shekh-hasina-pm

ডেস্ক রিপোর্টঃ বিচার বিভাগ, নির্বাহী বিভাগ ও আইনসভা প্রতিটি ক্ষেত্রেই নারীর বলিষ্ঠ অবস্থান নিশ্চিত করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শিক্ষার পাশাপাশি সামগ্রিকভাবে নারী উন্নয়নে তার সরকার ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে।
তিনি বলেন, “দেশের প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেত্রী, স্পিকার, মন্ত্রী, রাষ্ট্রদূত, বিচারপতি, সচিব, সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী এবং পুলিশ ও আনসার বাহিনীর বিভিন্ন পদে নারীরা সাফল্যের সাথে কাজ করছেন। নারীদের এই উন্নতি বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন ও আদর্শ বাস্তবায়নেরই সফল ধারাবাহিকতা।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেগম রোকেয়া দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে আজ এক বাণীতে এ কথা বলেন। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে প্রতিবছরের মতো এবারও আগামীকাল বেগম রোকেয়া দিবস-২০১৬ উদ্যাপন এবং বেগম রোকেয়া পদক-২০১৬ প্রদান করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী মহীয়সী নারী বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন-এর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং পদকপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে পদকপ্রাপ্ত গুণিজনেরা বেগম রোকেয়ার আদর্শে উজ্জ্বীবিত হয়ে দেশের অনগ্রসর নারীদের উন্নয়নে আরো সম্পৃক্ত হবেন বলে প্রত্যাশা ব্যাক্ত করেন। একই সাথে নিজেদেরকে উন্নয়নের স্রোতধারায় সম্পৃক্তকরণের মাধ্যমে এদেশের নারীসমাজ আরো এগিয়ে যাবেন বলে আশা করেন।।
নারী উন্নয়নে তার সরকারের ব্যাপক সাফল্য তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন , পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন ২০১০ প্রণয়ন করা হয়েছে। নারীর দক্ষতা বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান, উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠা, শ্রমবাজারে ব্যাপক অংশগ্রহণ ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত করতে এবং নারীর প্রতি সামাজিক অপরাধ রোধে ব্যাপক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সরকার নারী শিক্ষার প্রসারে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েদের শিক্ষা অবৈতনিক করেছে। উপবৃত্তি, বিনামূল্যে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ এবং অবৈতনিক শিক্ষা প্রদানের ফলে নারী শিক্ষার হার বৃদ্ধি পেয়েছে। ছাত্রীদের স্কুলে ভর্তির হার শতভাগ নিশ্চিত হয়েছে।
এসকল পদক্ষেপের ফলে নারীর শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, নারী নির্যাতন ও বাল্যবিবাহ রোধ, নারী ও শিশু পাচার প্রতিরোধে ব্যাপক অগ্রগতি সাধিত হয়েছে উল্লেখ করে বাণীতে তিনি বলেন, ‘নারী উন্নয়নের স্বীকৃতি হিসেবে আমরা জাতিসংঘের ‘প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’ এবং গ্লোবাল পার্টনারশিপ ফোরাম প্রদত্ত ‘এজেন্ট অভ্ চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করেছি। নারী ও কন্যাশিশুর সাক্ষরতা ও শিক্ষা প্রসারে সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ ইউনেস্কো আমাকে ‘শান্তিবৃক্ষ’ স্মারক পুরস্কারে ভূষিত করেছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের সংবিধানে নারীর সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা করেন। নারী সমাজের উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৯৭ সালে সর্বপ্রথম জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি ঘোষণা করে। ২০০৯ সালে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণের পর এটিকে আরো যুগোপযোগী করে আমরা নারী উন্নয়ন নীতি ২০১১ প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করছি।
বেগম রোকেয়াকে নারী শিক্ষা ও নারী জাগরণের অগ্রদূত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঊনবিংশ শতাব্দীর কুসংস্কারাচ্ছন্ন রক্ষণশীল সমাজের শৃঙ্খল ভেঙ্গে বেগম রোকেয়া নারী জাতির মধ্যে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে কান্ডারির ভূমিকা পালন করেছেন।
শেখ হাসিনা বলেন , বেগম রোকেয়া তাঁর লেখনি ও কাজের মাধ্যমে নারীর প্রতি সমাজের অন্যায় ও বৈষম্যমূলক আচরণের মূলে আঘাত হানেন। তিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপনসহ বিভিন্ন সমাজ উন্নয়নমূলক কাজের মধ্য দিয়ে পশ্চাৎপদ নারী সমাজকে আলোর পথ দেখিয়েছেন উল্লেখ করে বেগম রোকেয়ার আদর্শ, সাহস ও কর্মময় জীবন নারী সমাজের এক অন্তহীন প্রেরণার উৎস বলে অভিহিত করেন।
প্রধানমন্ত্রী বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচি এবং বেগম রোকেয়া পদক-২০১৬ প্রদান অনুষ্ঠানের সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

বি/এস/এস/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে