মারুফ সরকার, বিনোদন ডেস্কঃ প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে ক্লান্ত চিত্রনায়িকা আলভিরা ইমু শহরের ব্যয়বহুল জীবন মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়ে ঢাকা ত্যাগ করে বর্তমানে গাজীপুরে নিজের বাড়িতে চলে গেছেন। তিনি বলেছেন, যারা আমাকে তাদের ছবিতে নিতে চাইবেন, তারা ফোনে যোগাযোগ করবেন। আমার নাম্বার সমিতিগুলোতে আছে। প্রয়োজনে আমি প্রযোজক এবং পরিচালকদের সঙ্গে ঢাকা এসে দেখা করব।
আলভিরা ইমু অভিনীত প্রথম এবং একমাত্র ছবি গোপন সংকেত। ছবিটি নির্মাণে দীর্ঘ সময় লেগে যাওয়ায় তার মধ্যে এক ধরনের হতাশা নেমে আসে। অন্য নির্মাতারাও তার সম্ভাবনার বিষয়ে আশাবাদী হতে পারেননি। এজন্য এক ছবির নির্মাণ পর্যায়ে অতীতের তারকাদের মতো একাধিক ছবিতে তিনি চুক্তিবদ্ধ হতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘আমরা আগের তারকাদের মতো ভাগ্যবান নই। আমরা যখন কাজ করতে শুরু করি তখন সত্যিকার অর্থেই চলচ্চিত্রের দুর্দিন শুরু হয়ে গেছে।’ তবে ২৪টি ছবির নির্মাতা মালেক আফসারি চলচ্চিত্রের দুর্দিন নিয়ে একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেছেন, ‘আগে প্রযোজকরা পরিচালক নিয়োগ দিতেন। তারপর পরিচালকরাই গল্পের মেজাজ ও চিত্রনাট্যের প্রয়োজন অনুসারে তারকা নির্বাচন করতেন। এখন প্রযোজকরা আগে নায়িকা ঠিক করেন। তারপর ‘টোনাটুনি’ আলাপ-আলোচনা করে ঠিক করেন পরিচালক কে হবেন। এই অবস্থায় চলচ্চিত্রে দুর্দিন নেমে আসতে বাধ্য।’
আলভিরা ইমু বলেন, ‘পরিস্থিতি মোকাবিলা করে অনেক নায়িকাই চলচ্চিত্রে টিকে আছেন। থাকব ভাড়া বাড়িতে। স্ট্যাটাস রক্ষা করে চলতে গেলে মাস গেলেই লাগে এক থেকে দেড় লাখ টাকা। হাতে কাজ নেই। প্রতিমাসে এতো টাকা আমি কোথায় পাব? টুকটাক কাজ করে এতো টাকার যোগান দেওয়া যায় না। আমার কোনো পৃষ্ঠপোষক নেই, কোনো শুভাকাংখীও নেই। সে রকম কাউকে পাওয়ার চেষ্টাও করিনি। আমি সৎভাবে থাকতে চাই। তাতে আমার ক্যারিয়ার হলে হবে, না হলে হবে না।’
তিনি প্রথমে থাকতেন মোহাম্মদপুর এলাকায়। পরে চলে আসেন বনশ্রীতে। এখানেই তার খালা মারা যায়। তাকে দাফন করার পর তার মানসিকতায়ও একটা পরিবর্তন আসে। হাসিখুশি মানুষটি কেমন যেন নীরব হয়ে যান। সেই নীরবতা বজায় রেখেই তিনি ঢাকা ত্যাগ করেন।
আলভিরা ইমুকে চলচ্চিত্রে নিয়ে আসেন প্রযোজক গোলাম মোর্শেদ। তিনি তাকে পপির বিকল্প হিসেবে স্থাপন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পারেননি। চালের ব্যবসায়ী গোলাম মোর্শেদ চলচ্চিত্রে এসে ব্যবসায়িক খেই হারিয়ে ফেলেন। তিনি বেশ কয়েকটি ছবি প্রযোজনা করেও চলচ্চিত্র জগতে নিজেকে সফল প্রযোজক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত তিনি চলচ্চিত্র থেকে হাত গুটিয়ে চলে যান। আলভিরা ইমুরও আর গোলাম মোর্শেদের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে নায়িকা হয়ে উঠা সম্ভব হয়নি। তার কয়েক বছর পর শুরু হয় গোপন সংকেত। এ ছবিটিতে তিনি একক নায়িকা হিসেবে কাজ করছেন।