ডেস্ক স্পোর্টসঃ বাংলাদেশ সফররত জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল গতকাল তাদের পর্যবেক্ষণে রোহিঙ্গা সংকট মিয়ানমারে উদ্ভূত হয়েছে উল্লেখ করে এ সমস্যার দ্রুত সমাধানে আন্তরিকভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

প্রতিনিধিদল স্বীকার করেছে যে, রোহিঙ্গা ইস্যু মিয়ানমারেরই সংকট এবং এর সমাধান সেখানেই নিহিত।মিয়ানমারের ওপর ঠিক এ মুহূর্তে অবরোধ আরোপের কোন সম্ভাবনা নাকচ করে দিলেও তারা এ সংকটটি বাংলাদেশের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া হয়েছে স্বীকার করে এর সুরাহা করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

প্রতিনিধিদলের নেতা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ (ইউএনএসসি)’র বর্তমান প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো আদোলফো মেজা কাদরা ভেলাসকেজ এখানে আশ্রয় শিবিরে রোহিঙ্গাদের সাথে কথা বলার পর সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের টিমের সদস্যরা এ নিয়ে একান্তভাবে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছেন এবং তারা এ সংকট নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন।’
জাতিসংঘে পেরুর রাষ্ট্রদূত গুস্তাভো বলেন, ‘আমি মনে করি, রোহিঙ্গা সংকটের তীব্রতা এবং কয়েকটি পরিবারের খুবই মর্মান্তিক পরিস্থিতি আমরা স্বচক্ষে দেখেছি।’
ব্রিফিংয়ের আগে প্রতিনিধিদল রোহিঙ্গাদের দুঃখ-দুর্দশা সরেজমিনে দেখার জন্য তমব্রু সীমান্তে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও কুতুপালং ক্যাম্প পরিদর্শন করেন।
গত বছরের আগস্ট মাসে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়ার পর এই প্রথম জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধিদল রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করলো।

ইউএনএসসি’র প্রতিনিধিদলের সদস্যদের একজন জাতিসংঘে যুক্তরাজ্যের স্থায়ী প্রতিনিধি কারেন পিয়ার্স বলেন, ইউএসএসসি এ সংকট নিরসনে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে সহায়তা করতে একান্তভাবে কাজ করবে।
তিনি বলেন, ‘তাদের বিতাড়ন, তাদের সাথে আচরণ এবং তাদের যে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে হয়েছে তাতেই সমস্যা নিহিত।’
প্রতিনিধিদলের সদস্যরা এ সংকটে কোন পক্ষ না হয়ে রোহিঙ্গাদের সামলানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা করেন।

তারা বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের নিরাপদে মিয়ানমার ফিরে যাওয়ার ওপর জোর দিয়ে বলেন, এ সংকট নিরসনে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করতে তারা অবিলম্বে ঢাকা থেকে মিয়ানমার যাবে।
প্রতিনিধিদলের সঙ্গে যোগ দেয়া বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম শাহরিয়ার আলম এমপি বলেন, বাংলাদেশ আশা করে যে, ইউএনএসসি বিশেষ করে এ সফরের পর সংকট সমাধানে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে।
তিনি বলেন, ‘তারা (ইউএনএসসি প্রতিনিধিদল) রোহিঙ্গাদের দুর্দশার বিবরণ শুনে ব্যথিত হয়েছেন এবং উপলব্ধি করেছেন যে, রোহিঙ্গা সংকটের মূল কারণ মিয়ানমারে নিহিত।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইউএনএসসি প্রতিনিধিদল এ সংকট সমাধানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর সরকারের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন।
১৫-সদস্যবিশিষ্ট জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ প্রতিনিধিদলে নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য- যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও চীনের প্রতিনিধিরা রয়েছেন।
অপর সদস্যরা হলেন- বলিভিয়া, গিনি, ইথিওপিয়া, কাজাখস্তান, কুয়েত, নেদারল্যান্ড, পেরু, পোল্যান্ড ও সুইডেনের স্থায়ী প্রতিনিধি এবং আইভরি কোস্টের ডেপুটি স্থায়ী প্রতিনিধি।

প্রতিনিধিদল আগামী কাল সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পর রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করতে দু’দিনের সফরে মিয়ানমারের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন।

B/S/S/N.

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে