ডেস্ক রিপোর্ট : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের চেয়ারম্যান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বাংলা ভাষায় উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
তিনি গতকাল নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের বার্ষিক অধিবেশনে সভাপতির বক্তৃতা করছিলেন।
অধিবেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ, প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো: আখতারুজ্জামান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো: কামাল উদ্দীনসহ সিনেট সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক আরো বলেন, বিশ্বের বহু জাতি মাতৃভাষায় উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করছেন। নোবেল পুরস্কারে তারাই ভূষিত হচ্ছেন।
তিনি বলেন, কিন্তু আমাদের শিক্ষক সমাজ মাতৃভাষায় জ্ঞান পরিবেশনে কুণ্ঠাবোধ করেন। অনেকে পরিভাষার ধুয়া তুলে দায় এড়িয়ে যান। অথচ বিজ্ঞানের শিক্ষকরাই নিজ নিজ বিষয়ে উপযুক্ত পরিভাষা তৈরি করতে পারেন।
এ প্রসঙ্গে উপাচার্য বিজ্ঞানী সত্যেন বোসের উক্তি উদ্ধৃত করে বলেন, ‘বাংলাভাষার মাধ্যমে যারা বিজ্ঞান চর্চায় ভয় পান, তারা হয় বিজ্ঞান বোঝেন না অথবা বাংলাভাষা জানেন না।’
তিনি প্রাথমিক পর্যায় থেকে বিজ্ঞান শিক্ষার আধুনিকায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কোন অবস্থাতেই বাণিজ্য কেন্দ্র নয়। দক্ষ মানব সম্পদ তৈরিই এর মূল লক্ষ্য। যে কোন সমস্যার সমাধানে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা অর্জন করতে হবে।
উচ্চশিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়ে আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অদক্ষ পেশাজীবী বের হলে শুধু সমাজ নয়, জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে আসবে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে নতুন প্রজন্ম।
উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে অধিক সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির প্রলোভন থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়ে তিনি সর্বোচ্চ সিজিপিএ অর্জনকেই একমাত্র আরাধ্য ভাবা রীতিমত কুসংস্কার বলে মন্তব্য করেন।
১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এবং ১৯৭২ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে প্রদত্ত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ উদ্ধৃত করে উপাচার্য বলেন, জাতির জনকের বক্তব্য থেকে শিক্ষা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাসমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে বিশেষভাবে সাহায্য-সহযোগিতা প্রদান করায় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। শিক্ষাবান্ধব শেখ হাসিনা প্রশাসনের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় একবিংশ শতাব্দির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যাবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
উপাচার্যের বক্তৃতার পর ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরের ৬৬৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকার রাজস্ব ব্যয় সংবলিত প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করা হয়। প্রস্তাবিত বাজেটে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন থেকে প্রাপ্য ৬১০ কোটি ১০ লাখ টাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় থেকে ৪২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা পাওয়া যাবে। ফলে এবছর বাজেটে ১১ কোটি ৭২ লাখ টাকা ঘাটতি হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। অধিবেশনে ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরের ৬৬ কোটি ১৯ লাখ টাকার সংশোধিত বাজেটও উপস্থাপন করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো: কামাল উদ্দীন সংশোধিত ও প্রস্তাবিত বাজেটের সার-সংক্ষেপ উপস্থাপন করেন। পরে সিনেট সদস্যগণ বক্তব্য রাখেন।

বি/এস/এস/এন


একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে