ডেস্ক রিপোর্টঃ ২০০৪ সালে সিলেটে তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর উপর গ্রেনেড হামলার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আব্দুল হান্নানসহ তিনজনের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। এদের দুজনের গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে, অপর একজনের সিলেট কারাগারে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়।

রাত ১০টা নাগাদ ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয় বলে কারা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আব্দুল হান্নান ও তার সহযোগী শরীফ শাহেদুল বিপুলের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয় গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে।

এই ঘটনায় আরেক অভিযুক্ত দেলোয়ার হোসেন রিপনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে সিলেট কারাগারে। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে বুধবার সকালে তাদের স্বজনরা তাদের সঙ্গে দেখা করেন।

২০০৪ সালে সিলেটে হযরত শাহজালালের মাজারে গ্রেনেড হামলার পর ঘটনাস্থলের দৃশ্য  ২০০৪ সালে সিলেটে হযরত শাহজালালের মাজারে গ্রেনেড হামলার পর ঘটনাস্থলের দৃশ্য

গাজীপুর ও সিলেট থেকে সংবাদদাতারা জানাচ্ছেন, সন্ধ্যা থেকেই উভয় কারাগারের নিরাপত্তা অনেক বাড়ানো হয়েছে। কারাগারের বাইরে পুলিশ ও র‍্যাব সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন। গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রবেশ করেছেন।

রাত ৮টা নাগাদ কাশিমপুর কারাগারে দুইটি অ্যাম্বুলেন্স প্রবেশ করতে দেখা গেছে বলে সংবাদদাতা বলছেন। ২০০৪ সালে বাংলাদেশে নিযুক্ত সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর উপর সিলেটে হযরত শাহজালালের মাজারে গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশের দুই কর্মকর্তাসহ তিনজন নিহত হয় আর আনোয়ার চৌধুরীসহ অর্ধশত মানুষ আহত হয়।

এ মামলার রায়ে ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিচারিক আদালত পাঁচ আসামির মধ্যে মুফতি হান্নান, বিপুল ও রিপনকে মৃত্যুদণ্ড এবং মহিবুল্লাহ ও আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মুফতি হান্নান ও শরীফ শাহেদুল বিপুল গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে এবং দেলোয়ার হোসেন রিপন সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন।

বিচারিক আদালতের রায় বহাল রাখে হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ। এ বছরের মার্চের ১৯ তারিখে ঐ মামলায় মুফতি আব্দুল হান্নানসহ তিনজনকে আপিল বিভাগের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করে দেয় সর্বোচ্চ আদালত।

২২শে মার্চ তাকে কারাগারে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখার রায় পড়ে শোনানো হয়। এরপর ২৭শে মার্চ প্রাণভিক্ষা চেয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করেন মুফতি হান্নান। কিন্তু সেই আবেদন নাকচ করে দেন রাষ্ট্রপতি।

মুফতি হান্নানের বিরুদ্ধে যশোরে উদীচির অনুষ্ঠানে বোমা হামলা, গোপালগঞ্জে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা এবং রমনা বটমূলে বোমা হামলাসহ মোট ১৭টি মামলা রয়েছে।

এর মধ্যে রমনা বটমূলে বোমা হামলার মামলাতেও বিচারিক আদালত তাকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছে।

 

বি/বি/সি/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে