মোঃ আমজাদ হোসেন, জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধি:  জয়পুরহাটের কালাইয়ে অগ্রহায়ন মাসের প্রথম সপ্তাহে নবান্ন উৎসব উপলক্ষে এক দিনের মাছের মেলা অনুষ্ঠিত হয়। মেলাকে ঘিরে উপজেলায় উৎসব আর আনন্দের আমেজ দেখা দেয়। শনিবার (১৮ই নভেম্বর) ভোরবেলা থেকেই কালাই পৌরসভার পাঁচশিরা বাজারে বসা রকমারি দোকানলোতে চলে মাছ বেচাকেনার ধুম। মাছের মেলাটিকে ঘিরে এ দিনে নিকটবর্তী জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা যায়। তাই এলাকার ধনী,গরীব সব শ্রেণীর পেশার মানুষএ দিন সাধওসাধ্য অনুযায়ী পছন্দের মাছ কিনে বাড়ি ফিরে।

জানা গেছে, প্রায় পনের বছর আগে থেকে প্রতি বছরের মত এবারেও নবান্ন উপলক্ষে মেলায় বিভিন্ন এলাকা থেকে মহিলা,পুরুষ ও শিশুরাসহ মাছ কিনতে ও দেখতে আসে। রুই, সিলভার, কাতলা, মৃগেল, ব্রিগেট, বাগার, বোয়াল, চিতলসহ রকমারি প্রজাতির মাছ দিয়ে পসরা সাজায় ব্যবসায়ীরা। মেলায় ওঠা বড় মাছগুলোর ওজন ছিল প্রায় ১৫থেকে ৩৫ কেজি। মাছের প্রকারভেদে মাঝারি আকারের মাছ ৩৮০ থেকে ৫০০ টাকা এবং বড় মাছ ৬০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে।

মেলায় মাছ কিনতে আসা আহম্মেদাবাদ ইউনিয়নের হারুঞ্জাগ্রামের দিলবর হোসেন, কালাই পৌরসভার মুলগ্রাম মহল্লার ফারুক হোসেন, বড়তারা ইউনিয়ন নওটিকা গ্রামের শ্রী কাজল চন্দ্র বর্মণ,কালাই পৌরসভার কলেজ পাড়া মহল্লার রুহুল আমিন,কালাই পৌরসভার সরাইল মহল্লার আব্দুল বাকী তারা বলেন ,নবান্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে গতবারের চেয়ে এবার মাছের মেলায় প্রচুর আমদানি হয়েছে তবে দাম অনেকটা বেশী।

উপজেলার স্বনামধন্য মাছ ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বলেন ১২০০ টাকা কেজি দরে ৩৫ কেজি কাতল মাছ বিক্রি করেছি বগুড়ার এক ক্রেতার কাছে এটাই এ মেলার সবচেয়ে বড় মাছ।মাছ ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম,আবু বাশার, নাজির উদ্দিন,ও সহ অনেকে জানান,মাছের মেলায় প্রচুর লোক সমাগম হলেও বেচা কেনা সে তুলনায় কম। তারপরও বেশি লাভেরই প্রত্যাশা করছেন তারা।

বেশি ওজনের মাছ চাষ ব্যবসায়ী আব্দুল লতিফ মাছের খাদ্যের দাম যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে সেক্ষেত্রে বাজারে মূল্য না পাওয়ায় অনেক ব্যবসায়ী ধিরে ধিরে এ ব্যবসা থেকে বিমুখ হতে পারে। মাছের খাদ্যদ্রবের দাম যেন না বাড়ে সেদিকে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নজর দেয়া দরকার।

কালাই উপজেলা মৎস কর্মকর্তা আনোয়ার আলী বলেন, মেলায় ছোট বড় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ওঠেছে। বড় বড় মাছ দেখে এ এলাকার চাষীদের আগ্রহ বাড়ছে। আজকের এই মেলায় কমপক্ষে ১ থেকে সোয়া কোটি টাকার মাছ ক্রয়-বিক্রয় হবে। মৎস বিভাগ চাষীদের সবসময় মাছ চাষে পরামর্শ দিয়ে আসছে। আগামীতে এই মেলার পরিধি আরো বাড়বে বলে আমি আশাবাদী ।

কালাই পৌরসভার মেয়র রাবেয়া সুলতানা বলেন অগ্রাহয়ন মাসের প্রথম সপ্তাহে নবান্ন উৎসব উপলক্ষে অনেক ধুমধাম ও উৎসব মুখর পরিবেশে এ মাছের মেলা বসে। পৌরসভা থেকে মেলায় সকল ধরনের সহযোগীতা করা হয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে