ঈদুল আজহা উপলক্ষে গরিব দুস্থদের মাঝে শাড়ি ও লুঙ্গি বিতরণকালে এক বৃদ্ধ ব্যক্তিকে ঘুষি মারেন নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বা বিভিন্ন খবরে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। এরপরেই এ বিষয়ে মুখ খুললেন কাদের মির্জা।

শুক্রবার (১৬ জুলাই) রাতে নিজের ফেসবুক পেজে এ বিষয়ে একটি স্ট্যাটাস দেন তিনি।স্ট্যাটাসে কাদের মির্জা লেখেন, ‘প্রিয় দেশবাসী, আপনারা জানেন মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে লকডাউনে জনজীবন অবরুদ্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে আমি আমার পৌরসভা থেকে নিম্ন আয়ের অসহায় মানুষদের জন্য বিভিন্ন সহযোগিতা করে আসছি। এর আগেও আমি সর্বদা চেষ্টা করতাম, অসহায় গরিব-দুঃখী মানুষের পাশে থাকতে।আমার পৌরসভা ও আমার ব্যক্তিগত পক্ষ হতে, আমি শুধু কোম্পানীগঞ্জ নয়, কবিরহাট, দাগনভূঞা, সোনাগাজী, সেনবাগসহ বিভিন্ন জনপদের অসহায় মানুষদের সহযোগিতা করে আসছি। কখনও কোনো মানুষ সাহায্য প্রত্যাশা করে আমার কাছ থেকে খালি হাতে ফিরে যায়নি।আজও আমার পৌরসভাতে অসহায় মানুষদের এক হাজারের বেশি শাড়ি-লুঙ্গি, পাঁচশত জনকে নগদ অর্থ ও প্রায় দুই হাজার জনের মাঝে চাউল বিতরণ করা হয়। পৌরসভার ছোট্ট আঙিনায় সহস্রাধিক মানুষ একত্রিত হয়ে যাওয়ায় দ্রুততার সাথে কাপড় বিতরণ করতে হয়েছিল।তাই যাদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে তাদের দ্রুত চলে যাওয়ার জন্য বলা হচ্ছিল। তখন একজন মানুষ কাপড় পাওয়ার পরও দাঁড়িয়ে থাকায় এবং একাধিকবার বলার পরও সে মাস্ক না লাগানোর কারণে তাকে দ্রুত সরে যাওয়ার জন্য হাত দিয়ে সরানো হচ্ছিল। এখানে তাকে আঘাত করা হয়নি। এ বিষয়ে তিনি কোনো আক্ষেপও করেননি।সহস্রাধিক মানুষের মাঝে একযোগে এতগুলো ত্রাণ বিতরণ করার সময় অজান্তে কিছু অসাবধানতা হতে পারে, এক্ষেত্রে ইচ্ছাকৃত কোনো কিছু করা হয়নি। আমি সব সময় অসহায় গরিব মানুষের পাশে আছি। কখনও কেউ আমার কাছে সাহায্যের জন্য এসে খালি হাতে ফিরে যায়নি। আমার সামর্থ্য অনুযায়ী আমি যতদিন বেঁচে থাকব অসহায় গরিব মানুষের সেবা করে যাব।সকলের কাছে প্রত্যাশা রাখব, অন্যের সমালোচনা না করে, যে যার সামর্থ্য অনুযায়ী অসহায় গরিব মানুষের সহযোগিতায় হাত বাড়ান। একজনের সমালোচনা না করে মানুষকে সহযোগিতা করুন।’এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মেয়র আবদুল কাদের মির্জা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘সহস্রাধিক মানুষের মাঝে একযোগে এতগুলো ত্রাণ বিতরণ করার সময় অজান্তে কিছু অসাবধানতা হতে পারে, এক্ষেত্রে ইচ্ছাকৃত কোনো কিছু করা হয়নি। একজন মানুষ কাপড় পাওয়ার পরও দাঁড়িয়ে থাকায় এবং একাধিকবার বলার পরও মাস্ক না লাগানোর কারণে তাকে দ্রুত সরে যাওয়ার জন্য হাত দিয়ে সরানো হচ্ছিল। এখানে তাকে আঘাত করা হয়নি। এ বিষয়ে তিনি কোনো আক্ষেপও করেননি।’এর আগে শুক্রবার (১৬ জুলাই) সকাল ৯টায় পৌর ভবনের সামনে এ ঘুষি মারার ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিক বৃদ্ধকে ঘুষি মারার ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।মেয়র মির্জার নিজ ফেসবুক আইডি থেকে দেওয়া লাইভের ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি সারিবদ্ধ নারী-পুরুষের মাঝে শাড়ি ও লুঙ্গি বিতরণ করছেন। ২০ মিনিট ৫৮ সেকেন্ডের ফেসবুক লাইভ ভিডিওতে ১৭ মিনিট ৩০ সেকেন্ডের সময় দেখা যায়, মেয়র মির্জা এক বৃদ্ধের হাতে শাড়ি দিয়েছেন। হাতে নেওয়ার পর ওই বৃদ্ধ শাড়িটি পরিবর্তন করে অন্যটি নিতে চাইলে কাদের মির্জা তার বুকে ঘুষি মেরে সরিয়ে দেন।একই ভিডিওতে কিছুক্ষণ পর দেখা যায়, ওই বৃদ্ধকে উদ্দেশ্য করে একটি শাড়ি ছুঁড়ে মারেন মির্জা। ভিডিওতে আরও একাধিক ব্যক্তিকে অপদস্ত করতে দেখা যায়।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর ঘটনাটি, ‘টক আব দা কোম্পানীগঞ্জ’ এ পরিণত হয়। এ নিয়ে বসুরহাট বাজার ও উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মানুষকে বিরুপ মন্তব্য করতে দেখা গেছে।

SO/N

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে