পিএম শরীফ, বরগুনা প্রতিনিধিঃ বরগুনার তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের নলবুনিয়ায় তিন নদীর মোহনায় বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেষে অবস্থিত এই শুভসন্ধ্যা সমুদ্র সৈকত এবং কিছু দুরেই দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল টেংরাগিরি।ঘূর্ণিঝড় ইয়াশের আঘাতে রাস্তাসহ ঝাউবাগান বিপন্ন হয়ে পড়েছে। সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে,শুভসন্ধা সমুদ্র সৈকত ও টেংরাগিরি ইকো পার্কের ভিতরে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।শুভ সন্ধার সমুদ্র সৈকতের ঝাউ বাগানটি পর্যটকদের কাছে বেশ আর্কষণীয় জায়গা ছিল।সেই ঝাউবাগান এর সৌন্দর্য্য ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে মাটির গর্ভে বিলীন হয়েছে।ঝাউগাছের পাশাপাশি সৈকতে নামার মূল পাকা সড়ক ও বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎতের খুটি ভেঙে সৈকতে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। বন বিভাগের সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার শুভসন্ধ্যা সমুদ্র সৈকতে ঝাউ গাছ লাগানো শুরু থেকে যে কয়টি ঘূর্ণিঝড় আসছে তাতে প্রায় ২৫ হাজার ঝাউ গাছের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়ে আছে ৫০ ফুট প্রস্থ ও ৩ কিলো মিটার দৈর্ঘ্য এঝাউবনটি।টেংরাগিরির ভিতরে ভেতর ৪০ মিটার দৈর্ঘ্যের অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণ প্রকল্পও হাতে নিয়েছে এলজিইডি। ৭৭ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটির নির্মাণব্যয় ধরা হয় ৭ কোটি টাকারও বেশি।পরিকল্পনায় গলদ’ থাকায় এ উদ্যোগ বনাঞ্চল ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয়রা জানান, ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল টেংরাগিরি ও শুভসন্ধ্যার ঝাউবনটি ঘূর্ণিঝড় সিডর, আয়লা, নারর্গিস, আম্ফানসহ বড় বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগকে মোকাবেলা করে উপকূল বাসীকে রক্ষা করেছে। এই বন উপকূলীয় এলাকার মানুষের জীবন ও সম্পদের রক্ষাকারী কবজ হিসেবেও কাজ করেছে। আর ইয়াসের প্রভাবে সেই রক্ষা কবজই এলোমেলো হয়ে গেছে। এই বন না থাকলে উপকূলকে বাচাঁনো সম্ভব হতো না।বনাঞ্চল না থাকলে আমাদের আরো ক্ষয়ক্ষতি হতো। নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. দুলাল ফরাজী বলেন,এই সমুদ্র সৈকতের বিশাল আকর্ষণ হলো ঝাউবাগানটি।প্রতিটি প্রাকৃতিক দুর্যোগে টেংরাগিরি বনাঞ্চল ও শুভসন্ধ্যা ঝাউবন আমাদের এ উপককূলীয় এলাকার মানুষদের জীবন ও সম্পদ বন্যা থেকে রেহাই করে। তালতলী এলজিইডির প্রকৌশলী আহম্মেদ আলী বলেন,জেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় আমরা এখানে সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করি।সেতুর ৬০ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। তালতলী বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে সাগরে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় টেংরাগিরি বনাঞ্চল ও শুভসন্ধ্যা ঝাউবনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পানির তোরে শুভসন্ধ্যা সমুদ্র সৈকতের প্রায় দেড় কিলোমিটার পার ভেঙে সাগরে বিলীন হয়ে গেছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে