কাওছার হামিদ, কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী)॥ নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার মাগুড়া খামাত পাড়া গ্রামের ৫৬ বছর বৃদ্ধ নারী নাম ফেরজা বেগম স্বামী মৃত মহব্বত আলী ১৯৭৯ সালে ১৪ বছর বয়সে বিয়ে হয় পার্শ্ববর্তী এলাকা বেতগাড়ী ইউনিয়নের পশ্চিম খাপড়ীখাল গ্রামে।

প্রথম একটি কন্যা সন্তান হওয়ার পর স্বামী মারা যান। পরে বাবার বাড়ীতে চলে আসেন এবং কিছুদিন পর মজিবর রহমান নামের এক ব্যক্তিকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। অল্প সময় সংসার করার পর সেখানেও সংসার ভেঙ্গে যায়।

পুণরায় বাবার বাড়ীতে চলে আসেন। প্রথম সংসারে কন্যা সন্তানটিকে বিয়ে দিয়ে দেন। তার পর থেকে একা হয়ে যান ফেরজা বেগম। জীবন জীবিকার তাগিদে এক সময় মানুষের বাড়ীতে কাজের বুয়া হিসেবে কাজ নেন।

কিন্ত কিছুদিন কাজ করার পর বয়সের ভারে শরীরে দেখা দেয় ডায়াবেটিকস রোগ ঠিকমতো কাজ কর্ম করতে না পারায় বাড়ী ওয়ালা তাকে বের করে দেয়। তার পর থেকে আর কোথাও যাওয়া হয়নি এই ৫৬ বছরের বৃদ্ধ ফেরজা বেগমকে। ভূমিহীন ফেরেজা বেগম অন্যের জমিতে ছাপরা ঘর তুলে কোন রকম বসবাস শুরু করেন এবং জীবিকার তাগিদে ভিক্ষাবৃত্তি পেশাকে বেচে নেন।

এভাবে ভিক্ষাবৃত্তি করে চলে তার সংসার, সরকারি সুবিধা বলতে বিধবা ভাতা ছাড়া আর কিছুই নেই। ছাপরা ঘরে বেশ কিছুদিন থাকার পর ঘরটি ঝড়ে নষ্ট হয়ে যায়, অর্থের অভাবে আর ঘর উঠানো সম্ভব হয়নি। সেই থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মানুষের বাড়ীতে গোয়াল ঘর কিংবা রান্না ঘরে অথবা বাড়ান্দায় রাত্রী যাপন করতে হয় তাকে।

সরেজমিনে গিয়ে বিধবা ফেরজা বেগমের সাথে কথা হয় দাবানল প্রতিবেদকের, বেড়িয়ে আসে তার জীনের পেছনে ফেলে আসা নানা গল্প। গল্পের ফাঁকে এক সময় আবেগপ্লুত হয়ে বলেন শেখ হাসিনা সবাকে ঘর তুলি দেয়ছে, যার জমি নাই তাকো ঘর দিবার ধরছে, মোক একনা ঘর দেন আর কতদিন মানুষের বাড়ীত থাকোং।

কপালে চিন্তার ভাঁজ অসহায় অবস্থায় দিন কাটছে ভূমিহীন ও গৃহহীন ফেরজা বেগমের। কবে একটা নিজের ঘর হবে সেই চিন্তায় কপালে হাত দিয়ে চিন্তায় ভেঙ্গে পড়েন ৫৬ বছরের বৃদ্ধ ফেরজা বেগম।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রি শেখ হাসিনা এক সংবাদ মাধ্যমে বলেছেন এ দেশে কেউ গৃহহীন থাকবে না প্রয়োজনে খুঁজে বের করে জমি কিনে বাড়ী করে দেওয়া হবে। তাই প্রধানমন্ত্রির ঘোষণাকে বাস্তবতায় রুপ দিতে ফেরজা বেগমের একটাই দাবী মোক একনা ঘর দেন আর কতদিন মানষের বাড়িত থাকোং।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে