samsurrahman

বিডি নীয়ালা নিউজ(২লা ফেব্রুয়ারী১৬)-সাহিত্য ও সংষ্কৃতি প্রতিবেদনঃ সতেরো বছর আগে কবি শামসুর রাহমানকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় দায়ের করা একটি মামলা পুনরুজ্জীবিত করতে আদালতে আবেদন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ। ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে বিচারাধীন অবস্থায় সাক্ষীর অভাবে ২০০৪ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ৭ আসামিকে অব্যাহতি দেয়ার পর বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এই মামলার কার্যক্রম। এর দুই বছর পর ১৭ আগস্ট অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শামসুর রাহমান, যিনি বাংলাদেশের প্রধান কবি হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
১৯৯৯ সালের ১৮ জানুয়ারি শামসুর রাহমানের রাজধানীর শ্যামলীর বাড়িতে ঢুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে আঘাত করে একদল দুর্বৃত্ত। এতে গুরুতর জখম হলেও ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি।

এ ঘটনায় কবির পরিবারের পক্ষ থেকে মোহাম্মদপুর থানায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে একটি মামলা করা হয়। এতে বলা হয়, আসামিরা বেআইনিভাবে ঘরে ঢুকে খুন করার উদ্দেশ্যে শামসুর রাহমানকে জখম করে।
মৌলবাদ ও অসাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সোচ্চার শামসুর রাহমানের ওপর হামলার সময় বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতার বিষয়টি প্রকাশ্য ছিল না। এর ৫ বছর পর লেখক-অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদের ওপর হামলার সময়ও প্রকাশ্যে আসেনি বিষয়টি।
২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট একযোগে সারাদেশে বোমা হামলা চালিয়ে জঙ্গি সংগঠন জেএমবি নিজেদের উপস্থিতির প্রকাশ্য ঘোষণা দেয়। এরপর আগের বিভিন্ন হামলার তদন্তেও জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মিলতে থাকে।
ঢাকার আদালত পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের সহকারী কমিশনার মিরাশ উদ্দিন জানান, ধর্মীয় মৌলবাদী, জঙ্গি ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকান্ড নাশকতা সৃষ্টিকারীদের তালিকা করতে গিয়ে আলোচিত এবং স্পর্শকাতর এই মামলা ঢাকার আদালত পুলিশের নজরে আসে।
এছাড়া এই মামলায় আরো কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ না পাওয়ায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয় আদালতে।
আদালত পুলিশের কর্মকর্তা মিরাশ উদ্দিন বলেন, ‘ধর্মীয় মৌলবাদী, জঙ্গি ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকা-ে জড়িত নাশকতা সৃষ্টিকারীদের তালিকা করছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। প্রসিকিউশন বিভাগ থেকে আমরা সাহায্য করছি। এ সময় আলোচিত ও স্পর্শকাতর এই মামলাটির বিষয় ঢাকার আদালত পুলিশের নজরে আসে।’
এই মামলা সম্পর্কে তথ্য উদ্ঘাটন করতে অন্তত তিন মাস সময় লাগে জানিয়ে মিরাশ বলেন, ‘আমি নিজ উদ্যোগে মোহাম্মদপুর ও আদাবর থানা কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাই মামলাটির পরিণতি সম্পর্কে। পরে মামলার নাম্বার জানা যায়।’
মোহাম্মপুর থানায় দ-বিধির ৪৪৮, ৩২৪, ৩০৭, ১০৯/৩৪ ধারায় এই মামলা করা হয় জানিয়ে এই সহকারী পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘আমরা ২০০৪ সালের মামলার নিবন্ধন খাতা (রেজিস্ট্রার) খুঁজে পেয়েছি। মামলার কাগজপত্রও পেয়ে যাব। আমরা মামলাটির বাদীকেও খুঁজছি। আমি এখন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারের কাছে মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করার জন্য অনুমতি চাইব। অনুমতি পেলেই ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে মামলাটি পুনরায় চালুর আবেদন করব।’
মামলা পুনরুজ্জীবিত করতে আইনি কোনো বাধা নেই বলে মনে করেন ঢাকার আদালতে ফৌজদারি মামলায় অভিজ্ঞ আইনজীবী আমিনুল গনী টিটো। তিনি বলেন, ‘দেরিতে হলেও মামলা আবার চালু করার যুক্তিসঙ্গত কারণ দেখাতে পারলে অবশ্যই আদালত আবারো বিচার শুরু করার নির্দেশ দিতে পারে।’

1 মন্তব্য

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে