মিঠুন মিয়া

ডেস্ক রিপোর্ট :একটি রাষ্ট্রের আইন, শাসন এবং বিচার বিভাগের পাশাপাশি চতুর্থ স্তম্ভ গণমাধ্যম। একটি দেশ, জাতি এবং সমাজের আশা-আকাঙ্খা ও অভিপ্রায় ব্যক্ত হয়ে থাকে গণমাধ্যমে। জাতি গঠণের অন্যতম হাতিয়ার গণমাধ্যমের ভূমিকা বর্ণানাতীত। সমাজের আর দশটা প্রতিষ্ঠানের চেয়ে গণমাধ্যমের দায়-দায়িত্ব অনেক বেশি। কেননা গণমাধ্যমেই প্রতিফলিত হয় পুরো সমাজের সার্বিক চিত্র। ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের দানা গড়ে উঠেছিল সংবাদপত্রের মাধ্যমেই। আর আমাদের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনের তাৎপর্যপূর্ণ অবদান এবং অগ্রণী ভূমিকায় নিয়োজিত ছিল গণমাধ্যম। সাংবাদিকরা জীবন বাজি রেখে কলম ধরেছেন।স্বাধীনতার মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে গণমাধ্যম কর্মীরা মুক্তিকামী মানুষকে অন্যায় অত্যাচার নির্যাতন ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে শিখিয়েছিলেন। সৃজনশীল লেখার মাধ্যমে স্বাধীনতাকামী মানুষের বুকে সাহস ও অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিলেন। দেশের যেকোনো বিপদকালীন আমাদের নজর থাকে গণমাধ্যমের দিকে। জনগণকে জানানোই গণমাধ্যমের কাজ। সাংবাদিকরাও চেষ্টা করেন তাঁদের সাধ্য অনুযায়ী লেখনীর মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন অনিয়ম-অসঙ্গতি ও দুঃখী মানুষের জীবনচিত্র তুলে ধরতে। এ কাজের জন্য সাংবাদিকদের প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করতে হয় প্রতিকূল পরিবেশের সঙ্গে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে জীবননাশের হুমকিও আসে। এ পেশার মানুষদের কাছে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের আশা-প্রত্যাশার শেষ নেই। কিন্তু সাংবাদিকদের জীবনযাত্রা কতটা অসহায় আর দৈন্যে ভরা তা কি আমরা জানি ? গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা একটি রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব। একজন সাংবাদিকের ন্যায্য প্রাপ্য গণমাধ্যমের স্বাধীনতারই অংশ।

নে বাংলাদেশে গণমাধ্যমের সংখ্যা বাড়ছে। নতুন নতুন টিভি চ্যানেল, এফএম রেডিও, সংবাদপত্র, অনলাইন মিডিয়া বাজারে আসছে। এটা নিসন্দেহে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য কল্যাণকর। কারণ গণমাধ্যম যত বাড়ছে তথ্য প্রবাহ তত অবাধ হবে। বর্তমানে গণমাধ্যমে নিয়োজিত রয়েছেন অসংখ্য কর্মী। ঢাকা শহরেরও প্রায় হাজার হাজার মানুষের জীবিকার আশ্রয় গণমাধ্যম। সেই গণমাধ্যম কর্মীরা প্রতিনিয়ত গণমানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু যে মানুষগুলো দিনরাত গণমানুষের তথ্য ক্ষুধা নিবারণে নিয়োজিত, আমরা কি জানি তাদের দুঃখ, দুর্দশার কথা। তাদের শ্রমের মূল্য কিংবা স্বীকৃতির কথা। সাংবাদিকরা সমাজের নানা শ্রেণি ও পেশার মানুষের দুঃখ দুর্দশা ভোগান্তি দুর্ভোগ তথা নানা অসঙ্গিকতার চিত্র তুলে ধরেন। মে দিবস এলেই অন্যান্য শ্রেণির পেশার মানুষের নিয়ে লেখালেখি হয়। সাংবাদিকরা নিজেদের দুঃখ আড়ালে রেখে তুলে ধরেন অন্যদের দুঃখ দুর্দশা। কিন্তু সেই সাংবাদিকদের দুঃখকথা কে তুলে ধরবেন? তুলে ধরলেও, প্রকাশ করা মুশকিল। ইচ্ছা থাকলেও সাংবাদিকরা তা প্রকাশ করতে পারেন না। কারণ মালিকপক্ষের কাছে তারা জিম্মি। গণমাধ্যম কর্মীদের দুর্দশা বললেই মালিকপক্ষের আসল চরিত্র বের হয়ে আসবে।প্রকৃত সত্য এই যে, বাংলাদেশের গণমাধ্যমকর্মীদের বেশিরভাগই তাঁদের শ্রমের ন্যায্যমূল্য পান না। মালিকপক্ষ নানাভাবে সাংবাদিকদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। সাংবাদিকতা একটি সৃজনশীল পেশা। সমাজের অন্যান্য পেশার চেয়ে এই পেশায় নিয়োজিতদের পরিশ্রম, ত্যাগ ও তিতীক্ষা বেশি। নানা ভোগাক্তি এবং নিরাপত্তাহীন প্রতিনিয়ত তাড়া করে সাংবাদিকদের। কিন্তু এতো পরিশ্রমের পরও একজন সাংবাদিক তাঁর ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কেবল তাই নয়, সাংবাদিকরা কি সময় মতো বেতন পান? আমার জানা মতে, বাংলাদেশের এমনও গণমাধ্যম রয়েছে, যেখানে মাসের পর মাস বেতন হয় না। নিদারুণ কষ্টে দিনাতিপাত করছেন গণমাধ্যম কর্মীরা। অন্যান্য পেশার অনেক সুযোগ সুবিধা থাকলে সাংবাদিকরা তেমন কোনো সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারেন না। সাংবাদিকদের ঘাম-রক্তঝরা শ্রমকে পুঁজি করে লাভবান হচ্ছেন মালিকপক্ষ। প্রসার ঘটছে বহুজাতিক ব্যবসা-বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানের। মালিকপক্ষ প্রতিনিয়ত সাংবাদিকদের বঞ্ছিত করেই যাচ্ছে।

সবচেয়ে দুঃখজনক যে, একজন সাংবাদিক এই সব অসঙ্গতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদও করতে পারেন না। কারণ প্রতিবাদ করলেই তাঁকে চাকরিচ্যূত করা হয়। একজন সাংবাদিক সমাজের মানুষকে শোষণ, বঞ্ছনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী করে তুললেও, তিনি নিজের অধিকার আদায়ে প্রতিবাদী হয়ে উঠতে পারেন না। কারণ মালিকপক্ষের ভয়। প্রতিবাদী হলেই যেকোনো সময় তার চাকরি চলে যাবে। এমনও গণমাধ্যম রয়েছে, যেখানে বেতন হয় পাঁচ মাস, ছয় মাস পর। বাংলাদেশের গণমাধ্যমের সার্বিক দিক বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, বেশির ভাগ গণমাধ্যমের মালিক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান। এই করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ব্যবসায়িক স্বার্থসিদ্ধির জন্য গণমাধ্যম ব্যবহার করছে। অন্যান্য পণ্যের ব্যবসার মতো গণমাধ্যমও একটি পণ্যের ব্যবসায়িক দিকটি বেশি প্রাধ্যান্য পায়। ফলে শ্রমিককে বঞ্ছিত করে, সস্তায় তাদের শ্রম ক্রয় করে কতটা লাভ করা যায়, সে নীতিতে বিশ্বাসী মালিকপক্ষ।সাংবাদিকদের অধিকারের জন্য একটি স্বতন্ত্র আইনও নেই। শ্রম আইনের মাধ্যমে তাদের বেতন-ভাতার বিষয়টি নির্ধারিত হয়ে থাকে। সরকার বিভিন্ন সময় সাংবাদিকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো প্রনয়ণ করে। কিন্তু সেই বেতন কাঠামো মালিকপক্ষ কতটা মানছে ভাবনার বিষয়। বেশিরভাগ গণমাধ্যম বেতন কাঠামো কার্যকর করলেই তা নামমাত্র। একটি প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেককে বেতন কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসা হয়েছে- এমন নজির খুব দুষ্কর। অর্থাৎ বেতন কাঠামোর যতসামান্য কার্যকর করা হচ্ছে। বেতন কাঠামোতে নানা সুযোগ সুবিধার কথা উল্লেখ থাকলেও, সেগুলো দেয়া হচ্ছে না। ২০১৩ সালে অষ্টম ওয়েজবোর্ড ঘোষিত বেতন-ভাতার হার চলমান রয়েছে। আর সেটিও সকল প্রতিষ্ঠানে বাস্তবায়ন করা হয়নি। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিকরা বেতন কাঠামো কার্যকরের নামে সাংবাদিকদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করেন। আর এ অধিকার আদায়ের জন্য কেউ চেষ্টাও করেননি।

বর্তমানে নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নে প্রচেষ্টা চলছে। ওয়েজ বোর্ডে উৎসব ভাতা, আয়কর (ইনকাম ট্যাক্স), ভবিষ্যৎ তহবিল (প্রভিডেন্ট ফান্ড), বদলি ভাতা (ট্রান্সফার এ্যালাউন্স), আনুতোষিক (গ্রাচ্যুইটি), কেমিক্যাল পয়জনিং এ্যালাউন্স, যাতায়াত ভাতা (কনভেয়ানস এ্যালাউন্স), চিকিৎসা সুবিধা (মেডিক্যাল ফ্যাসিলিটিজ), আউটফিট ভাতা, বাড়ী ভাড়া ভাতা, গোষ্ঠী বীমা (গ্রুপ ইনসিওরেন্স), ওভারটাইম ভাতাসহ নানা সুযোগ সুবিধা উল্লেখ থাকলে তার কতটা বাস্তবায়ন হয়েছে, বলা কঠিন।সবচেয়ে নিদারুণ কষ্টে দিনাতিপাত করেন মফস্বল সাংবাদিকরা। বাংলাদেশের সাংবাদিকতার সূচনা মফস্বল সাংবাদিকতার মাধ্যমে। আমাদের এই অঞ্চলের প্রথম সংবাদপত্র বের হয়েছিল রংপুর থেকে। ‘রঙ্গপুর বার্তা’ নামক পত্রিকায় স্থান পেত মফস্বলের বিষয়গুলো। কিন্তু আজও আমাদের মফস্বল সাংবাদিকতা অবহেলিত। অথচ সেই মফস্বলে সংবাদ ব্যতীত সংবাদপত্রের পাতা ভরে না। জেলা ও থানা পর্যায়ের সাংবাদিকরা প্রথমদিকে শখের বশে এ শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। যারা ভালোবেসে ফেলেন তারা নেশায় আসক্ত হয়ে যান। নেশার মোহে জীবনের অন্য পেশার বয়স ও সুযোগ থেকে দূরে সরে যান। সেখান থেকে আর ফিরে আসার পথ থাকে না। যখন পেশা হিসেবে নেয়া হয় তখন একজন মফস্বল সাংবাদিক হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করেন কতটা যন্ত্রণা এ পেশায়। এ পেশার লোকদের সমাজে কদর আছে, প্রশাসন সমীহ করে। কিন্তু নিজ ঘরে গেলেই শুরু হয় বুকের ভেতর ব্যথা।

ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়। সমাজের আট-দশটি পরিবারের মতো একজন মফস্বল সাংবাদিকের সংসার চালাতে যে পয়সার প্রয়োজন তা তিনি পাচ্ছেন না। মাসিক সামান্য কিছু ভাতা দেয়া হয়। অনেক প্রতিষ্ঠানের সমস্যার সমাধান হয়েছে। তারা আবার সেটাও দিতে পারে না। অনেক প্রতিষ্ঠান কেবল একটি কার্ড ধরিয়ে দিয়েই খালাস। কিন্তু মফস্বল সাংবাদিকরা নির্যাতিত মানুষের পাশে দাঁড়াতেও কার্পণ্য করেননি। কিন্তু তাদের ব্যক্তিজীবন কতটা সমৃদ্ধ হয়েছে! মফস্বল সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা নানা ধরনের দুনীর্তি এবং অসৎ উপায়ে টাকা উপার্জন করেন। তাই যদি হয় তবে এর নেপথ্যে দায়ী গণমাধ্যম। কারণ গণমাধ্যম মালিকরা তাদের মূল্যায়ন করছে না। বর্তমানে তরুণ প্রজন্ম গণমাধ্যমে বেশি জড়িত হচ্ছে। একাডেমিক পাঠ চুকিয়ে তারা সাংবাদিকতা পেশা হিসেবে নিচ্ছেন। কিন্তু তারা কি তাদের শ্রমের সঠিক দাম পাচ্ছেন। তারুণ্যে শ্রমকে সস্তায় কিনে নিচ্ছে মালিকপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা একজন তরুণ যখন সাংবাদিকতায় জড়িয়ে পড়েন, তখন তার মনে বিরাজ করে অনেক স্বপ্ন। তিনি তার সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে জীবন গড়তে চান। কিন্তু যখন তাকে ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করা হয়, তখন তার মাঝে বিদ্যমান সেই সৃজনশীলতা আর কাজ করে না। একজন নবীন প্রতিবেদকের বেতন অত্যন্ত কম। যা অনার্স মাস্টার্স পাস করা একজন শিক্ষার্থীর জন্য যথেষ্ট নয়। ঢাকা শহরে অবস্থান করার মতো বেতনও তারা পান না। আর পরিবারের প্রতি দায়দায়িত্ব তো দূরের কথা। মালিকপক্ষ নিয়োগের সময় এক কথা বলে, কিন্তু করে অন্যটা। তিন মাস পর বেতন বাড়ানোর কথা বলা হলেও তিন বছরেও বেতন বাড়ে না।

ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ থেকে বলতে পারি, আমার পরিচিত যে সমস্ত তরুণ এখন গণমাধ্যমে কাজ করছে, তারা হতাশ না হয়ে পারেন না। কারণ তারা তাদের শ্রমের সঠিক দাম পাচ্ছে না। তারা আজ আশ্বস্ত হতে পারছেন না। গণমাধ্যম তরুণদের এক সময় যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়, কিন্তু বয়স ফুরিয়ে গেলে তাদের আর তেমন গুরুত্ব থাকে না। আর গণমাধ্যমের চাকরি অনিশ্চিয়তার চাকরি। আজ আছে কাল নেই। গণমাধ্যমর চাকরি পেতে যেমন সময় লাগে না, তেমনি চাকরি চলে যেতেও সময় লাগে না। কাজেই অনিশ্চিয়তা মাথায় নিয়েই একজন সাংবাদিককে কাজ করতে হয়। গণমাধ্যম কাজ করতে হলে মালিকপক্ষে মন জুগিয়ে চলতে হয়। আমার দেখা অনেক সাংবাদিক দেখেছি, কোনো কারণ ছাড়াই যাদের চাকরিচ্যূত করা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী একজন সাংবাদিককে চাকরিচ্যূত করলে তাকে কয়েক মাসের বেতনসহ অন্যান্য ভাতা দেওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু চাকরিচ্যূত হয়ে বছরের পর বছর পার হয়ে গেলেও সাংবাদিকদের ন্যায্য প্রাপ্ত দেওয়া হয় না। অনেক সাংবাদিক রয়েছেন, যারা জীবিকা নির্বাহের জন্য অত্যন্ত স্বল্প বেতনে সাংবাদিকতা করছেন। কারণ তাদের আর কোনো বিকল্প নেই। তারা না পারছে চাকরি ছাড়তে, না পাচ্ছে ন্যায্য বেতন। এমন গণমাধ্যম রয়েছে যেখানে পাঁচ থেকে আট বছর অতিক্রম হলেও তাদেরকে ওয়েজ বোর্ডে নিয়ে আসা হয়নি। নানা অজুহাত দেখিয়ে তাদের শ্রমের মূল্য দেয়া হচ্ছে না। সাংবাদিকরা যে পরিশ্রম করেন, সে তুলনায় তাদের প্রাপ্ত কম। উন্নত দেশে সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা অনেক বেশি। শেষ বয়সে এসে একজন সাংবাদিকের যখন চাকরি চলে যায়, তখন তার আর কি করার থাকে। চাকরি শেষে তাকে দেওয়া হয় না অবসর ভাতা

বর্তমানে সাংবাদিক সংগঠনগুলো ন্যায্য অধিকার আদায়ে আন্দোলন, সংগ্রাম করলেও কোনো কাজ হচ্ছে না। মালিকপক্ষ নানাভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। আবার দেখা যায়, সাংবাদিকদের মধ্যে কিছু সাংবাদিক রয়েছেন, যাদের সাথে মালিকপক্ষে ভালো সম্পর্ক রয়েছে। ফলে মালিকপক্ষের শ্রম শোষণ আরও সহজ হয়। কিছু সাংবাদিক নিজে সুযোগ-সুবিধা বেশি নিয়ে অন্যদের বঞ্চিত করছেন। কাজেই নানা অসঙ্গতি রয়েই গেছে। আমাদের দেশে কেবল গণমাধ্যমের সংখ্যাই বেড়েছে, বাড়েনি সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা। গণমাধ্যম মালিকরা কেবল খাতা কলমে দেখানোর চেষ্টা করেন , তারা বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন করেছেন। যাতে করে তারা সরকারি সুযোগ সুবিধা ভোগ করে থাকে। কাজেই সাংবাদিকদের ন্যায্য বেতন নিশ্চিত করতে সরকারকে আরও তদারকি কার্যক্রম বাড়াতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের আর্থিক অনুদান, চিকিৎসাসেবার জন্য নানা সাহায্য সহযোগিতা প্রদান করা হয়। একটি পরিপূর্ণ পেশা হিসেবে সাংবাদিকতা এগিয়ে নিতে সকল পক্ষের সহযোগিতা একান্ত কাম্য। তবে হাতে গোনা দুই একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যারা সাংবাদিকদের বেতন অন্তত সঠিক সময়ে দেয়। ন্যায্য পাওনা দিচ্ছে এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ঠিক দুই একটিই। গণমাধ্যমের নিকট থেকে আমাদের আশা-আকাঙ্খা তখনই পূর্ণ হবে, যখন মালিকপক্ষ, গণমাধ্যম কর্মীদের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় থাকবে। প্রত্যেকে যার যার প্রাপ্য পাবে, বিকশিত এবং সমৃদ্ধ হবে আমাদের গণমাধ্যম ব্যবস্থা- এমনটিই কাম্য।

 

লেখক: প্রভাষক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ , জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।


একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে