img_20161127_094017-780x445

নীলফামারী প্রতিনিধিঃ নীলফামারীর সৈয়দপুরে মাঠে মাঠে এখন শীতকালীন সবজির ঘ্রাণ। এই মৌসুমের সবজি চাষে ব্যস্ত হয়ে উঠছেন স্থানীয় কৃষকরা। বর্তমান মৌসুমে সবজির বীজ বপন, চারা রোপণ ও পরিচর্যার কাজ হচ্ছে সৈয়দপুরের মাঠে-মাঠে। উপজেলায় শীতের আগাম সবজি চাষের ধুম পড়েছে। কেউ কেউ আরো আগেই সবজি চাষে নেমেছেন। এরই মধ্যে বাজারে উঠতে শুরু করেছে শীতের প্রায় সব ধরনের আগাম সবজি। এর মধ্যে রয়েছে বাঁধাকপি, ফুলকপি, মুলা, করলা, লালশাক, পালংশাক, শিম, টমেটো, বেগুন, লাউ, শসা, মিষ্টিকুমড়া, বরবটি, ডাঁটা, চিচিঙ্গা, পটোল, ঢ্যাঁড়স, কাঁচা মরিচসহ
নানা ধরনের সবজি।

প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন বাজারে শীতকালিন সবজি পাওয়া যাচ্ছে। তবে দাম একটু চড়া। তারপরও লোকজন নতুন সবজি ক্রয় করছেন। আগাম সবজি বাজারে তুলতে পারলে বেশি টাকা আয় করা সম্ভব সেই চিন্তা মাথায় রেখে চারা তৈরি ও সবজি চাষে ব্যস্ত চাষিরা।

উপজেলার কামারপুকুর, কাশিরাম বেলপুকুর, খাতামধুপুর, বাঙ্গালিপুর ও বোতলাগাড়ী ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি সবজির আবাদ করা হয়েছে বোতলাগাড়ীর শ্বাসকান্দর, পোড়ারহাট, বেংমারী, অচিনারডাঙ্গা প্রভৃতি এলাকায়। সেখানে দিনরাত সবজির পরিচর্যা করছেন কৃষকেরা। কেউ কেউ পোকামাকড় দমনে স্প্রে করছেন, কেউবা কৃষি শ্রমিক দিয়ে সবজির পরিচর্যা করেছেন।

শ্বাসকান্দর এলাকার চাষি আবদুল কাদের, আনোয়ার হোসেন ও রফিকুল ইসলাম বলেন, টানা কয়েক বছর ধরে ধান চাষে কৃষকেরা দাম না পাওয়ায় শীতের সবজি আবাদ করে দুটো পয়সার মুখ দেখছেন। বিশেষ করে এলাকায় আগাম শীতকালীন সবজিতে এখানকার কৃষকেরা স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।

সৈয়দপুরের পাইকারি বাজার শনিবার বিকালে ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি শিম ৮০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ টাকা, ফুলকপি ৫০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা, ধনেপাতা ১৫০ টাকা, নাপাশাক ৪০ টাকা, সরিষাশাক ২০ টাকা, মুলাশাক ১৫ টাকা, মুলা ২৫ টাকা ও টমেটো ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এখানকার পাইকারি বাজার থেকে কিনে খুচরা দোকানিরা কেজিতে ৫ থেকে সর্বোচ্চ ২০ টাকা লাভ করছেন। অথচ পাইকারি বাজার থেকে খুচরা দোকানিদের দূরত্ব মাত্র ১০০ গজ। এ ছাড়া এই বাজার থেকে পাইকারেরা শীতের সবজি কিনে ট্রাকযোগে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাচ্ছেন।

পাইকারি বাজারের আড়তদার আফতাব আলম বলেন, চাষিরা সরাসরি এই বাজারে উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে পারেন না। তাঁরা সবজি প্রথমে আড়তে আনেন, তারপর আড়তদারেরাই চাষির সবজি বিক্রি করে দেন। বিনিময়ে আড়তদারকে পণ্য অনুযায়ী কমিশন ৫০ থেকে সর্বোচ্চ ২০০ টাকা গুনতে হয়।

সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোছা. হোমায়রা মন্ডল বলেন, এই উপজেলার প্রায় সব জমি সবজি চাষের জন্য উপযোগী। ধান ও অন্যান্য ফসল আবাদ করে কৃষকেরা তেমন একটা সুবিধা করতে পারেননি। ফলে চলতি মৌসুমে সবজির আবাদ করা হয়েছে। তিনি অারও বলেন, সবজি উৎপাদন বৃদ্ধিতে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা কৃষকদের দেয়া হচ্ছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে