shekh-hasina-pm

বিডি নীয়ালা নিউজ ( ২০ই জুলাই ২০১৬ইং)-ডেস্ক রিপোর্টঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা সন্ত্রাস ও জঙ্গি হামলার মতো ঘটনা ঘটচ্ছে তারা দেশের শত্রু, মানবতার শত্রু। তাদের খুঁজে বের করবোই। তাদের শিকড় তুলে ছাড়বোই। এরইমধ্যে সব বাহিনী নিয়ে বিশেষ তদন্ত টিম গঠন করে দিয়েছি। তারা কাজ শুরু করে দিয়েছে।

মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) রাতে দশম জাতীয় সংসদের একাদশ (বাজেট) অধিবেশনে কার্য প্রণালী-বিধির ১৪৭ বিধি অনুযায়ী প্রস্তাবের (সাধারণ) উপর আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

সংসদ দদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা নিজ এলাকা যান। বিশেষ তদন্ত টিমের কাজে সহযোগিতা করুন।’

গত ১ জুলাই রাতে গুলশানের হোলি আর্টিসান রেস্টুরেন্টে, ঈদের দিন দেশের সবচেয়ে বড় ঈদ জামাত কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায়, পবিত্র নগরী মদিনায়, ফ্রান্সে নিস শহরে সন্ত্রাসী-জঙ্গি হামলায় দেশি-বিদেশি নাগরিক নিহত হওয়ার এবং বিশ্বব্যাপী সংঘটিত জঙ্গি ও সন্ত্রাসী ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সন্ত্রাস ও জঙ্গি হামলা এখন আর কোনো দেশের সমস্যা নয়, পৃথিবীজুড়ে এটি ছড়িয়ে গেছে। কিন্তু দেশবাসীর সহযোগিতায় আমরা এটি প্রতিহত করবো। আমি বিশ্বাস করি মানবতার জয় একদিন হবেই।’

তিনি বলেন, ‘আজকে আমি ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখে তদন্তের কাজে সব বাহিনীকে নিয়ে বিশেষ তদন্ত টিম গঠন করে দিয়েছি। কারা জঙ্গিবাদের মদদদাতা, কারা এদের অর্থ দিচ্ছে, পরামর্শ দিচ্ছে তাদের বের করা হবে। আমি এর শিকড় তুলে ছাড়বোই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৭৫-এর পরে দেশে ১৯ টি ক্যু হয়েছে। আমি নিজেই তো গ্রেনেড হামলার শিকার হয়েছি। এসময় ২২ জন নেতা কর্মী মারা যান। যখন আমরা দেশের উন্নয়নে কাজ করছি, দেশকে উন্নয়নের ধারায় এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি তখন এরা উন্নয়নের কর্মকাণ্ড থামিয়ে দিতে এসব কাজ করছে। দেশকে হেয় প্রতিপন্ন করতে এসব অপকর্ম করছে। কিন্তু দেশে এখন একটি ঐকমত্য সৃষ্টি হয়েছে। আমরা এই ঐক্যের মাধ্যমে এসব প্রতিহত করতে সক্ষম হবো। আমি এমপিদের বলবো আপনারা নিজ নিজ এলাকায় সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কমিটি গঠন করুন, এদের প্রতিহত করুন, ধরিয়ে দিন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘১ জুলাই গুলশানে ঘটনার পরপরই আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী ঘটনাস্থলে চলে যায়, যার ফলে দুজন পুলিশ সদস্য মারা যান এবং অনেকে আহত হন। এঘটনায় দেশি-বিদেশি ২০ জন মারা গেছেন। আমি দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে সিলেট থেকে কমান্ডো বাহিনী এসে ঘটনার সামাল দিই। ঈদের দিন কিছু একটা হতে পারে বলে আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক করি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক থাকায় শোলাকিয়ায় জঙ্গিরা বেশি কিছু করতে পারেনি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ ঘটনায় যারা জড়িত তারা ইংলিশ মিডিয়ামের ছাত্র, দেশি-বিদেশি নামি-দামি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। তাই অভিবাবকদের বলবো, ছেলে মেয়েদের প্রতি নজর দিতে।’

এসময় তিনি হাদিস ও কুরআনের বিভিন্ন সুরা উল্লেখ করে বলেন, ‘ইসলাম একটি শান্তির ধর্ম। কিন্তু এরা ধর্মকে ক্ষুণ্ণ করছে।’

সাধারণ আলোচনা অংশ নেন সংসদে বিরোধী দলনেতা বেগম রওশন এরশাদ, তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ, জাতীয় পার্টির জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, স্বতন্ত্র এমপি তাহজীব আলম সিদ্দিকী, সৈয়দ নজিবুল বশর মাউজভান্ডারী, আবদুল মতিন খসরু, মঈন উদ্দিন খান বাদল, জাহাঙ্গীর কবির নানক,  বন ও পরিবেশ মন্ত্রী কাজী ফিরোজ রশিদ, আওয়ামী লীগের উপদেষ্ঠামণ্ডলীর সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহম্মুদ আলী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামন খান কামাল, বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী প্রমুখ।

বক্তারা জঙ্গি হামলার তীব্র নিন্দা জানানা এবং এর জন্য দেশের জামায়াতে ইসলাম ও সমমনা দলগুলোকে দায়ী করেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘গুলশানে জঙ্গি হামলা আমাদের কাছে ছিল একটি নতুন ধরনের আক্রমণ। এ বিষয়টি আমাদের কাছে অপ্রত্যাশিত থাকলেও ওইদিন সারা ঢাকা শহরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত ছিল। যার ফলে আমাদের বাহিনী সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়।  শোলাকিয়াতেও প্রস্তুত থাকায় আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী জঙ্গিদের ধরতে সক্ষম হয়। তবে এসব হামলা একইসূত্রে গাঁথা। দেশে এ পর্যন্ত ৫০ টি হামলা হয়েছে তার মধ্যে ৩৫ টি আমরা বের করেছি। এসব জঙ্গি হামলায় আর কেউ নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি। নতুন নামে  আজ আইএস পরিচয়ে এরাই জঙ্গি হামলা ঘটাচ্ছে।

 

banglamail24

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে