ডেস্ক রিপোর্ট- বাংলাদেশে নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠনগুলোয় আলাদা সুইসাইডাল স্কোয়াড বা আত্মঘাতী দল আছে। তবে জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) নব্য ধারার সদস্যরা তাদের পরিবারকেই আত্মঘাতী স্কোয়াড হিসেবে ব্যবহার করছে।

এ জন্য নিহত জঙ্গিদের পরিবারের সদস্য এবং গ্রেপ্তার ও পলাতক জঙ্গিদের স্ত্রী-সন্তানদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। নব্য জেএমবির সদস্যরা আত্মঘাতী হামলাকারীর দল বাড়াতে ধর্মভীরু মেয়েদের বিয়ে করছে। এরপর ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে তাদের মগজ ধোলাই করছে। প্ররোচিত করছে শিশুদের। এ প্রক্রিয়ায় জঙ্গি নেতাকর্মীদের গোটা পরিবার নব্য জেএমবির আদর্শ গ্রহণ করছে। পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট ও র‌্যাবের গোয়েন্দারা সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর তদন্ত করতে গিয়ে এমন তথ্য পেয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র কালের কণ্ঠকে জানিয়েছে, হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার পর নব্য জেএমবির দুই ডজন জঙ্গিকে শনাক্ত করা হয়েছে, যাদের পুরো পরিবার উগ্রবাদে বিশ্বাসী। তাদের কয়েকজন ইতিমধ্যে অভিযানে নিহত হয়েছে। এখনো এক ডজন জঙ্গি গা ঢাকা দিয়ে আছে, যাদের পুরো পরিবার একই আদর্শ গ্রহণ করেছে। জঙ্গিরা পরিবার নিয়ে ভুয়া পরিচয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে গোপন আস্তানা গড়ে তোলে। সেখানে পরিবারের নারী-শিশুদের নিয়েই জঙ্গি হামলার ছক কষে। হামলায় ব্যর্থ হলে কিভাবে আত্মহত্যা করতে হবে সে কৌশলও শেখানো হয়। এতে দুই ধরনের সুফল হয় বলে জঙ্গিরা মনে করে। প্রথমত, গ্রেপ্তার এড়ানো যাবে এবং এতে তথ্য ফাঁস হবে না; দ্বিতীয়ত, আত্মঘাতী হলে নিজের পাশাপাশি পুলিশ-র‌্যাবকেও মারা যাবে; এতে কথিত জিহাদ সফল হবে।

আত্মঘাতী নারী বা পারিবারিক জঙ্গিবাদকে অশনিসংকেত হিসেবে দেখছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, এ জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। কৌশলে অভিযান চালাতে হবে। তবে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, নব্য জেএমবির এই পারিবারিক আত্মঘাতী মনোভাব বিষয়টি নিয়ে তাঁরা কাজ করছেন। অভিযানের ক্ষেত্রে নেওয়া হচ্ছে নতুন কৌশল। গ্রেপ্তার নারী ও শিশুদের কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সর্বশেষ গত শনিবার আশকোয়ায় অপারেশন রিপল ২৪ চলাকালে আত্মঘাতী আফিফ কাদেরী নাবিল ওরফে শহীদের বাবা তানভীর কাদেরীও আজিমপুরে অভিযানের সময় আত্মহত্যা করে। তবে আফিফের ভাই তাহরীম ও তাদের মা আবেদাতুল ফাতেমা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে নিজেদের ভুল স্বীকার করেছেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান গতকাল বলেন, ‘পারিবারিক বা আত্মঘাতী যাই হোক না কেন জঙ্গিদের কোনো স্থান দেশে নেই। ধারাবাহিক অভিযানে তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। দেশের মানুষ এখন সচেতন, সবাই এগিয়ে এসেছে।

রাজধানীর কাকরাইল গির্জার নিরাপত্তা পরিস্থিতি দেখতে গিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘নিহত ও আত্মসমর্পণকারী সবাই একটি জঙ্গি পরিবার। তাদের কোনো সাংগঠনিক কাঠামো নেই। তাই গোপনে কে কোন রোল পালন করছে, তা এ মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়। তবে তাদের সক্রিয় হতে দেওয়া হবে না। ’

সিটিটিসি ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘যে বিস্ফোরক ও সরঞ্জামাদি আশকোনায় ঘটনাস্থলে পাওয়া গেছে, তাতে মনে হচ্ছে সামনে জঙ্গিদের হয়তো কোনো হামলার পরিকল্পনা ছিল। এতে ওই নারীকেই ব্যবহার করা হতো। নারীদের জঙ্গি দলে ব্যবহার ও আত্মঘাতী বানানোর তথ্য আগেই পাওয়া গেছে। শিশুদেরও মোটিভেট করা হচ্ছে। এ জন্য কৌশলে অভিযান চালানো হয়। আমরা জিজ্ঞাসাবাদের সময় কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থাও করি। ’

মনিরুল ইসলাম আরো জানান, এখানে যে নারী সুইসাইডাল অ্যাটাক করে মারা গেছে, তার দুই বিয়ে হয়েছিল। আগের স্বামীর নাম ইকবাল। জানতে পেরেছি সে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। এরপর সন্ত্রাসী সুমনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। ওই বিয়ের পর থেকেই স্বামীর প্ররোচনায় সে নব্য জেএমবির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। তাকে জঙ্গি বা আত্মঘাতী বানানোর জন্যই বিয়ে করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গতকাল পর্যন্ত ওই নারীর নাম সাকিনা বলে জানা গেছে। তার সঙ্গে বোমায় আহত শিশু সাবিনা তারই সন্তান। সে তার প্রথম পক্ষের অর্থাৎ ইকবালের সন্তান। সাকিনার দ্বিতীয় স্বামী সুমন দুর্ধর্ষ জঙ্গি বলেই ধারণা করছেন তদন্তকারীরা।

সিটিটিসির এক কর্মকর্তা জানান, আশকোনায় আত্মসমর্পণ করা জঙ্গি মুসার স্ত্রী তৃষামনিও জঙ্গি আদর্শে বিশ্বাসী। চার মাস বয়সের শিশুর কথা চিন্তা করে এবং মেজর (অব.) জাহিদের স্ত্রী শিলার অনুরোধে সে আত্মসমর্পণ করে। গত শুক্রবার রাতে পুলিশের অভিযান টের পেয়ে মোবাইল ফোনের বিশেষ অ্যাপসে সে স্বামী মুসাকে ঘটনা জানায়। তখন মুসা স্ত্রী তৃষামনিকে শিশুসন্তানসহ আত্মঘাতী হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল।

এদিকে র‌্যাব সূত্র জানায়, গত চার মাসে তারা একাধিক নারী জঙ্গি ও জঙ্গি পরিবারকে আটক করেছে। গত ৭ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ফার্মগেট ও নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে মারজিয়া আক্তার ওরফে সুমি, তার স্বামী শরিফুল ইসলাম ওরফে সুলতান মাহমুদ তাপস ওরফে মাহমুদ, আমিনুল ইসলাম ও তার স্ত্রী নাহিদ সুলতানাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-২। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তারা নব্য জেএমবির কথিত জিহাদে যোগ দিয়ে সম্প্রতি বিয়ে করে এবং প্রশিক্ষণের জন্য পাকিস্তানে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। তারা মূলত জঙ্গি দলে অংশ নিতেই নিজেদের মধ্যে বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হয়। গত ২১ জুলাই জেএমবির দক্ষিণাঞ্চলীয় আমির মাহমুদুল হাসান ওরফে হাসানকে টঙ্গী থেকে আটকের পর নারী জঙ্গিদের তহবিল সংগ্রহের ব্যাপারে তথ্য পাওয়া যায়। এরপর ১৪ আগস্ট গাজীপুরের সাইনবোর্ড এলাকা থেকে আকলিমা নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ঐশী, মেঘলা ও মৌ নামের তিন নারীকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। আকলিমা, মেঘলা ও মৌ মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে পড়ত। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করে ইন্টার্নশিপ করছিল ঐশী। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের সূত্রে দুই দম্পতিকে আটক করা হয়।

গত ৪ অক্টোবর গাজীপুরে পুলিশের অভিযানে আটক নব্য জেএমবির ঢাকা অঞ্চলের সামরিক কমান্ডার ফরিদুল ইসলাম ওরফে আকাশের গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার গান্ধাইল ইউনিয়নের বরইতলায়। সেখানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তার পুরো পরিবার জঙ্গিবাদে জড়িত। পুলিশের হাতে ধরা পড়ে আকাশের মা ও দুই বোন এখন কারাগারে, বাবা পলাতক।

সিটিটিসি সূত্র জানায়, গত ১০ সেপ্টেম্বর পুরান ঢাকার আজিমপুরে জঙ্গিদের একটি আস্তানায় পুলিশের অভিযানের মুখে তানভীর কাদেরী আত্মহত্যা করে। ওই আস্তানা থেকেই আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় তার স্ত্রী আবেদাতুল ফাতেমা ও তাদের যমজ ছেলের একজন তাহরীম কাদেরী ওরফে রাসেলকে। ওই কিশোর ও তার মাও আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল। তার ভাই আফিফ আশকোনার আস্তানায় আত্মহত্যা করেছে। তাদের বাবা তানভীর কাদেরী নব্য জেএমবির অন্যতম সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করত। স্ত্রী ও সন্তানদেরও জঙ্গিবাদের দীক্ষা দিয়েছে সে। গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলাকারীদের আশ্রয়সহ নানাভাবে সহায়তা দিয়েছে এ পরিবারটি। তার বারিধারার ভাড়া বাসায় বসেই গুলশান হামলার ছক কষা হয়। এরপর পরিবার নিয়ে মিরপুর ও আজিমপুরে বাসা নেয় তানভীর কাদেরী। তাহরীম আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তি ও পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, তাদের বাসায় কথিত জিহাদের পরিকল্পনা ও কৌশল নিয়ে আলোচনা হতো। সেখানে অভিযান হলে আত্মহত্যা বা সুইসাইডাল অ্যাটাকের ব্যাপারে বলা হতো। এতে পুলিশের রিমান্ডে যাওয়া লাগবে না এবং সংগঠনের ক্ষতি হবে না বলে জানাত জঙ্গি নেতারা। একই সঙ্গে বিস্ফোরণ ঘটালে তাদের উদ্দেশ্য সফল হবে বলেও দাবি করা হয়।

তানভীর কাদেরীর বন্ধু মেজর (অব.) জাহিদুল ইসলাম ছিল নব্য জেএমবির সামরিক কমান্ডার। সে তার স্ত্রী জেবুন্নাহার শীলাকেও জঙ্গিবাদে টেনে এনেছে। গত ২ সেপ্টেম্বর রূপনগরে পুলিশের অভিযানে নিহত হয় জাহিদুল। ১০ সেপ্টেম্বর আজিমপুরে অভিযানের চার দিন আগেই শিশুসন্তান নিয়ে পালিয়ে জঙ্গি ডেরায় চলে যায় শীলা। গত শনিবার আশকোনার আস্তানা থেকে আত্মসমর্পণ করার আগে সে দক্ষিণখান এলাকার আরেকটি বাসায় ছিল বলে জানা গেছে।

নব্য জেএমবির আইটি বিশেষজ্ঞ বাসারুজ্জামান ওরফে চকলেটের নাম গুলশান হামলার পর উঠে এলেও এখনো পলাতক সে। তার স্ত্রী ফেরদৌসী আফরিন ওরফে শারমিন নব্য জেএমবির নারী শাখার সমন্বয়ক। নিজের পছন্দেই বিয়ে করেছিল রাজধানীর একটি মহিলা কলেজের মাস্টার্সের ছাত্রী শারমিন। বিয়ের পরই স্বামীর কাছ থেকে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয় সে। পরে গত ১০ সেপ্টেম্বর আজিমপুরের আস্তানায় ১০ মাস বয়সী মেয়ে সাবিহা জামানসহ ধরা পড়ে।

নব্য জেএমবির সংগঠক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নুরুল ইসলাম মারজান এখনো পলাতক। আজিমপুরে অভিযানে জঙ্গি ডেরায় পাওয়া যায় তার স্ত্রী আফরিন ওরফে প্রিয়তিকে। খালাতো বোন প্রিয়তিকে ভালোবেসে বিয়ে করে মারজান। এরপর দুজনই নব্য জেএমবির আদর্শ গ্রহণ করে। প্রিয়তি হয় নব্য জেএমবির নারী সংগঠক।

সিটিটিসি ইউনিটের এক কর্মকতা বলেন, জেএমবির নেতা বোমা মিজানের স্ত্রীও এ সংগঠনের সদস্য ছিল। জেএমবির মধ্যে এমন নেতাও দেখা গেছে, যারা জীবিত অবস্থায় ঠিক করে গেছে তার মৃত্যু হলে কে পরে তার স্ত্রীকে বিয়ে করবে। অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরে ২০১৩ সালে দিনাজপুরে জেএমবি নেতা ডা. নজরুল খুন হয়। পরে তার স্ত্রী আরেক জঙ্গি নেতাকে বিয়ে করে, যা আগেই ঠিক করে রেখেছিল নজরুল।

সিটিটিসি সূত্র জানায়, ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনার অভিযোগে বাংলাদেশি নাগরিক রাজীব করিম বর্তমানে যুক্তরাজ্যে আটক রয়েছে। তার ভাই তেহজীব করিমকে খুঁজছে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা।

সূত্র জানায়, মোহাম্মদপুরের জঙ্গি আতাউল হক সবুজ কয়েক বছর আগে গোপালগঞ্জের সায়েমা আক্তার মুক্তাকে বিয়ে করে। এরপর সবুজ তার আপন ভাইয়ের সঙ্গে শ্যালিকা রাবেয়া আক্তার টুম্পাকে বিয়ে দেয়। আরেক শ্যালিকাকে বগুড়ার তুরকিউর রহমান নামের আরেক জঙ্গির কাছে বিয়ে দেয় সবুজ। সবুজের ভাই সাইফুল হক সুজন ওরফে শিফুল ইসলাম সিরিয়ায় নিহত হয়েছে। সবুজের ভায়রা তুরকিউর রহমানও গত বছর এক মাস বয়সী সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে দেশের বাইরে চলে গেছে। বর্তমানে তারা নিখোঁজ। আর বিদেশ থেকে পাঠানো জঙ্গি অর্থায়নের টাকা দেশে সংগ্রহ করতে গিয়ে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার হয়ে এখন কারাবন্দি সবুজের বাবা আবুল হাসনাত।

এ ছাড়া রাজধানীর বারিধারা থেকে দুই সহোদর ইব্রাহিম হাসান খান ও জোনায়েদ হাসান খানও উগ্রপন্থায় জড়ানোর পর থেকে পলাতক রয়েছে। গুলশান হামলাকারী নিহত জঙ্গি সামীহ মুবাশ্বীর তাদের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। রাজধানী ও আশপাশে ব্লগার, প্রকাশক ও মুক্তমনা লেখকদের হত্যার সঙ্গে জড়িত মুকুল রানা ওরফে শরিফুল ইসলাম ওরফে শরিফের শ্যালক বি এম মুজিবুর রহমান এবিটির একজন বড় নেতা ও প্রশিক্ষক।

সিটিটিসি কর্মকর্তারা জানান, এখনো পলাতক থাকা নব্য জেএমবির দুর্ধর্ষ জঙ্গি জাহাঙ্গীর ওরফে রাজীব গান্ধী ওরফে সুভাষ, রাশেদ ওরফে র‌্যাশ, ইকবাল, রিপন, খালিদ, মানিক, মামুন, জোনায়েদ খান, আজাদুল কবিরাজ ও বাদলের কিছু স্বজনও জঙ্গিবাদে বিশ্বাসী।

সিটিটিসি ইউনিটের অতিরিক্ত উপকমিশনার ছানোয়ার হোসেন বলেন, ‘নারী ও শিশুদের বিপজ্জনক পথ থেকে ফিরে আসার জন্য আমরা বলে থাকি। জিজ্ঞাসাবাদের সময় কাউন্সেলিং করা হয়। তানভীর কাদেরীর এক ছেলে ভালো হয়ে যাবে বলেছিল। বোঝানো হলে জঙ্গিদের স্ত্রীরা স্বামীদের দোষারোপ করে। বলে, স্বামীরাই ভুল বুঝিয়ে তাদের বিপথগামী করেছে। ’

নব্য জেএমবির নারী আত্মঘাতী দল সম্পর্কে নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘যখনই এ ধরনের কর্মকাণ্ড হয়, তখনই ফোকাস থাকে এমন জায়গায় যাতে সেটা আন্তর্জাতিক খবরে পরিণত হয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিক্রিয়া তৈরি করে। জঙ্গি সংগঠনগুলোর টার্গেট সব সময়ই থাকে এমন জায়গায়, যেখান থেকে তারা সবচেয়ে বেশি প্রোপাগান্ডা ভ্যালু পাবে। ফলে শিশু ও নারীদেরও তারা এখন ব্যবহার করছে। এ ধরনের অপতৎপরতা বন্ধ করতে হলে সামাজিক সচেতনতা বাড়াতে হবে। অভিযানও চালাতে হবে সাবধানে, বিশেষ কৌশলে।

আরেক নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আবদুর রশীদ বলেন, সাধারণত তিনটি কারণে পুরো পরিবার উগ্রবাদে জড়ায়। এগুলো হলো আদর্শিক, আর্থিক প্রণোদনা ও সামাজিকভাবে নিগৃহীতের ভয়। পরিবারের এক সদস্য উগ্রবাদে জড়িয়ে দেশের বাইরে চলে গেলে ভয় থাকে, বিষয়টি জানাজানি হলে তার পরিবারের সদস্যরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ কারণে অনেকে পুরো পরিবার নিয়ে দেশের বাইরে পাড়ি জমায়। আবার আত্মঘাতী হামলায়ও অংশ নেয়।

কে/কে/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে