সিরাজগঞ্জ থেকে, মারুফ সরকারঃ দীর্ঘ ১৩বছর পর আর মাএ ২ দিন পর আগামী ১৫এপ্রিল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সিরাজগঞ্জ জেলা যুবলীগের সম্মেলন। এ সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দিপনার সৃষ্টি হয়েছে। সাজ সাজ রব পড়ে গেছে জেলার সর্বত্রই। সম্মেলনে কে হচ্ছেন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তা নিয়ে চলছে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা। পোস্টার, ব্যানার ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে জেলা সদরসহ ১১টি সাংগঠনিক থানা।

এবারের সম্মেলন দীর্ঘ দিন পর হওয়ার কারণে উৎসব আমেজের মাত্রা অন্য যেকোন সময়ের চেয়ে অনেক বেশী বলে মনে করছেন সম্মেলন সংশিলষ্টরা। এবারের কাউন্সিলে মোট ৫জন প্রাথী ২টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন- বর্তমান জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. আব্দুল হাকিম, পৌর যুবলীগের আহ্বায়ক এমদাদুল হক ও আরিফুল ইসলাম শিপন। সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন- সিরাজগঞ্জ সরকারী কলেজের সাবেক ভিপি রাশেদ ইউসুফ জুয়েল ও একরামুল হক রিজভী।

তবে, প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে মূলতঃ দু’টি প্যানেলের মধ্যে। একটি প্যানেলে রয়েছেন- সভাপতি প্রার্থী এ্যাড. আব্দুল হাকিম ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী রাশেদ ইউসুফ জুয়েল। অপর প্যানেলে রয়েছেন- এমদাদুল হক ও একরামুল হক রিজভী।এসব প্রার্থীরা জেলার ১১টি সাংগঠনিক থানা এবং সিরাজগঞ্জ পৌর শহরের ১৫টি ওয়ার্ডে চষে বেড়াচ্ছেন। নাওয়া খাওয়া ভুলে ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাউন্সিলরদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। এসময় তারা সংগঠন ও নেতাকর্মীদের জন্য অতীতে কে কতটুকু করেছেন, ভবিষ্যতে কতটুকু করবেন, সংগঠন কার কাছে কতটুকু নিরাপদ তা তুলে ধরছেন কাউন্সিলরদের সামনে। সন্ধ্যা হলেই একাধিক প্রার্থীর পক্ষে হচ্ছে পায়ে হেটে বা মোটর সাইকেল শোডাউন। এদিকে, সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামীগের রাজনীতি দু’ধারায় বিভক্ত হওয়ায় এবারের কাউন্সিলকে নিয়ে সাধারণ মানুষ রয়েছেন উৎকন্ঠায়। একটি ধারার দাবি কাউন্সিলরদের ভোটের মাধ্যমে হবে নেতা নির্বাচন।

অন্য পক্ষ চাইছেন সমঝোতার মাধ্যমে পদ ভাগাভাগি। তবে, যেভাবেই নেতা নির্বাচিত হোকনা কেন তারা চাইছেন না কোন দ্বন্দ্ব সংঘাত বা রক্তক্ষয়ি সংঘর্ষ।তবে, সাংগঠনিক থানাগুলোর অধিকাংশ কাউন্সিলররা চাইছেন ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন করতে। কারণ হিসেবে তারা বলছেন- ভোটের মাধ্যমেই যোগ্য নেতাকে নির্বাচিত করা সম্ভব। আর যদি ভোট না হয়ে সিলেকশনে নেতা নির্বাচন করা হয় সেটা হবে সংগঠনের জন্য আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত। এতে সংগঠন মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সম্মেলন বিষয়ে কথা হয় পৌর যুবলীগের আহ্বায়ক ও জেলা যুবলীগের সভাপতি পদ প্রার্থী এমদাদুল হকের সাথে। তিনি বলেন, পৌর যুবলীগের দায়িত্ব পেয়ে সংগঠনকে সুসংগঠিত করেছি। দলীয় কর্মসূচি ও আন্দোলন সংগ্রামে সব সময় সক্রিয় ভূমিকা রেখেছি। নেতাকর্মীদের সুখ-দুঃখে পাশে থেকেছি।

কাউন্সিলে নেতা নির্বাচন বিষয়ে বলেন- সিরাজগঞ্জ আওয়ামীলীগের সহযোগী সংগঠনগুলোর সাম্প্রতিক কাউন্সিলগুলোতে সমঝোতার মাধ্যমেই নেতা নির্বাচন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় যুবলীগ ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ যেভাবে সিদ্ধান্ত নিবেন সেভাবেই নেতা নির্বাচন হবে। তবে, যেভাবেই নিতা নির্বাচন করা হোকনা কেন তিনিই সভাপতি নির্বাচিত হবেন বলে আশাবাদ প্রকাশ করেন।জেলা যুবলীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. আব্দুল হাকিম বলেন, আজকের যুবলীগ অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে শক্ত ভীতের ওপর দাঁড়িয়ে। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সংগঠন ও সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সুখ-দুঃখে পাশে থেকেছি। রাজনৈতিক হামলা-মামলার শিকার হয়েছি। তবুও সংগঠন বা কোন নেতা-কর্মীর সাথে বেঈমানী করিনি। সকল কাউন্সিলররা চান ভোটের মাধ্যমে তাদের নেতা নির্বাচিত করবেন এবং সে নির্বাচনে ব্যাপক ভোটের ব্যবধানে তারা আমাকেই সভাপতি নির্বাচন করবেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে