মোঃ বনি, ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি: বিদায় নিচ্ছে শীত কাল। প্রকৃতির আপন খেয়ালে বসন্তের আগমন ঘটতে আর মাত্র ক-দিন। ফাগুনের আগুন রাঙারুপে সাজবে প্রকৃতি। ফুলে-ফুলে সুবাসিত হবে চারিদিক। মৌমাছিরা মধু আহরণে ব্যস্ত হয়ে পড়বে। রসালো ফল আম। কাঁচা অথবা পাকা তা কার না পছন্দ। আম তো পরে’ আগে আমের মুকুল। শীতকাল প্রায় শেষের দিকে। এরই মধ্যে বসন্তের আবাস। গাছের ডালে হিমেল হাওয়ায় দুলছে আমের মুকুল। পল্লীকবি জসীম উদ্দিনের ‘মামার বাড়ি’ কবিতার পংক্তিগুলো বাস্তবে রূপ নিতে বাকি রয়েছে মাত্র কয়েক মাস। তবে সুখের ঘ্রাণ বইতে শুরু করেছে।

ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলায় বিভিন্ন গ্রাম ও উপজেলাতে দেখা মিলে গাছে গাছে ফুটে আছে আমের মুকুল। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে এই মুকুলের পাগল করা ঘ্রাণ। বাতাসে মিশে সৃষ্টি করছে মৌ মৌ গন্ধ। যে গন্ধ মানুষের মনকে বিমোহিত করে তুলে। মধু সংগ্রহ করতে মৌমাছিরা ভিড় করছে আম গাছের ডালে ডালে। পাশাপাশি মধুমাসের আগমনী বার্তা শোনাচ্ছে আমের এই মুকুলগুলো। হরেক রকমের আমের জন্য উত্তরাঞ্চল প্রসিদ্ধ হলেও এখন মেহেরপুরের গা ঘেসে কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ অঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় বাহারি আমের চাষ করা হয়।

এদিকে হরিণাকুন্ডু উপজেলার বিভিন্ন চাষ যেমন ধান,পান,গম,ও মাছ চাষের পুকুরের পাশজুড়ে দেখা যায় রকমারি আমের গাছ। আর গাছের ডালে ডালে ফুটেছে আমের মুকুল। তাছাড়া, বিভিন্ন গ্রামগুলো ঘুড়ে দেখা যায় কিছুদিন আগে বৃষ্টির পানি পেয়ে গাছে গাছে আমের মুকুল বেড় হতে শুরু করেছে। তবে আমের ফলন নির্ভর করছে আবহাওয়ার ওপর। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর আমের বাম্পার ফলন হবে বলে মনে করছেন আম প্রিয়রা। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মুকুলে ভরে গেছে বাগানসহ ব্যক্তি উদ্যোগে লাগানো আম গাছগুলো।

এদিকে হরিণাকুন্ডু উপজেলার পারবর্তীপুরের আবুল কালাম আজাদ বাগান মালিক জানান, প্রায় এক সপ্তাহ আগে থেকে তাদের নার্সারী ও বাগানে লাগানো আম গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে এবং কালাপাড়িয়ার আম চাষি মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেন আগের বছরের চেয়ে এবার মুকুলের সংখ্যা বেশি আবহাওয়া যদি ভালো থাকে তাহলে আমাদের আম চাষে বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করি। বেশিরভাগ গাছ মুকুলে ছেয়ে গেছে। কিছু গাছে গাছে এখন মুকুল বের হচ্ছে।

হরিণাকুন্ডু উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের কৃষক ও বাগান মালিক বদর উদ্দিন উদ্দিন মোল্লা জানান, ‘প্রায় দুই সপ্তাহ আগে থেকে তাদের আম গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। কিছু গাছ মুকুলে ছেয়ে গেছে। বেশিরভাগ গাছে মুকুল বের হচ্ছে।

পারবর্তীপুরের শামসুল হক বলেন, মুকুল আসার পর থেকেই তারা গাছের পরিচর্যা করেছেন। মুকুলের বিভিন্ন রোগ বালাইয়ের আক্রমন থেকে রক্ষা করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ গ্রহণকরছেন।

হরিণাকুন্ডু উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাফিজ হাসান জানান, গেলো দুই সপ্তাহ থেকে গাছে আমের মুকুল আসতে শুরু করেছে। মূলত আবহাওয়া কারণে দেশীয় জাতের গাছে এই আগাম মুকুল আসা শুরু করেছে। এ সময় বিভিন্ন পোকামাকড় মুকুলের ক্ষতি করে। এ পোকা দমনে বালইনাশক স্প্রে করলে তা আক্রমণ করতে পারে না। যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে তাহলে খুব ভালো ফলন পাওয়া যাবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে