জয়নাল আবেদীন হিরো, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ নীলফামারীর সৈয়দপুরে তৈরীকৃত শীতের গরম কাপড় রপ্তানি করা হচ্ছে ভারত ও নেপালে এবং অর্ডার মিলেছে প্রায় ৫ কোটি টাকার। এমনটি জানিয়েছেন সৈয়দপুর রপ্তানীমুখী গার্মেন্টস মালিক সমিতি। শীতকে সামনে রেখে এ বছর ভারত ও নেপাল থেকে ৫ হাজার ডলারের আমদানি আদেশ পাওয়া গেছে। কাজ পেয়ে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে স্থানীয় ক্ষুদ্র গার্মেন্টস কারখানাগুলো।

সৈয়দপুরের রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস মালিক সূত্র জানায়, ইতোপূর্বে রপ্তানি আদেশ না পাওয়ায় সৈয়দপুর শহরের প্রায় ২ শতাধিক ক্ষুদ্র গার্মেন্টস কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। সম্প্রতি এসব কারখানাগুলো আবার চালু হতে শুরু করেছে। কারণ অর্ডার আসছে।

এ মৌসুমে প্রায় ৫ কোটি টাকার জ্যাকেট ভারত ও নেপাল যাচ্ছে। এ শীতে অর্ডার মিলেছে ৫ কোটি টাকার তৈরি পোশাকের। সে কারণে বেশ ব্যস্ত হয়ে উঠেছে সৈয়দপুর শহরের ক্ষুদ্র গার্মেন্টস কারখানাগুলো। ব্যাংকের ঋণপত্র (এলসি) খুলে এসব জ্যাকেটের আমদানি আদেশ পাঠানো হয়েছে।

তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক মতিয়ার রহমান দুলু অর্ডার পেয়েছেন ২ লাখ ডলারের টুপি ও জ্যাকেট রপ্তানির। তিনি স্থানীয় কারখানাগুলো থেকে এসব পোশাক সংগ্রহ করে থাকেন। ইতোমধ্যে ৭০ হাজার ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছেন তিনি।

মতিয়ার রহমান দুলু বলেন, এবার শীত মৌসুমে ব্যবসা মোটামুটি ভালোই হবে। তার প্রতিষ্ঠান এম আর গার্মেন্টস ৪ লাখ ডলারের শীতের পোশাকের অর্ডার পেয়েছে। শিগগিরই ভুটান থেকেও অর্ডার আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

সৈয়দপুর নিউক্লথ মার্কেটের পোশাক কারখানার উদ্যোক্তা শাহিন জানান, আমাদের পুঁজি সংকট রয়েছে। কিন্তু অর্ডার আসায় বসে থাকা যাচ্ছে না। সৈয়দপুরের সব কারখানাগুলো এখন শীতের জ্যাকেট তৈরিতে ব্যস্ত।

সরেজমিনে দেখা যায়, সৈয়দপুর ক্ষুদ্র গার্মেন্টস কারখানাগুলোতে দিনরাত কাজ হচ্ছে। জ্যাকেট তৈরির প্রধান উপকরণ হলো ঝুট ও ব্লেজারের কাপড়। কিছু জ্যাকেট তৈরিতে প্যারাসুট কাপড়ও ব্যবহার হচ্ছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ থেকে ঝুট কাপড় সংগ্রহ করে এনে সৈয়দপুরের কারখানাগুলোতে তৈরি হচ্ছে সুন্দর সুন্দর জ্যাকেট।

কয়েকজন গার্মেন্টস মালিক বলেন, এসব জ্যাকেটের দাম তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায় ব্যাপক চাহিদা রয়েছে ভারত ও নেপালে। জ্যাকেটগুলোর দাম ৩শ’ থেকে দুই হাজার টাকার মধ্যে বলে জানান তারা।

রপ্তানিমুখী ক্ষুদ্র গার্মেন্টস মালিক সমিতির সভাপতি আখতার হোসেন খান বলেন, প্রতিবছর ভারত নেপাল ও ভুটান থেকে জ্যাকেট, লং ট্রাউজার, প্যান্ট, শর্টস, ক্যাপ, শার্ট ইত্যাদির অর্ডার পাই আমরা। শীত মৌসুমে এর চাহিদা বেড়ে যায় বহুগুন। কিন্তু উদ্যোক্তাদের হাতে পুঁজি সংকট থাকায় রপ্তানির গতি বাড়ানো যাচ্ছে না। এ নিয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন। আসছে শীত মৌসুমে প্রায় ৫ কোটি টাকার জ্যাকেট রপ্তানি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে