সিরাজগঞ্জ থেকে,মারুফ সরকার: সিরাজগঞ্জ শহরের রেলওয়ে কলোনীর কুখ্যাত চোরাকারবারী ও মাদক ব্যবসায়ী পরিবারের সদস্যদের শহরের বাজার ষ্টেশনে মুক্তির সোপানে মাদক বিরোধী ও মিথ্যা মামলায় আ’লীগ নেতার শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন করায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। রবিবার সকালে শহরের মুক্তিসোপানে একই পরিবারের ১৮জন এ মানববন্ধন কর্মসুচী পালন করায় কলোনী মহল্লাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। এলাকাবাসী অবিলম্বে চোরাকাবারী বন্ধে তাদের গ্রেফতারের দাবী জানিয়েছেন। স্থানীয়রা জানান, রেলওয়ে কলোনী মহল্লার প্লেন বাবু-গাফফার, বোন দুলালী, লিপি খাতুন, মা আসমা খাতুন ও বোন জামাই হানিফসহ পরিবারের সকলেই চুরি-মাদক পেশার সাথে জড়িত।

নিজেদের বাড়ীতে ৭ থেকে ১০ বছর বয়সী অনাথ শিশুদের আশ্রয় দিয়ে তাদেরকে হেরোইন-ইয়াবা-প্যাথেডিনের নেশায় আসক্ত করে চুরি করা শেখায়। শিশুরা নেশার টাকার জোগাড়েরর জন্য শহর থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে মোবাইলসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি চুরি করে এনে তাদের কাছে জমা দেয়। এভাবে পরিবারটি রেলওয়ে কলোনীতে গড়ে তুলেছে চুরি ও মাদক সা¤্রাজ্য। পুলিশ বিভিন্ন সময় আটক করলেও ফাঁক-ফোকর গলিয়ে বেরিয়ে এসে শুরু করে অবৈধ ব্যবসা। কেউ প্রতিবাদ করলে তাদের উপর নেমে আসে অত্যাচার-নির্যাতন আর মিথ্যা মামলার খড়ক।

সম্প্রতি এলাকার মসজিদ ও দোকান থেকে তিন লক্ষাধিক টাকার মালামাল চুরির সময় হাতে-নাতে ধরা পড়ে। পরে এলাকাবাসী শালিসী বৈঠক বসলে তারা চুরির দায় স্বীকার করলে সালিশের মাধ্যমে জরিমানা করেন। কিন্তু জরিমানার টাকা যাতে দিতে না হয় সে জন্য শুরু করে নানা- তালবাহানা। এ অবস্থায় ১ আগষ্ট ভোর রাতে হানিফ ট্রাকে কাজ করার সময় গরম পানিতে তার দুপা ঝলসে যায়। আর এ দুর্ঘটনাকে পুঁজি করে প্রতিবাদকারী আওয়ামীলীগ নেতা শাহাদত হোসেন, যুবক পলাশ ও শুকুর আলীর নামে দায়ের করে মিথ্যা মামলা। মামলায় উল্লেখ করেছে ৩জন তাকে ধরে এনে পেট্টোল দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। অথচ মামলায় যেখানে ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন সেই বাড়ীর প্রতিবেশীরা কিছুই জানে না।

এছাড়াও সম্প্রতি ওই আওয়ামীলীগ নেতার বিরুদ্ধে শিশু ধর্ষনের চেষ্টার অভিযোগে থানায় মামলা দায়ের করে। পরে প্রায় সাড়ে তিনলক্ষাধিক টাকা জরিমানা নিয়ে মামলা আপোস করে ফেলে। এলাকাবাসী জানান, যারাই এই পরিবারের চুরি ও মাদক ব্যবসার প্রতিবাদ করে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে। আর মামলা মিমাংসার নামে লক্ষলক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। পরিবারটির অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন মহলে অভিযোগও দায়ের করেছে। এ কারণেই এলাকাবাসীকে ঘায়েল করতে আলীগ নেতা শাহাদহসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে। মাদক-চোরাকারবারীদের মামলা দায়েরের পরই পুরোকলোনী বাসী বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসুচী পালন করে।

এ অবস্থায় নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে রবিবার সকালে মাদক-চোরাকারবারী গাফফার, মা আসমা খাতুন বোন দুলালী, সুমীসহ পরিবারের ১৮জন মুক্তির সোপানে মানববন্ধন করে। এ সংবাদ রেলওয়ে কলোনী এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী ক্ষোভে ফেটে পড়েন। এলাকাবাসী অবিলম্বে ওই পরিবারকে গ্রেফতারপুর্বক শাস্তি দাবী জানিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দা, রুমা খাতুন, আলেয়া খাতুন, আলী মুন্সী জানান, নিজেদের অপকর্ম ঢাকতে পরিবারের ১৮জন নিয়ে মানববন্ধন করেছে। আমরা অবিলম্বে ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত মাধ্যমে মামলা প্রত্যাহার ও মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার দাবী জানাই।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে