মোঃ কাওছার হামিদ, কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) থেকেঃ ওকি গাড়িয়াল ভাই হাকাও গাড়ি তুই চিলমারীর বন্দরে। গানটি এখন লোকমুখে শুধুই স্মৃতি। রংপুর অঞ্চলের সেই কালজয়ী ভাওয়াইয়া গান “ বর্তমান যুগে সব কিছুই যেন স্মৃতি। বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলে গরু মহিষের গাড়ির প্রচলন ছিল আদিকাল থেকেই। অভিজাত পরিবারের সদস্যরা যাতায়াত করতো গরুর গাড়িতে। আত্মীয়ের বাড়ী বেড়াতে যেত গরুর গাড়িতে চড়েই। বাড়ীর বাইরে গরুর গাড়ীর আওয়াজ শুনে বোঝা যেত অতিথি এসেছে। এছাড়া প্রায় প্রতিটি বাড়ীর আঙ্গিনায় শোভা পেতো এই দুই চাকার গাড়িটি। এক সময় বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলে যে কোন গ্রামে অবশ্যই চোখে পড়তো গরু কিংবা মহিষের গাড়ি। যদি ও বর্তমান সময়ে পাওয়ার টিলার আসার কারণে গ্রামে গরু দিয়ে হালচাষ বা গরুর গাড়ির দেখা মেলে না।

কিন্তু এখন যন্ত্রচালিত যানবাহনের যুগ। তাই সেই দৃশ্য খুব একটা চোখে পড়ে না। নীলফামারীর ৬ টি উপজেলায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ০৬্ এপ্রিল শুক্রবার জুম্মার নামাজবাদ ৩ টায় জলঢাকা উপজেলার কৈমারী ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড দক্ষিণ চেংমারী বড়ঘাট এলাকায় বহুদিন পর হারিয়ে যাওয়া গরুর গাড়ী চোখে পড়ল। তৎক্ষণাৎ গাড়ি টি থামিয়ে গাড়িয়াল কৈমারী ইউনিয়নের দক্ষিণ চেংমারী এলাকার মৃত্যু এজাল উদ্দিনের ছেলে জসিমুদ্দিনকে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, আমার বাড়ী চেংমারী ওয়ার্ডে। আর ও বলেন, আমার এই গরুর গাড়িটা ও গরু দুইটা ১ লক্ষ ৫ হাজার টাকা দিয়া সাজাইছি ও বহুদিন থেকে চালাচ্ছি। শুধু তাই নয় তার বাব- দাদার আমল থেকে গরুর গাড়ী চলে আর সে নিজে ও দীর্ঘদিন থেকে চালিয়ে আসছে বলে জানান।

এই জসিম উদ্দিন গ্রাম- বাংলার ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন। সে বলেন, গ্রাম- বাংলার ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ী যেন হারিয়ে না যায়। আগে এই গরুর গাড়ি গুলো শহর, বন্দর এমনকি গ্রামের সব জায়গায় দেখা যেত। কেননা এসব গাড়ী বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করতো মানুষ। বিয়ের বাড়ী, আত্মীয়- স্বজনদের বাড়ী, মালামাল বহনসহ নানা কাজে গরুর গাড়ীর ব্যবহার হতো। বর্তমানে এই গাড়িগুলো তেমন আর চোখে পড়ে না। যদি ও পড়ে হঠাৎ দুই- একটা দেখা যায় বলে অনেকে বলেন। ওই এলাকার জসিম উদ্দিন তার গরুর গাড়ি দিয়ে বিভিন্ন হাট- বাজার থেকে মালামাল বহন করে আসছে।

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে