ইস্তানবুলের রাস্তায় অভ্যুত্থান-বিরোধী বিক্ষোভকারী।

বিডি নীয়ালা নিউজ(১৬ই জুলাই ২০১৬ইং)-আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ একটি সামরিক অভ্যুত্থানের প্রচেষ্টার মুখে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট তায়্যিব এর্দোয়ান ইস্তানবুলে ফিরে এসেছেন।

বিমান বন্দরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে মি. এর্দোয়ান অভ্যুত্থানকে দেশদ্রোহিতা আখ্যা দিয়ে বলেন, যারা এর পেছনে ছিলেন তাদের বড় মূল্য দিতে হবে।

”অভ্যুত্থানে জড়িত কয়েকজন অফিসারকে ইতোমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে, আমি এখন সেনাবাহিনীতে শুদ্ধি অভিযান চালাবো,” তিনি বলেন।

এর আগে মি. এর্দোয়ানের হাজার হাজার সমর্থকের বিক্ষোভের মুখে সেনা বাহিনীর বিদ্রোহী অংশ ইস্তানবুল বিমান বন্দর থেকে সড়ে যেতে বাধ্য হয়।

সামরিক অভ্যুত্থানের প্রচেষ্টা ব্যর্থ করতে প্রেসিডেন্ট এর্দোয়ানের ডাকে সাড়া দিয়ে হাজার হাজার সমর্থক বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ করছে।

দেশের প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরিম বলেছেন, পরিস্থিতি এখন সরকারের নিয়ন্ত্রণে এসেছে, এবং রাজধানী আনকারার আকাশে বিমান উড্ডয়ন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

ইস্তানবুলের কেন্দ্রস্থল তাকসিম স্কোয়ারে এর্দোয়ান সমর্থকদের বিক্ষোভ।

প্রেসিডেন্ট এর্দোয়ানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে তুরস্কের ঘনিষ্ঠ মিত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এক বিবৃতিতে সকল পক্ষকে দেশের গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত সরকারকে সমর্থন করার জন্য এবং রক্তপাত এড়ানোর আহ্বান জানান।

আনকারায় সরকার সমর্থকরা রাষ্ট্রীয় প্রচার মাধ্যম টিআরটি-র নিয়ন্ত্রণ অভ্যূত্থানকারীদের হাত থেকে দখল করে নেয়।

প্রেসিডেন্ট তায়্যিব এর্দোয়ানের সমর্থকরা ইস্তানবুলের আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের ভেতরে অবস্থান নিয়েছে।

বিভিন্ন মসজিদ থেকে ফজরের নামাজের কয়েক ঘণ্টা আগেই আযান দেয়া হয় এবং মানুষকে ‘গণতন্ত্র রক্ষার’ জন্য রাস্তায় নামার আহ্বান জানানো হয়।

এর আগে, একটি টেলিভিশন ঘোষণায় তুরস্কের সেনাবাহিনীর একটি অংশ দাবি করে, তারা দেশের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।

মোবাইল ফোনে দেয়া এক ভাষণে প্রেসিডেন্ট তায়্যিব এর্দোয়ান সমর্থকদের রাস্তায় নামার আহ্বান জানান।

ইস্তানবুলের সঙ্গে দেশের অন্য অংশের ব্রিজ বন্ধ করে দেয়া হয়।

সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, এখন থেকে একটি ‘পিস কাউন্সিল’ দেশ পরিচালনা করবে। দেশে কারফিউ এবং মার্শাল ল’ জারি করা হয়েছে।

তবে এখনো এটা পরিষ্কার নয় যে, এই ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত।

এই ঘটনাকে ক্ষুদ্র একটি গোষ্ঠীর প্রচেষ্টা বলে বর্ণনা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসিপ তায়্যিব এর্দোয়ান। তিনি দেশের জনগণকে এর বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আসার আহবান জানান।

তিনি আঙ্কারায় যাচ্ছেন বলেও ঘোষণা দিয়েছেন।

তুরস্কের একটি টেলিভিশন বলছে, রাজধানী আঙ্কারায় অভ্যুত্থান চেষ্টার পক্ষের একটি হেলিকপ্টার গুলি করে ভূপাতিত করেছে সরকারি ফাইটার বিমান।

এর আগে তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইয়ালদ্রিম জানিয়েছিলেন, তুরস্কে সেনাবাহিনীর একটি অংশ বেআইনি অভিযান শুরু করেছে।

তিনি বলেছেন, কোন অনুমতি ছাড়াই সেনাবাহিনীর সদস্যরা ওই অভিযান শুরু করেছে। তবে এটা কোন অভ্যুত্থান নয়।

টার্কিশ সরকারে কোন পরিবর্তন হয়নি বলেও তিনি জানান।

তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় গোলাগুলির হচ্ছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। ইস্তানবুলের পুলিশ সদর দপ্তর এলাকাতেও গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে।

ইস্তানবুল বিমানবন্দরের বাইরে ট্যাংক মোতায়েন করা হয়েছে।

Image copyrightAFP
Image captionতুরস্কের প্রধানমন্ত্রী বলছেন, সেনাবাহিনীর একটি অংশ বেআইনিভাবে অভিযান শুরু করেছে

কারফিউ ঘোষণা করা হলেও, এর্দোয়ানের একদল সমর্থক ইস্তানবুলের তাকসিম স্কোয়ারে জড়ো হয়েছেন। সেখানেও সংঘর্ষ হয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি সূত্র রয়টার্সকে বলেছে, সবকিছু দেখে এটা একটি পরিকল্পিত অভ্যুত্থান বলেই মনে হচ্ছে। কারণ তারা সব গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান নিয়েছে। খুব সহজে এর শেষ হবে বলে মনে হচ্ছে না ।

এনটিভি টেলিভিশনকে টেলিফোনে মি. ইয়ালদ্রিম বলছেন, কোন একটি চেষ্টার সম্ভাবনার বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। তবে এ ধরণের কোন চেষ্টা বরদাস্ত করা হবে না।

তিনি অবশ্য আর কোন বিস্তারিত জানাননি। যারা এজন্য দায়ী,তাদের মূল্য দিতে হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

বসফরাস নদীর দুইপাশেই যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে এবং ইস্তানবুলের ফেইথ সুলতান মেহমেত ব্রিজটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

 

 

 

 

বিবিসি বাংলা

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে