ এবং ৬৪। এ ছাড়াও রয়েছে জিরাশাইল, কাজল লতা ও মিনিকেট। হাইব্রিড জাতের মধ্যে রয়েছে এস এল-৮, তেজ, তেজ গোল্ড, হিরা-২, ৩, ৪, ৫, এসিআই-১, ২, ৩, ৪ ও ৫। এ ছাড়াও রয়েছে মানিক রতন, বিজলী, স্পাহানী, আলোড়ন, জাগড়ন, তিনপাতা সুপার, সুফলা, দুর্বার, সাথী ।

বি/এস/এস/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে