জয়নাল আবেদীন হিরো, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ নীলফামারীর সৈয়দপুরে ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক পৌরসভাকে প্রদত্ত ২৫.৭৫ একর জমি নিয়ে থেকে থেকেই রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের অযাচিত হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে পৌর পরিষদ। ২ অক্টোবর শনিবার সকাল সাড়ে ১১ টায় পৌর কমিউনিটি সেন্টারেরর হলরুমে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মেয়র রাফিকা আকতার জাহান বেবী।

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, প্যানেল মেয়র-১ শাহিন হোসেন, ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহিন আখতার শাহিন, ১৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জোবায়দুর রহমান শাহীন, ১১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এরশাদ হোসেন পাপ্পু, ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বেলাল হোসেন প্রমুখ। এসময় অন্যান্য কাউন্সিলরবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

মেয়র রাফিকা আকতার জাহান তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, দীর্ঘদিন থেকে রেল কর্তৃপক্ষের সাথে পৌর বাজারের হস্তান্তরকৃত ২৫.৭৫ একর জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে। রেলওয়ে উক্ত হস্তান্তরকে অবৈধ মর্মে ঘোষনার দাবীতে মোকদ্দমা দায়ের করেন। যা পৌরসভার পক্ষে আপীল আদালতে রায় হয়।

তারপর তারা ২০০৫ সালে ১৭ কোটি টাকা আদায়ের দাবীতে মানিসুট মোকদ্দমা দেয়। ২০১১ সালের ২০ অক্টোবর ওই মোকদ্দমা দোতরফা সূত্রে পৌরসভার পক্ষে ডিক্রী হয়। আবারও সাব্যস্ত পূর্বক খাস দখলের দাবীতে অন্য ১৭/০৯ মামলা করে রেলওয়ে। এটাতেও ২০১৮ সালে রেলের বিরুদ্ধে রায় দেয় আদালত। এর প্রেক্ষিতে রেল আপীল করায় মামলা চলমান।

মেয়র বলেন, এভাবে একের পর এক মামলা দিয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ পৌরসভাকে হয়রানী করাসহ অহেতুক অর্থ ব্যয় করাচ্ছে। যা সম্পূর্ণরূপে অন্যায় ও অধিকার বহির্ভূত। অথচ ১৯৭৯ সালে ১৪.০২ একর রেলওয়ে বাজারের জমির বাবদ একটি লাইসেন্স এগ্রিমেন্ট হয়। যা ১৯৮৩ সালের বাংলাদেশ রেলওয়ে (রিপিল) অর্ডিন্যান্স দ্বারা বাতিল হয়। ওই অধ্যাদেশ ২ এর সি ধারায় বলা আছে রেলওয়ের সাথে সকল এগ্রিমেন্ট বা চুক্তি বাংলাদেশ সরকারের চুক্তি বা এগ্রিমেন্ট হিসেবে গণ্য হবে।

তিনি বলেন, ইতোপূর্বে বাংলাদেশ সরকারের এক সিদ্ধান্ত মোতাবেক রেলওয়ের যেসব হাট-বাজার পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন এলাকাধীন তা সংশ্লিষ্ট সিটি বা পৌরসভায় হস্তান্তর করা হয়। সেমতে ১৯৮৫ সালে সৈয়দপুর রেলওয়ের ২৫.৭৫ একর জমি ও তার উপরিস্থিত দোকান ঘরের দখল বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে জেলা প্রশাসক বুঝে নেন।

পরে একইদিন উক্ত পরিমাণ জমি ও দোকানের দখল পৌরসভার বরাবর হস্তান্তর করেন এবং ইহার মালিকানা ভুমি মন্ত্রণালয়ের বরাবর ন্যাস্ত করেন। ওই হস্তান্তরপত্রে পৌরসভাকে যাবতীয় অধিকার তথা লাইসেন্স প্রদান-নবায়ন, রেন্ট ও টোল আদায় অর্থাৎ সার্বিক ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ করা হয়।

পৌর মেয়র অভিযোগ করেন যে, সেই নির্দেশনা অনুযায়ী পৌরসভা কাজ করছে। কিন্তু তারপরও রেল কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সময় নানা কায়দায় পৌর বাজার এলাকায় উচ্ছেদ পরিচালনা সংক্রান্ত মাইকিং করে দোকানদার ও পৌরবাসীকে বিভ্রান্ত করে আসছেন।

এরই ধারাবাহিতায় সম্প্রতি ২৫.৭৫ একর জমিতে কার কার দালানকোঠা আছে, তার বিল্ডিং প্লানের ম্যাপ দেখানোর জন্য পার্বতীপুর রেলওয়ে কানুনগো অফিসে জমা দেয়ার জন্য মাইকিং করা হয়েছে। যা রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের চরম অনধিকার চর্চা। তাই আমরা এর প্রতিবাদে পাল্টা মাইকিং করে জনগনকে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য আহবান জানিয়েছি।

তিনি বলেন, কিন্তু রেলওয়ের এধরনের কর্মকাণ্ড অযাচিত ও অনভিপ্রেত। তাদের এমন হয়রানী বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। তাই এব্যাপারে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। তিনি জানান, ইতোমধ্যে বিষয়টি সমাধানে রেলমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাত করে লিখিত আবেদন জানানো হয়েছে। যা রেলওয়ের পাকশী কার্যালয়ে পাঠানোও হয়েছে। এসকল বিষয় তুলে ধরে সহযোগীতা করতে সংবাদকর্মীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে পৌর পরিষদ। (ছবি আছে)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে