ডেস্ক রিপোর্টঃ টঙ্গীর তুরাগ তীরে আজ শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে তাবলিগ জামাতের চার দিনব্যাপী মহাসম্মেলন বিশ্ব ইজতেমা। শুক্রবার ফজর নামাজের পর আম বয়ানের মধ্য দিয়ে দাওয়াতে তাবলীগের এই গণজমায়েতের মূল কার্যক্রম শুরু হয়।

এ উপলক্ষে গাজীপুরের টঙ্গীতে তুরাগ নদের তীরে লাখো মানুষের ঢল নেমেছে। শুক্রবার ফজর নামাজের পর পাকিস্তানের মাওলানা জিয়াউল হক আম বয়ান পেশ করেন। ময়দানে বয়ান, জিকির, তালিম আর মাশোআরায় মগ্ন মুসল্লিরা।এবার শনিবার ও রবিবার ইজতেমার কার্যক্রম পরিচালনা করবেন মাওলানা জোবায়েরের অনুসারীরা। শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত হবে তাদের আখেরি মোনাজাত। পরে ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি ইজতেমার কার্যক্রম পরিচালনা করবেন সা’দপন্থী মাওলানা ওয়াসিফুল ইসলামের অনুসারীরা। সোমবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) তাদের আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের ৫৪তম বিশ্ব ইজতেমা কার্যক্রম। 

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে খিত্তায় খিত্তায় বয়ান চলে, পরে বাদ মাগরিব ময়দানের উত্তর-পশ্চিম কোণে অবস্থিত মূলমঞ্চ থেকে বয়ান শুরু হয়। বয়ান করেন ভারতের মাওলানা আহম্মদ লাট। বুধবার থেকেই দেশ-বিদেশের মুসল্লিরা ইজতেমার ময়দানে আসতে শুরু করেছেন। বিভিন্ন স্থান থেকে মুসল্লিরা জামাতবদ্ধ হয়ে ময়দানে এসে তাদের জন্য নির্ধারিত খিত্তায় অবস্থান নিচ্ছেন। মুসল্লিদের ইজতেমা ময়দানে আসা অব্যাহত রয়েছে। মুসল্লিরা বাস-ট্রাক, কার-পিকআপসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে দলে দলে ইজতেমাস্থলে আসছেন। পরে গাড়ি থেকে নেমে তারা কাঁধে-পিঠে প্রয়োজনীয় মালামালের গাট্টি, ব্যাগ ও রান্নার সরঞ্জাম নিয়ে মাঠের নির্ধারিত স্থানে অবস্থান নিচ্ছেন।

মুসল্লিদের পদচারণায় টঙ্গীর তুরাগ তীরের ইজতেমাস্থল এখন মুখরিত। বৃহস্পতিবার বিকালের মধ্যেই ইজতেমার ময়দান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে। অনেক মুসল্লি বাটা রোডসহ অন্যান্য সুবিধাজনক স্থানে অবস্থান নিয়েছেন। ইজতেমার মুসল্লিদের সহজে তুরাগ নদী পারাপারের সুবিধার জন্য ময়দান এলাকায় তুরাগ নদীর সাতটি স্থানে পন্টুন ব্রিজ (ভাসমান সেতু) স্থাপন করেছেন সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের সদস্যরা। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার ওয়াই এম বেলালুর রহমান জানান, নিরাপত্তায় নিয়োজিত সদস্যরা বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই কর্তব্যরত আছেন।

 এবারের ইজতেমায় পোশাকে এবং সাদা পোশাকে আগের তুলনায় অনেক বেশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। গোয়েন্দা নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে। একই সঙ্গে ওয়াচ টাওয়ার এবং সিসি ক্যামেরা দ্বারা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ময়দানের প্রতিটি জায়গা সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর জানান, আল্লাহর অশেষ রহমতে শুক্রবার আমবয়ানের মধ্যদিয়ে ৫৪তম বিশ^ ইজতেমা শুরু হবে। তবে গতবারের তুলনায় এবার চ্যালেঞ্জ বেশি। এবার একটি পর্বেই ৬৪টি জেলা ও বিদেশি মেহমানসহ ১০ লক্ষাধিক মুসল্লি অংশ নেবেন। যানজট নিরসনে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ বছর নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হয়েছে। ৪ শতাধিক সিসি টিভি, ১৬টি ওয়াচ টাওয়ার, পুলিশের ৯ হাজার, আনসারের ৫০০ সদস্য,  র‌্যাবের ৩০০ সদস্যের পাশাপাশি অন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল, হেলিকপ্টার টহল, ময়দানের ভিতর সাদা পোশাকে নজরদারি থাকবে এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বিজিবিও স্টান্ডবাই থাকবে। ইজতেমায় সেবাদানকারী সব সার্ভিসকে ইতিমধ্যে নিয়োজিত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ইজতেমার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। ইজতেমা সুন্দরভাবে শেষ করতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন জেলা প্রশাসক।

B/P/N.

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে