আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত বৃহস্পতিবার দাবি করেছেন, তাঁর দেশের গোয়েন্দারা জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডে সরাসরি সৌদি যুবরাজকে দায়ী করে কোনো উপসংহার টানেনি। তাঁর এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তুরস্ক অভিযোগ করেছে, খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে ট্রাম্প ‘চোখ বন্ধ করে ফেলেছেন’। এ ছাড়া খাশোগি ইস্যুতে ইউরোপের ভূমিকাও ‘লোক-দেখানো’ ছাড়া কিছু নয় বলে মন্তব্য করেছে তুরস্ক।

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (সিআইএ) এরই মধ্যে তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশে গত ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে সাংবাদিক খাশোগিকে হত্যা করা হয়েছে এবং এ ব্যাপারে জোরালো প্রমাণ তাদের কাছে আছে। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেন, খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে সিআইএ কোনো উপসংহার টানেনি। ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যে অবস্থানকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তারা (সিআইএ) উপসংহারে পৌঁছায়নি। নিশ্চিতভাবেই তাদের একটা উপলব্ধি হয়েছে। তবে প্রতিবেদন তো আমিও দেখেছি। তারা সিদ্ধান্ত টানেনি। কেউ সিদ্ধান্তে পৌঁছায়নি। যুবরাজই যে কাজটা করেছেন, সে ব্যাপারে কেউ সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারে বলে আমার মনে হয় না।’

খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে নিজ দেশের গোয়েন্দাদের প্রতিবেদনের চেয়ে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদের বক্তব্যকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে ট্রাম্প আরো বলেন, ‘কাজটা তিনি করুন আর না-ই করুন, তিনি তো জোরালোভাবে তা অস্বীকার করেছেন। তাঁর বাবা বাদশাহ (সালমান) বিষয়টা জোরালোভাবে অস্বীকার করেছেন।’

শুধু গত বৃহস্পতিবার নয়, খাশোগি হত্যাকাণ্ডের শুরু থেকে যুবরাজকে বাঁচিয়ে কথা বলে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। তাঁর এ অবস্থানকে যুবরাজের ব্যাপারে ‘অন্ধ হয়ে যাওয়ার’ সঙ্গে তুলনা করেছে তুরস্ক। সিএনএন তুর্ককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু বলেন, ‘ট্রাম্পের বক্তব্যে বোঝাই যাচ্ছে তিনি বলছেন, ঘটনা যা-ই হোক, আমি চোখ বন্ধ কর রাখব।’ গত সপ্তাহের শুরুতে ট্রাম্প রিয়াদ-ওয়াশিংটন ব্যাবসায়িক সম্পর্কের ওপর গুরুত্ব দিয়ে যেসব কথা বলেছিলেন, সেগুলো স্মরণ করে তুরস্কের এ শীর্ষ কূটনীতিক বলেন, ‘অর্থই সব কিছু নয়। মানবিক মূল্যবোধ থেকে দূরে সরে যাওয়া আমাদের কোনোভাবেই উচিত নয়।’

খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে সিআইএর নিজেদের কাছে থাকা রেকর্ডিংয়ের প্রসঙ্গে কাভুসোগলুর দাবি, সিআইএ এ তথ্য তুরস্কের কাছে গোপন করে গেছে। বলা দরকার, সিআইএ প্রধান জিনা হাসপেল তুরস্ক সফরকালে তাঁকে খাশোগি হত্যার তথ্য-প্রমাণ দেখিয়েছিল তুর্কি গোয়েন্দারা।

যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ইউরোপের সমালোচনা করতেও ছাড়েননি কাভুসোগলু। খাশোগি হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে ইউরোপের ভূমিকাকে ‘লোক-দেখানো’ অ্যাখ্যা দিয়ে তিনি হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনে আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানান।

K/K/N.

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে