মারুফ সরকার, ঢাকা: মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) ভোর আনুমানিক ৫টায় রাজধানীর মহাখালীর সামনের সড়কে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় দুই তরুণ নিহত হয়েছে।

দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি (ঢাকা মেট্রো ঘ -১৩-৩৯৭৯) নম্বরের জিপটি সড়কের আইল্যান্ডের সাথে ধাক্কা লেগে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। জানা যায়, সাবেক সেনা প্রধান আজিজ আহম্মেদের ছেলে নেশাগ্রস্ত হয়ে অস্বাভাবিক অবস্থায় বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। দ্রুতগতির জীপটি রাওয়া ভবনের সামনের সড়কে আসলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটায়।

সূত্রে জানা যায়, গাড়ীতে মোট সাত জন আরোহী ছিলেন। ঘটনাস্থলেই ফাহমিদ আহম্মেদ রাইয়ান (১৯) ও মো. ওমর আয়মান (২০) মারা যায়।

ফাহমিদ আহম্মেদ রাইয়ান (১৯) এর পিতা মৃত- ইলিয়াস আহম্মেদ। বাড়ী- ১৭, রোড নং- ০৭, নিকুঞ্জ -১, খিলক্ষেত, ঢাকা, এর বাসিন্দা। তাদের গ্রামের বাড়ি ফেনী জেলার গ্রামে। মো. ওমর আয়মান (২০) এর পিতা- কর্নেল অবঃ ওমর ফারুক, মাতা- শাহজাদি নাসিমা। তাদের বাসা নং-৪৩/ই, রোড- ০৮, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, থানা- ভাষানটেক।

দুর্ঘটনার সময় সাবেক সেনাপ্রধান আজিজের ছেলে স্বাদিন আহমেদ গাড়ি চালাচ্ছিলেন এবং ওই সময় তার সাথে মদপ্য অবস্থায় তার দুইজন তথাকথিত মেয়ে বান্ধবী রাইসা এবং দিয়া ছিল।

সূত্রমতে- সাবেক সেনা প্রধান আজিজ আহম্মেদের বখাটে ছেলে স্বাদিন আহমেদ অতিরিক্ত নেশায় আসক্ত, নিয়মিত মদ্যপান ও উচ্ছৃঙ্খল জীবন যাপনে অভ্যস্ত ছিলেন। মদ্যপায়ী ৫ বন্ধু ও ২ বান্ধবীসহ মাতাল অবস্থায় মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) ভোর ০৪:৫৩ মিনিটে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর সময় ভয়াবহ এই দুর্ঘটনা ঘটে। বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত সিসি টিভির ফুটেজে ঘটনার এই সত্যতা পাওয়া যায়।

জানা যায়, আজিজ আহমদের ২য় স্ত্রীর একমাত্র ছেলে স্বাদিন। পিতা মাতার অতি আদরে বখে যাওয়া এই সন্তান পিতার চাকরিকালে ম‚র্তমান আতংক হিসেবে সেনানিবাস এবং সেনানিবাসের বাইরের এলাকায় পরিচিত ছিল। স্বাদিন মূলত তার বাবা সাবেক সেনাপ্রধানের আস্কারাতেই বেপরোয়া জীবন যাপনে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে। রাজধানীর গুলশান ও বনানীর বিভিন্ন নাইট ক্লাবে মিড নাইট পার্টি উদযাপন, মেয়ে আসক্তি, মাদক সেবনসহ, নিষিদ্ধ অসামাজিক নৈশ জীবনেও ছিল অবাধ বিচরণ।

সাবেক সেনাপ্রধানের ছেলে পিতার ক্ষমতায় সেনানিবাস এলাকায়ও উশৃংখল জীবন যাপনে অভ্যস্ত ছিল। সে নিত্য নতুন কিশোর গ্যাং তৈরি এবং উক্ত গ্যাং এর মাধ্যমে সন্ত্রাসী , চাঁদাবাজিতে জড়িত ছিল বলে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার নিকট অনেক তথ্য প্রমাণ রয়েছে।
স্বাদিনের এই বেপরোয়া জীবন যাপন সম্পর্কে সকলে জানলেও সাবেক সেনাপ্রধানের ছেলে বলে ভয়ে কেউ তৎকালীন মুখ খোলেনি।
মদপ্য অবস্থায় গাড়ি দুর্ঘটনায় ২ জনের প্রাণহানির সর্ম্প‚ণ দায় সাবেক সেনাপ্রধানের এই উশৃঙ্খল ছেলের বলে দাবি করেছেন অনেকে।
স্থানীয়রা মর্মান্তিক এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছেন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে