ডেস্কস রিপোর্ট : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বাংলাদেশে কারা নিরাপত্তা ও সার্বিক ব্যবস্থাপনা আগের চেয়ে জোরদার ও উন্নত হয়েছে।
বাংলাদেশে কারাবন্দির শ্রেণী বিন্যাসের ব্যবস্থা না থাকলেও অন্য অনেক দেশের চেয়ে এ দেশের কারাগার ব্যবস্থাপনা অনেক উন্নত- এ কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার শ্রেণী বিন্যাসের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মঙ্গলবার রাজধানীর খিলক্ষেতের হোটেল লা মেরিডিয়ানে প্রথমবারের মতো তিন দিনব্যাপী এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জ্যেষ্ঠ কারা কর্মকর্তাদের ‘কারাগারের অভ্যন্তরে নিরাপত্তা এবং মানবিক চাহিদার ভারসাম্য’ শীর্ষক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন । এতে ১৪টি দেশের ২৮জন জ্যেষ্ঠ কারা কর্মকর্তা অংশগ্রহন করছেন।আন্তর্জতিক রেড ক্রস কমিটি (আইসিআরসি) ও বাংলাদেশ কারা অধিদফতর যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করছে। সম্মেলনে বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া, চীন, ফিজি, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, মায়ানমার, পাকিস্তান, পাপুয়া নিউগিনি, ফিলিপাইন, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড এবং ভানুয়াতু অংশগ্রহণ করছে ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব ফরিদ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ও কারা অধিদফতরের আইজি প্রিজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন বক্তৃতা করেন। বাংলাদেশের হেড অফ ডেলিগেশন ইখতিয়ার আসলানভ, ঢাকা বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন্স) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম ও কারা উপ-মহাপরিদর্শক (সদর দফতর) মো: বজলুর রশীদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে কারাবন্দিদের অধিকার ও মানবিক বিষয়গুলোর প্রতি আরো যতœশীল হওয়ার গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে কারাগারগুলোতে নিরাপত্তা বৃদ্ধির পাশাপাশি কারা ব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। অন্যান্য দেশের সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যমে আমাদের কারা সেক্টরকে আরও উন্নত করেছি। আগামীতে কারাবন্দিদের শ্রেণী বিন্যাস ব্যবস্থা চালুর বিষয়ও বিবেচনায় রয়েছে।
ফরিদ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে ৭৩ হাজার কারাবন্দির মধ্যে ৭৪ শতাংশই বিভিন্ন মামলায় শুনানির অপেক্ষায় রয়েছেন। তিনি বলেন, কারাবন্দিদের সঙ্গে মানবিক আচরণ ও কারা ব্যবস্থাপনায় উন্নতির ক্ষেত্রে বর্তমান সরকার অনেক বেশি আন্তরিক।তিনি বলেন, বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় জেলখানা স্থানান্তর করে কেরানীগঞ্জে নেয়া হয়েছে। পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে এক দিনে সাড়ে ৭ হাজার কারাবন্দিকে স্থানান্তরের এমন নজির নেই।সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব বলেন, কারাগারে বন্দির সংখ্যা কমিয়ে আনতে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এ প্রক্রিয়া আরো গতিশীল করতে কম্পিউটারাইজড ব্যবস্থা চালু করা হবে। প্রচলিত কারা বিধির সংশোধন ও মান্নোয়নের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন বলেন, প্রিজন ম্যানেজমেন্ট তৃতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল শ্রীলঙ্কায়।

ওই সম্মেলনে উন্মুক্ত কারাগার নিয়ে আলোচনা হয়। বাংলাদেশ সরকার কক্সবাজারের উখিয়াতে উন্মুক্ত কারাগার নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে এবং এ জন্য ভূমি অধিগ্রহনের কাজ শুরু হয়েছে।আইজি প্রিজন বলেন, সম্মেলনের বিভিন্ন কর্ম অধিবেশনে অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন কেস স্টাডির ভিত্তিতে তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করবে। এতে কারাগার বা বন্দিশালা নির্মাণ, ডিজাইন, পরিকল্পনা এবং পরিচালনার ক্ষেত্রে নিরাপত্তা ও মানবিক ব্যবস্থার মধ্যে ভারসাম্য স্থাপন এবং বন্দীদের শ্রেণীভুক্ত করা ও তাদের পরিদর্শনের বিষয় গুরুত্ব পাবে।তিনি বলেন, বাংলাদেশে দক্ষ ও সুষ্ঠু কারা ব্যবস্থাপনায় কারা কর্মকর্তাদের জন্য আধুরিক প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বি/এস/এস/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে