কাওছার হামিদ, কিশোরগঞ্জ, নীলফামারী প্রতিনিধি: নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে কথিত চিকিৎসায় এক কিশোরের মৃত্যুর অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ১৬ বছরের ওই কিশোরের নাম সোহেল রানা।

উত্তর চাঁদখানা সরঞ্জাবাড়ী গ্রামের কেরামত আলীর পুত্র। মাগুড়া ইউনিয়নের শাহপাড়া এলাকার জালাল উদ্দীনের পুত্র কবিরাজ মোকাব্বর আলী (৬৫), আবতাব উদ্দিনের পুত্র আনোয়ার হোসেন (৫০), মহির উদ্দিনের পুত্র শফিকুল ওরফে ফিকুল ইসলাম (৫৫) জানা যায়, এরা তিনজন মিলে কেরামত আলীর বাড়ীতে এসে বলে আমরা আপনার ছেলেকে গ্যারান্টিতে এক সপ্তাহের মধ্যেই সুস্থ্য করবো।

তারা গ্যারান্টি দিয়ে চিকিৎসা শুরু করতে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকার খরচ ধরিয়ে দেয়। মা- বাবার মন ছেলে সুস্থ্য হবে সে খুশিতেই তাদের কথা অনুযায়ী ধার- দেনা করে খরচ করে ৭ হাজার টাকার মতো। শুরু হয় কবিরাজী। শুরু থেকেই রোগীর অবস্থার অবনতি হতে থাকে।

স্বজনরা জানান, রানা কয়েক বছর ধরে প্যারালাইজড রোগে আক্রান্ত। তার হাত-পা অকেজো অবস্থায় রয়েছে। বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা করিয়েও সুস্থ হয়ে উঠতে পারেনি সে।

উল্লেখিত কবিরাজদ্বয় কেরামত আলীর বাড়িতেই চিকিৎসা শুরু করেন সোহেল রানার। মোকাব্বর হোসেনের নেতৃত্বে একই এলাকার আফতাব উদ্দিন ও মহির উদ্দিনের ছেলে শফিকুল ইসলাম চিকিৎসা চালান শিশুটির।

নিহতের বাবা কেরামত আলী জানান, হাত-পা দড়ি দিয়ে বেঁধে শুরু থেকে তেল মালিশ ও ঝারফুক করা হয় রানাকে। এক পর্যায়ে আমার ছেলের পায়ের ওপর দুই হাঁটুতে ২ টি ইট দিয়ে বালুর বস্তা ও ইটের উপর উঠে চাপা দিলে সে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং তার পায়ের রগ ছিঁড়ে গেলে এক পর্যায় সে মারা যায়।

কিশোরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজিব কুমার রায় বলেন, ‘এ ঘটনায় থানায় মামলা করেন রানার বাবা কেরামত। কিশোরগঞ্জ থানার মামলা নং – ১৫/১১৯। তাৎক্ষণিক অভিযান পরিচালনা করে তিন কবিরাজকে গ্রেপ্তার করে আদালতে উঠালে বিজ্ঞ বিচারক হাজতে প্রেরণ করেন। চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা করা হয়েছে। এতে ছেলেটি মারা যায়।

মরদেহ উদ্ধার করে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়, লাশের ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ ব্যাপারে নিহতের মা- বাবা ও এলাকাবাসী ন্যায় বিচার তথা ভন্ড কবিরাজদ্বয় অপচিকিৎসার সুযোগ নিতে না পারে সে জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে