mamla

বিডি নীয়ালা নিউজ(১৮ ই জুলাই  ২০১৬ইং) গোলাপগঞ্জ (সিলেট)প্রতিনিধি আজিজ খানঃ  গোলাপগঞ্জে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে এক স্কুল পড়–য়া ছাত্রীকে দিয়ে ধর্ষণের নাটক তৈরি করায় সর্বত্র তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় মামলা হলে এলাকাবাসী ক্ষোব্দ হয়ে উঠে। স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করায় বিভিন্ন মহলে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ঘটনা সুষ্ট ভাবে তদন্তের জন্য সিলেটের পুলিশ সুপার বরাবরে আসামী পক্ষে একটি আবেদন করা হয়েছে। অপরদিকে তদন্তকারী কর্মকর্তা ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে এর কোন সত্যতা পাননি বলে জানাযায়। নির্বাচন সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে স্কুল পড়–য়া এক কিশোরীকে দিয়ে নাটক মঞ্চস্থ করায় ধিক্কার জানাচ্ছে সর্বস্তরের জনগণ।

গোলাপগঞ্জ উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন জনপদ হাকালুকি হাওরপারের এলাকা ইসলামপুর গ্রামের একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তা প্রচার করলে সর্বত্র তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এ বিষয়কে কেন্দ্র করে গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় দু’যুবকের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হলেও রুবেল নামক কলেজ পড়–য়া এক শিক্ষার্থীকে পুলিশ আটক করলে সর্বত্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। মামলার এজহারে ঐ এলাকার আব্দুল আজিজের কন্যা রুহেনা বেগম(১৬) উল্লেখ করেন, গত ১০ জুলাই রাত অনুমান ১২টায় তার পিতা ঘরের দরজা খুলে বের হয়ে গরু দেখতে গেলে একই এলাকার আমিরুল ইসলামের পুত্র বাছির মিয়া(২১) মুজিবুর রহমান মজু’র পুত্র সুজন মিয়া(২২) তাদের ঘরে প্রবেশ করে রুহেনা বেগমকে চেতনা নাশক ইন্জেকশন দ্বারা অজ্ঞান করে ধর্ষনের চেষ্টা করে। পরে রুহেনাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের ওসিসি বিভাগে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে তদন্ত সাপেক্ষে সত্যতা প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় একটি পত্র দেন ওসিসি বিভাগের ইনচার্জ অব পুলিশ। এতে ধর্ষণ করা হয়েছে মর্মে উল্লেখ করা হয়নি।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে বাদী পক্ষের কিছু লোক স্কুল ছাত্রীকে অজ্ঞান করে গণ ধর্ষন করা হয়েছে মর্মে সংবাদ প্রচার করতে থাকলে বেশ ক’টি অনলাইন পত্রিকায়ও তা প্রকাশিত হয়। বিষয়টি সঠিক ভাবে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করতে মামলার এজহার ভূক্ত আসামী সুজন মিয়ার পিতা মুজিবুর রহমান মজু গত ১৭ জুলাই সিলেটের পুলিশ সুপার বরাবরে একটি আবেদন করেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন- মামলার বাদীর নানা ইসকন্দর আলী ২০১১ সালে শরীফগঞ্জ ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হলে প্রতিদ্বন্ধী ছিলেন তার ভাই এম কবির উদ্দিন। পরবর্তীতে বিগত নির্বাচনে ইসকন্দর আলীর পুত্র দুলাল আহমদ চেয়ারম্যান প্রার্থী হলে ঐ সময়েও এম কবির উদ্দিন চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধীতা করেন। এলাকার নিরপেক্ষ লোকজনের বক্তব্য হচ্ছে, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দু’টি পক্ষের সৃষ্টি হওয়ায় উভয়ের মধ্যে বিরোধ বিরাজমান ছিল। একই এলাকায় দু’জন প্রার্থী হওয়ায় বার বারই তারা পরাজিত হয়েছেন। এ ব্যাপারে মুজিবুর রহমানের ভাই, সাবেক ইউপি সদস্য কবির উদ্দিন জানান, অতীতে ইসকন্দর আলী তাকে ধর্ষণ, অপহরণসহ বিভিন্ন মামলায় আসামী করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত না হওয়ায় সব মামলা থেকে তিনি খালাস পেয়েছিলেন।

প্রাপ্ত সংবাদে জানা যায়, ইসকন্দর আলী এক সময়ে শরীফগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। ঐ সময়ে হাকালুকি পারের জনপদ ইসলামপুর, নুরজাহানপুর ও কালীকৃষ্ণপুরের তিনি ছিলেন একক নেতা। কবির উদ্দিনের উত্থান হলে তার নেতৃত্বে ভাগ পড়ে। এ নিয়ে যে বিরোধের সৃষ্টি হয়েছিল ইসকন্দর আলীর মৃত্যুর পরও তা যেন শেষ হচ্ছে না। এদিকে ধর্ষণকারীদের বিচার দাবী করে গতকাল রোববার বিকেলে হাকালুকি বাজারে মামলার বাদীনি রুহেনা বেগমের মামা দুলাল আহমদের নেতৃত্বে মানববন্ধন হলে, তাতে বক্তব্য রাখেন ইসকন্দর গ্রুপের লোকজন। উল্লেখ্য যে, মামলার বাদীনি রুহেনা বেগম হচ্ছেন ইসকন্দর আলীর নাতনি ও বর্তমান আন্দোলনে নেতৃত্ব প্রদানকারী দুলাল আহমদের ভাগিনী।

এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুশিয়ারা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মিজান প্রতিবেদককে জানান, তাদের তদন্তে ঘটনাটির সত্যতা পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে নাটক সাজানো হয়েছে। পুলিশ নিরপেক্ষ থেকে ঘটনার সুষ্ট তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলে তিনি দাবী করেন।

 

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে