মোঃ ফরহাদ হোসেন, বগুড়া প্রতিনিধিঃ বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলা হাটশেরপুর ইউনিয়ন নিজবলাইল ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসায় ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে নিরাপত্তাকর্মী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও আয়া পদে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নিয়োগ পরীক্ষায় উপস্থিত ছিলেন মাদ্রাসা অধিদপ্তরের ডিজি প্রতিনিধি সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মাহফুজা ইয়াসমিন, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার প্রতিনিধি সারিয়াকান্দি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার মিলন মিয়া, শিক্ষক প্রতিনিধি জাকারিয়া হোসেন, মাদ্রাসা সুপার জাহাঙ্গীর আলম, কমিটির সভাপতি সুলতান মাহমুদ রুবেল।
উক্ত তারিখে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন হলেও চূড়ান্ত হয়নি প্রার্থীদের নিয়োগ। প্রার্থীদের নিয়োগ বিষয়ে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, মাদ্রাসা সুপার ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির দ্বন্দ্বের কারণে প্রার্থীদের নিয়োগ প্রক্রিয়া অসমাপ্ত রয়েছে।
স্থনীয়রা জানান, গত ৯ সেপ্টেম্বর উপজেলার হাটশেরপুর ইউপির নিজবলাইল ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার নিরাপত্তা কর্মী, পরিচ্ছন্নতা কর্মী এবং আয়া পদে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। মাদ্রাসা অধিদপ্তরের ডিজি প্রতিনিধি ও সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মাহফুজা ইয়াছমিন ও নিয়োগ বোর্ডের সদস্য সহ ম্যানিজিং কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। একই দিন পরীক্ষা শেষে ডিজি প্রতিনিধি মাহফুজা ইয়াছমিন মেধা ভিত্তিক যথারীতি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করেন। এই ঘোষনায় মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সুলতান মাহমুদ রুবেল সন্তুষ্ট হতে পারেননি।
মাদ্রাসা সুপার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মাদ্রাসা অধিদপ্তরের ডিজির প্রতিনিধি তিন পদে তিন প্রার্থীকে উত্তীর্ণ ঘোষণা করেছেন। এতে সভাপতি সন্তুষ্ট না হয়ে জোরপূর্বক অন্যায়ভাবে শিক্ষকদের হাজিরা খাতা ১৩ সেপ্টেম্বরে নিজ দখলে নিয়ে পরের দিন তা ফেরত দেন।
এতে আমার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক- কর্মচারীরা হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে পারেনি। উল্টো তিনি আমাকে শো-কজ করেছেন এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ সহ প্রাণ নাশের হুমকি দিয়েছেন।
এ বিষয়ে কথা হলে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সুলতান মাহমুদ রুবেল শিক্ষক হাজিরা খাতা নিজের দখলে নেয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, নিয়োগ পরীক্ষার দিনে কোনো প্রকার ফলাফল প্রকাশ করা হয়নি। সুপার আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগটি তুলেছেন তা সত্য নয়। নিয়োগের ব্যাপারে সুপার আমাকে কোনোকিছু জানাননি। নিয়োগের ব্যাপারে তিনি নিজের ইচ্ছেমতো কাজ করেছেন। এতে সমন্বয়ের চেষ্টা করা হলে তিনি আমার আহ্বানে সাড়া না দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে কারন দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়। ওই নিয়োগে আমার পছন্দের কোনো প্রার্থী ছিল না এবং নিয়োগ ব্যাপারে আমি কারো সাথে আর্থিক লেনদেন করিনি।
এ বিষয়ে বগুড়া জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হযরত আলী গণমাধ্যমকে জানান, সভাপতির মনোনীত প্রার্থী উত্তীর্ণ না হওয়ায় সুপার ও সভাপতির দ্বন্দ্বের কারণে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া অসমাপ্ত আছে।
মাদ্রাসা অধিদপ্তরের ডিজি প্রতিনিধি ও সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মাহফুজা ইয়াছমিন জানান, সুন্দর ও সুষ্ঠু ভাবে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন হলেও কোনো উত্তীর্ণ প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়নি। সভাপতি আমাকে বলেছে এখনও রেজুলেশন করা হয়নি। সুপার ও সভাপতিকে সমন্বয় করে রেজুলেশন করে নিয়ে দপ্তরে আসতে বলা হয়েছে।
সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, এ বিষয়ে মাদ্রাসা সুপারের একটি অভিযোগপত্র পেয়েছি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
