টানা ১৯ দিনের (৩ সপ্তাহ) কঠোর বিধিনিষেধ শিথিলের পর স্বাস্থাবিধি মেনে আবারও চলতে শুরু করেছে গণপরিবহন। যত সিট তত যাত্রী নিয়ে বুধবার (১১ আগস্ট) ভোর থেকে রাজধানীসহ সারা দেশে গণপরিবহন চলতে শুরু করে। এতে সাধারণ যাত্রীদের মনে অনেকটা স্বস্তি ফিরেছে।

এর আগে রোববার (৮ আগস্ট) সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করে জানানো হয়, যত সিট তত যাত্রী নিয়ে আগামী ১১ আগস্ট থেকে চলতে পারবে গণপরিবহনগুলো। তবে মোট পরিবহন সংখ্যার অর্ধেক গাড়ি নামতে পারবে সড়কে।
 তবে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ মন্তব্য করে বলেন, সড়কে অর্ধেক গাড়ি চলাচলের বিষয়টি নির্ণয় করা কঠিন হবে।

তিনি বলেন, এক মালিকের কয়টি গাড়ি আছে বা কতটা গাড়ি সে দেশব্যাপী চালাচ্ছে এ বিষয়টি নির্ণয় করা একদিকে যেমন কঠিন হবে, অন্যদিকে শ্রমিকেরা বেকার থাকবে, তাদের কষ্ট লাঘব হবে না। মালিকরাও ব্যবসায়িকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাছাড়া অর্ধেক গাড়ি চলাচলের ফলে পরিবহন সংকট দেখা দেবে এবং যাত্রীর চাপ বাড়বে। এতে করে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
 এ সময় তিনি জানান, সরকারের এ সিদ্ধান্ত পরিতবর্তন করে আসন সংখ্যার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে সব গণপরিবহন চালাতে চায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি।
 এদিকে মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) থেকে গণপরিবহন চলাচলের বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে যে, গণপরিবহনে কোনো যাত্রী দাঁড়িয়ে নেওয়া যাবে না।
 বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়:
১. আসন সংখ্যার অতিরিক্ত কোনো যাত্রী পরিবহন করা যাবে না এবং দাঁড়িয়ে কোনো যাত্রী বহন করা যাবে না। সড়ক পথে গণপরিবহন চলাচলের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন (সিটি করপোরেশন এলাকায় বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসক) নিজ নিজ অধিক্ষেত্রের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, সংশ্লিষ্ট দপ্তর/ সংস্থা, মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিদিন মোট পরিবহন সংখ্যার অর্ধেক চালু করতে পারবে।
২. পূর্বের ভাড়ায় (৬০ শতাংশ বর্ধিত ভাড়া প্রযোজ্য হবে না) গণপরিবহন চলবে। পূর্বের ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া কোনোভাবেই আদায় করা যাবে না।
৩. গণপরিবহনের যাত্রী, চালক, সুপারভাইজার/কন্ডাক্টর, হেলপার-কাম ক্লিনার এবং টিকিট বিক্রয় কেন্দ্রের দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিদের মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করতে হবে এবং তাদের জন্য প্রয়োজনীয় হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
 ৪. যাত্রার শুরু ও শেষে যানবাহন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নসহ জীবাণুনাশক দিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। এছাড়া যাত্রীদের হাতব্যাগ, মালপত্র জীবাণুনাশক ছিটিয়ে জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা যানবাহনের মালিকদের করতে হবে।
 ৫. গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয়াদি মেনে চলতে হবে। অন্যথায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পবিত্র ঈদুল আজহার পর ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ১৪ দিনের কঠোর লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। পরে সেটি বাড়িয়ে ১০ আগস্ট পর্যন্ত করা হয়। এর পর ৮ আগস্ট মন্ত্রিসভা বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করে কঠোর লকডাউন শিথিলের ঘোষণা দেওয়া হয়।

So/N

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে