শ্রী মিশুক চন্দ্র ভুইয়া: পটুয়াখালী জেলা বাউফল উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নে স্বামীর লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে আত্মসাৎ করে দুই শিশু বাচ্চা কে ফেলে পাষণ্ড প্রতারক স্ত্রী মোসাঃ রাবেয়া বেগম লাপাত্তা হয়ে গেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের কালাইয়া গ্রামের কমলার দীঘির দক্ষিণ পাড়ে। এতে দূর্ভোগ ভোগান্তি সহ দিশেহারা হয়ে স্বামী মোঃ মুজিবুর রহমান সরদার ফেলে রাখা অবুঝ দুই শিশু বাচ্চাকে নিয়ে দিনরাত যাপন করছেন। পাষণ্ড প্রতারক স্ত্রী মোসাঃ রাবেয়া বেগম (২৫), কালাইয়া বাজারের আব্দুর রাজ্জাক প্যাদার মেয়ে।

ভুক্তভোগী স্বামী মোঃ মুজিবুর রহমান সরদার লিখিত অভিযোগ দিয়ে বলেন, আজ থেকে ৬/৭ বছর পূর্বে আমি ও স্ত্রী রাবেয়া দুজন দুজনকে পছন্দ করে পারিবারিক ভাবে বিবাহ হয়। আমাদের ঘরে এক মেয়ে ও এক ছেলে শিশু সন্তান রয়েছে। আমাদের দুজনার সংসার জীবন ভালোই চলছে এমন সময় আমার শ্বশুর প্যাদা রোডে বিল্ডিং করবেন তাই তার মেয়েকে দিয়ে প্রথমে ২ লক্ষ ৮২ হাজার টাকা, দ্বিতীয়বার উদ্দীপন এনজিওর মাধ্যমে লোন করে ৪ লক্ষ টাকা উঠিয়ে দেই যাহার নমিনী স্ত্রী রাবেয়া নিজে। আবার পুনরায় তৃতীয় বার আমার একাউন্ট থেকে কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে ২ লক্ষ টাকা উঠিয়ে কাজ করার জন্য ধার বাবদ দেয়া হয়। আরও হিসাব নেই অনেক টাকা মেরেছে। টাকা গুলো ধার নেয়ার ১৫/২০ দিন পর থেকে স্ত্রী রাবেয়া আমার সাথে খারাপ আচরণ শুরু করে। এতে আমাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এদিকে আমার শ্বশুর শাশুড়ী এসে ওইদিনই অবুঝ দুই শিশু বাচ্চা কে রেখে তার মেয়েকে নিয়ে চলে যায়। বাচ্চারা তার মায়ের জন্য কান্নাকাটি করলে স্ত্রীকে আনার শ্বশুর বাড়ি গেলে শ্বশুর, শাশুড়ী, বড় বোন ফাতেমা, হাজেরা, আয়শা ও বোন জামাই ওহিদুল মিলে সংঘবদ্ধ হয়ে আমাকে অপমান অপদস্ত সহ হুমকি ধামকি দিয়ে ঘরবাড়ি থেকে বের করে দেয়। আমি নিরুপায় হয়ে চলে আসি।

এদিকে ৩/৪ দিন পর একতরফা একটি নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে এভিডেভিড করে স্ত্রী আমাকে একটি তালাক নামা পাঠায়। সাথে সাথে তা চেয়ারম্যান কে জানালে সে তাদের আসার জন্য বলেন। কিন্তু চেয়ারম্যানের কাছে না গিয়ে তারা পালিয়ে ঢাকা চলে যায়। পরে চেয়ারম্যানের পরামর্শে মামলা করি। সেই খবর তারা একত্র হয়ে ঢাকা থেকে এসে আমার বাড়ি ঘরে ঢুকে মা, বাবা ও ছোট বোনের ওপর হামলা চালিয়ে লুট করে চলে যায়। সেজন্যও মামলা করি। কিন্তু এখন আমি আমার দুই শিশু বাচ্চা কে নিয়ে দিনরাত নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তারা এখন প্রকাশ্যে ও গোপনে বিভিন্ন হুমকি ধামকি সহ বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করে আসছে ও প্রাননাশের ভয়ভীতি দেখিয়ে চলছে। আমি আমার টাকা গুলো ও স্ত্রীকে ফেরত সহ তাদের বিচার দাবি করছি।

ভুক্তভোগী স্বামী মোঃ মুজিবুর রহমান সরদার আরও বলেন, আমি যখন বিয়ে করেছি তখন জানতাম না আমার স্ত্রী ও তার পরিবারও চরিত্রহীন প্রতারক। এর আগে আমার স্ত্রী জনৈক এক ডাক্তার কে বিয়ে করে এবং আরও একজনকে জিম্মি করে লক্ষ লক্ষ টাকা চরিত্র ও প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছে। আমার শাশুড়ী একজন চরিত্রহীন। আমার স্ত্রীর বোনেরাও চরিত্রহীন প্রতারক। তারা একাধিক স্বামীর সংসার নষ্ট করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে চলে এসেছে। তাদের এখন এটা একটা ব্যবসায় পরিনত হয়েছে যে একাধিক স্বামী বানাবে এবং তাদেরকে জিম্মি করে বা তালাক দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে নিবে। আমাকে ধ্বংস করে দিয়েছে তারা। আমি বিচার চাই।

সরেজমিনে ভুক্তভোগী স্বামী মুজিবুর রহমান সরদারের বাড়ি ও এলাকার বাসিন্দারা জানান, তারা স্বামী স্ত্রী খুব ভালো ভাবেই সংসার চালাচ্ছে তাদের দুই সন্তান নিয়ে। কিন্তু হঠাৎ শুনি মুজিবুরের স্ত্রী বাচ্চাদের ফেলে চলে গেছে। পরে জানতে পারি স্ত্রী তার বাপের ঘরবাড়ি বানানোর জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। যখনই মুজিবুর টাকা চাইতে গেছে তখনই স্ত্রী তার স্বামী সন্তান রেখে পালিয়ে চলে গেছে। এখন মুজিবুর দিশেহারা হয়ে দুই শিশু বাচ্চাদের নিয়ে রাতদিন যাপন করছে। পরে আরও জানতে পারি ওই স্ত্রী ও তার পরিবার চরিত্রহীন প্রতারক। তবে কষ্ট হয় কেমনে পারে মা তার কোলের সন্তান ফালাইয়া রেখে চলে যায়।

এদিকে সরেজমিনে শ্বশুর বাড়ির আশপাশের একাধিক বাসিন্দারা নাম না বলা শর্তে জানান, ওইসব মেয়েরা ভালো না, তারা একাধিক স্বামীর সংসার নষ্ট করে চলে এসেছে। তাদের মা আরও খারাপ। তবে মুজিবুরের স্ত্রী তার বাপের ঘরবাড়ি করার জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে এনেছে শুনেছি। বিশেষ করে ওর মা ভালো না, কুফরি করে মেয়েকে নিয়ে এসেছে।

এদিকে আরও জানা যায়, মুজিবুরের টাকা পয়সা নেওয়া খাওয়া শেষ তাই চলে এসেছে। তবে মুজিবুরের টাকাই কাল হয়েছে। সব মেয়েগুলোর একাধিক বিয়ে সাদি হয়েছে কেউ ঠিকমতো স্বামীর সংসার করতে পারেনি। তাদের কাছে টাকা পয়সা বড়।

অভিযোগের ব্যাপারে মুজিবুরের শাশুড়ী ও তার মেয়েরা বলেন, এটা আমাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে এব্যাপারে জানতে স্ত্রী রাবেয়া বেগমের কাছে প্রতিবেদক ফোন দিলে তিনি রিসিভ করে বলেন, আমি ঢাকাতে থাকি। আমি তাকে তালাক দিয়েছি। আমরা কোনও টাকা পয়সা নেইনি বলে ফোন কেটে দেন।

এবিষয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান এসএম ফয়সল আহমেদ মনির হোসেন মোল্লা বলেন, অভিযোগ পেয়ে মুজিবুর সরদারের স্ত্রী সহ তার মা-বাবা, ভাই বোনকে খবর দেই। খবর পেয়ে মা বোন আসলেও ওই স্ত্রী আসেননি। তবে তারা টাকা নিয়েছেন ধার বাবদ সেটা স্বীকার করেছে। পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে