জয়নাল আবেদীন হিরো, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি: উত্তরের জনপদ নীলফামারীর সৈয়দপুরে জেঁকে বসেছে শীত। গত কয়েক দিন থেকে শৈত্য প্রবাহ ও ঘন কুয়াশায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারী) একই অবস্থা বিরাজ করছে। নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো ফুটপাতে শীতের কাপড় ক্রয়ের জন্য ভিড় জমাচ্ছে।

সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকছে। দুপুরে সুর্যের দেখা মিললেও রোদের তাপমাত্রা খুবই কম। বিশেষ করে ছিন্নমূল লোকজন অর্থাভাবে শীতের কাপড় কিনতে না পেরে অতি কষ্টে দিনাতিপাত করছে।

সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিস বলছে, আজ মঙ্গলবার সৈয়দপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। খেটে খাওয়া মানুষ ঠান্ডা বেশী হওয়ার কারনে কাজে যেতে পারছেন না। এদিকে, বৃদ্ধ ও শিশুরা ঠান্ডা জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও ১০০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।

হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, গত সাত দিনে শীতজনিত রোগে শিশুসহ ৪৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আলিমুল বাশার বলেন, শীতের কারণে বর্তমানে রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। এছাড়াও ঠান্ডা বৃদ্ধি পেলে সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে জানান তিনি।

এদিকে কুয়াশার কারণে দৃষ্টিসীমা কম থাকায় ঢাকা থেকে যেমন কোন উড়োজাহাজ উড্ডয়ন করছেনা তেমনি অনেক সময় সৈয়দপুরে অবতরণে সমস্যা হচ্ছে। ফলে সকালের দিকের ফ্লাইট বাতিল করতে হচ্ছে। সৈয়দপুর বিমানবন্দরে তাই ঢাকাগামী যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়ছে। একইভাবে সড়ক ও রেলপথে যানবাহন চলাচলেও বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়েছে। হেডলাইট জ্বালিয়ে যাতায়াত করছে চালকরা।

উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের অসুরখাই গ্রামের কবিরুল ইসলাম (৬০) জানান, শীত বেশি হওয়ায় অর্থাভাবে গরম কাপড় কিনতে না পারায় পরিবার পরিজন নিয়ে অতি কষ্টে দিনাতিপাত করছি।

অতিদরিদ্রের অবস্থা আরও ভয়াবহ। বিশেষ করে রেলওয়ে স্টেসনের প্লাটফরম ও বাস টার্মিনালে বসবাসকারী ছিন্নমূল মানুষ চরম দূরাবস্থায় রয়েছে। সরকারীভাবে পৌরসভা বা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও কোন শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়নি। ফলে গ্রামাঞ্চলের অসহায় মানুষেরাও দূর্ভোগ পোহাচ্ছে।

কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের বটের তল এলাকার ট্রাক্টর শ্রমিক মোকছেদ মিয়া জানান, পুরাতন কাপড় কিনে কোন রকমে শীত নিবারনের চেষ্টা করছি। কিন্তু এবার সেগুলোর দামও তুলনামূলক বেশি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফয়সাল রায়হান বলেন, এখন পর্যন্ত কোন কম্বল বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। পেলে তা মানুষের মাঝে ক্রমান্বয়ে বিতরন করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে