প্রিয় মৃত

.………….রফিকুল ইসলাম প্রিন্স

মৃত্যু স্মৃতিগুলোকে আরো বেশি জাগ্রত করে তোলে। একটা মানুষ তার সমগ্র জীবনের বেঁচে থাকার সাফল্য হিসেবে মৃত্যুকে গ্রহণ করে। মূলত আমরা মৃত্যুর স্পর্শ পাওয়ার জন্যেই জন্ম নেই। অথচ, সর্বক্ষেত্রে তা হাসিমুখে মেনে গ্রহণ করা কারো জন্যেই সহজ হয়ে ওঠে না। নিজের মৃত্যু কিংবা খুব আপন কারো, দুটোই বিষাদের পূর্ণ শ্লোগান গেয়ে যায় আমাদের মস্তিষ্কে। আজ মামার চলে যাওয়াটাও ঠিক এমন এক অনুভূতির সৃষ্টি করলো আমার মাঝে। যদিও মানি যেতে হবে সকলের। তবুও এই নির্মম জানাটাকে মনের কোনে স্থান দিতে চাই না। মানুষগুলো বেঁচে থাকার দিনগুলোয় যা কিছু করে যায়, চলে যাবার দিনে তা শুধুই স্মৃতি। আর এই স্মৃতিটুকু আগলে মৃত্যুর দারপ্রান্তে পৌঁছোয় পৃথিবীতে বেঁচে থাকা পরবর্তীজন। একটি লোক মারা যাবার পর নিজেকে অপরাধী বোধ হচ্ছে, এমন ঘটনা কখনো ঘটেছে আপনার সঙ্গে? যদি উত্তরটা হয় হ্যাঁ, তবে সবার আগে যা করবেন তা হলো বিনয়ী হয়ে যান। মৃত্যু কখন কার ঘরে এসে পৌঁছে যাবে তার নিশ্চয়তা মৃত্যুর ফেরেশতাও দিতে পারে না। তাই আমাদের এই মুহূর্তের ব্যবহার যেনো পরবর্তী মুহূর্তের দুঃখের কারণ না হয়ে যায়! এখানে কেউ সারাজীবন থাকতে আসেনি। যতটুকু অল্প, ততোটুকুতেই যদি হয়ে যায় পরিপূর্ণ তৃপ্তি তবেই এ সামান্য জীবন সফল। আসলে যে বা যারা কোটিপতি হওয়াকে সফলতা ভাবে তারা নির্বোধ। প্রকৃত সফল তো সেই ব্যক্তি, যিনি মৃত্যুর কোলেপিঠে শুয়েও হাসতে পারে। সফল তো সেই ব্যক্তি, যার মৃত্যুটাও সুখের আর পরকালও। এই দুনিয়া কেবল পরকালের ঘরদোর পোক্ত করার কর্মক্ষেত্র। এখানে যতবেশি শ্রম দিবেন পরকালে ততো পোক্ত ভীটা পাবেন। এটাই কী প্রকৃত বাস্তবতা নয়? আমাদের দিনগুলো মৃত্যুর সাথেই কাটে। মৃত্যু আমার যতটা নিকটে ততোটুকু নিকটবর্তী আজ অবধি আসেনি কোনো স্বজন। সুতরাং, এ জনমে মৃত্যুর চেয়ে আপন সঙ্গী বোধহয় কিছু নেই। আপনকে গ্রহণ করা শিখতে হবে, আপনকে আপন করে নিতে জানতে হবে। খোদার বান্দা খোদা উঠিয়ে নেয়ার হলে কারো তা আটকাবার ক্ষমতা নেই। বরং, আমাদের ক্ষমতা আছে শেষ পরীক্ষার প্রস্তুতি নেবার। ক্ষমতা আছে পরীক্ষার ফলাফলে বেহেশত জিতে নেবার।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে