কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) থেকে, আ,ফ,ম মহিউদ্দিন শেখঃ  নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই বাছাই ৩য় দিন অতিবাহিত হয়েছে। শনিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সম্মেলন কক্ষে আনুষ্ঠানিক ভাবে যাচাই বাছাই শুরু করা হয় ১১ ফেব্রুয়ারী সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ২৮জন মুক্তিযোদ্ধার সাক্ষাতকার গ্রহন করা হয়।

১২ ও ১৩ ফেব্রুয়ারী প্রতিদিন ২৮জন করে মুক্তিযোদ্ধার সাক্ষাতকার গ্রহন করেন জামুকার প্রতিনিধি,কিশোরগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটির সভাপতি ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা কেফায়েত হোসেন। সদস্য সচিব হিসাবে দায়িত্বপালন করেন উপজেলা কমিশনার (ভুমি) উত্তম কুমার রায়,জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রতিনিধি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন নীলফামারী জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সহকারী কমান্ডার এ্যাডভোকেট মোজাম্মেল হক প্রমূখ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন লাল মুক্তিবার্তার সদস্য ও ভারতীয় তালিকার মুক্তিযোদ্ধারা।

মুক্তিযোদ্ধা কেফায়েত হোসেন বলেন,সমস্ত কিছুর উর্দ্ধে থেকে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় যাচাই বাছাই কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে। তবে দেশ স্বাধীন হওয়ার ৪৬ বছরে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করেন মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জব্বার রহমান। তিনি ১৯৫১ সালের ১০ মার্চ কিশোরগঞ্জ নিতাই ইউনিয়নের পানিয়ালপুকুর গ্রামের পিতা মৃত জাবেদ আলী শাহ ও মাতা শফিজন নেছার ঘরে জন্ম গ্রহন করেন। মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জব্বার তার সহমুক্তিযোদ্ধাদের পিছু পিছু স্বাক্ষীর জন্য ঘুরে বেড়ালেও টাকা ছাড়া কেউ স্বাক্ষী দিতে নারাজ। অথচ আব্দুল জব্বার মুক্তিযোদ্ধাকালীন সময়ে তার শরীরে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছিল। তার এক সহযোদ্ধা এসমাইল হোসেন তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে ক্যাম্পে নিয়ে যান।

১৯৭২ সালে তিনি মোছাঃ পারুল বেগমকে বিয়ে করে সংসার জীবন শুরু করেন। তার সংসারে ৩ছেলে ও ৬মেয়ে জন্ম গ্রহন করেন। আজ তার সন্তানেরা  স্নাতক (সম্মান) পাশ করলেও কেউ সরকারী কোন পেশার সাথে সংযুক্ত হতে পারেনি। প্রত্যেক সন্তানকে তিনি কষ্ট করে হলেও লেখাপড়া করান এবং তারমধ্যে ৩ছেলে ও ২মেয়ের বিয়ে দেন। বর্তমানে তার ছোট মেয়ে জাকিয়া তাজরিন লোপা চলতি এস এস সি পরীক্ষার্থী। মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জব্বার পেশায় একজন পল্লী চিকিৎসক। তারপরেও তিনি শত কষ্টের মাঝেও ছেলে মেয়েদেরকে শিক্ষার আলো থেকে দূরে রাখেনি। বর্তমানে তিনি পরিবারের সকল সদস্যদেরকে নিয়ে অনেক কষ্টে জীবন অতিবাহিত করছেন। জীবনের দ্বারপ্রান্তে এসে তিনি দেশনেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আকুল আবেদন জানিয়ে বলেন,আমি দেশকে স্বাধীন করতে গিয়ে পায়ে গুলি খেয়েছি,দেশের জন্য রক্ত দিয়েছি। কিন্তু আজ আমি অসহায়,আমার পাশে দাঁড়াবার মত কেউ নেই। তবুও আমার কপালে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম আসেনি। অবশেষে তার (আব্দুল জব্বার) পক্ষে স্বাক্ষ্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এসমাইল হোসেন। তিনি এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগীতা কামনা করেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে