বিডি নীয়ালা নিউজ ( ১৪ই জুলাই ২০১৬ইং)-ডেস্ক রিপোর্টঃ মোবাইলফোনের প্রায় আড়াই কোটি সিম বায়োমেট্রিক (আঙুলের ছাপ) পদ্ধতিতে নিবন্ধিত না হওয়ায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই বন্ধ সিমে মোবাইল অপারেটরগুলোর রাজস্বে প্রভাব পড়তে পারে, আয় কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে কোনও প্রভাব পড়েনি বলে জানায় মোবাইলফোন অপারেটরগুলোর সংগঠন অ্যামটব।
সংশ্লিষ্টদের মতে, মোবাইলফোন অপারেটরগুলোর দ্বিতীয় কোয়ার্টারের (প্রান্তিক) ব্যবসায়িক ফল প্রকাশ করলে বোঝা যাবে, রাজস্ব আয়ে প্রভাব-পড়েছে, কি পড়েনি। ভয়েস কল (কথা বলা) ও ডাটা বিক্রির (হার) পরিমাণ প্রকাশ করলেই জানা যাবে প্রকৃত চিত্র। তবে মোবাইলফোন সিম নির্ভর (মোবাইলফোনের সব সেবা) সেবায় সম্পূরক শুল্ক আরোপের ফলে ভয়েস ও ডাটার ব্যবহার কমেছে বলে মনে করছেন টেলিযোগাযোগ খাতের বিশেষজ্ঞরা।
একটি সূত্র বলছে, ভয়েস ও ডাটার (ইন্টারনেট) ব্যবহার কমেছে। এই কমার পেছনে যৌক্তিক কারণ রয়েছে। যেসব সিম নিবন্ধনের বাইরে রয়ে গেছে, তাতে ভয়েস ও ডাটা থেকে কোনও আয় হচ্ছে না। এটা সার্বিক প্রবৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলবে।
যদিও ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম মনে করেন, যে পরিমাণ সিম নিবন্ধনের বাইরে রয়ে গেছে, সেগুলো রাজস্ব আয়ে কোনও প্রভাব ফেলবে না। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এরমধ্যে নতুন সিম বিক্রি হবে, ভয়েস ও ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়বে। ফলে রাজস্ব আয়ে কোনও প্রভাব পড়বে না। যদি একটু পড়লেও তা পুষিয়ে নেওয়া যাবে।
জানা যায়, বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন শুধু মোবাইলফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যায়ই প্রভাব ফেলেনি, একইসঙ্গে প্রভাব ফেলেছে মোবাইলফোন অপারেটরদের আয় ও সরকারের রাজস্বেও। নিবন্ধন শুরু হওয়ার পর থেকেই অপারেটরগুলো তাদের গ্রাহক হারাচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে তাদের আয়ে। এছাড়া রাজস্ব পরিশোধ করা সিমগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে অপারেটরগুলো নানাভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অন্যদিকে নতুন সিমের বিক্রিও কমে গেছে।
মোবাইলফোন অপারেটরগুলোর সংগঠন অ্যামটবের মহাসচিব নুরুল কবীর বাংলা টিউবিউনকে বলেন, এর ফলে রাজস্ব আয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না। সবার শিক্ষাটা ভালো হয়েছে। তিনি এই সময়টাকে ট্রান্সজিশন প্রিয়ড বলতে চান। এটা দ্রুতই কেটে যাবে। তিনি মনে করেন, মোবাইলফোন ব্যবহারকারীদের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক (সম্পুরক) চাপানোয় কিছুটা সমস্যা হলেও হতে পারে। ভয়েস ও ডাটার ব্যবহার বাড়ছে। ক্রমাগত বাড়তে থাকবে।
জানা গেছে, গ্রামীণফোনের ৯০ শতাংশ সিমের নিবন্ধন হয়েছে। নিবন্ধনের বাইরে রয়ে গেছে ১০ শতাংশ। অন্যদিকে রবির প্রায় অর্ধকোটি সিম এখনও নিবিন্ধন হয়নি। অর্ধকোটিরও বেশি সিম নিবন্ধন হয়নি বাংলালিংকের। এছাড়া এয়ারটেল, টেলিটক ও সিটিসেলের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সিমও নিবন্ধন হয়নি। ফলে ওইসব সিমের বিপরীতে আয় বন্ধ রয়েছে। অন্যদিকে সিমনির্ভর সব ধরনের সেবায় ৩ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। এসবও সিমনির্ভর সব ধরনের সেবায় প্রভাব ফেলেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গ্রামীণফোন এখনই ভয়েস ও ডাটার ব্যবহারের হার জানাতে চায় না। বিষয়টি মূল্য সংবেদনশীল হওয়ায় আগেই কোনও তথ্য প্রকাশ করতে রাজি নয় অপারেটরটি। শিগগিরই দ্বিতীয় প্রান্তিকের ব্যবসায় রিপোর্ট প্রকাশের দিন এই তথ্য প্রকাশ করা হবে বলে জানা গেছে। অবশিষ্ট ৫ অপারেটরের মধ্যে অন্তত ২টি অপারেটর ব্যবসায় রিপোর্ট প্রকাশের সময় ভয়েস ও ডাটার ব্যবহারের হার প্রকাশ করতে পারে।
প্রসঙ্গত, দেশে মোট মোবাইলফোনের ব্যবহারকারী ১৩ কোটি ১৯ লাখ। গত ৩০ মে মধ্যরাত পর্যন্ত ১০ কোটি ১৫ লাখ সিম নিবন্ধন হয়। জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে নিবন্ধিত সিম সংখ্যা দাঁড়ায় ১১ কোটি ৬০ লাখে। এখনও সারাদেশে সিম নিবন্ধন চলছে। এ জন্য ব্যবহার হচ্ছে প্রায় ১ লাখ ডিভাইস।
bangla-trib