ডেস্ক রিপোর্ট: সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশে ভয়ঙ্কর ঝড়-জলোচ্ছাসের আশংকা করছেন মার্কিন গবেষক জয়েস জে চেন।বর্তমানে বাংলাদেশে প্রতি দশকে একবার করে  ভয়ঙ্কর ঝড়-জলোচ্ছ্বাস আঘাত হানছে। ২১০০ সালের মধ্যে সেটা প্রতি বছর ৩ থেকে ১৫ বার নিয়মিত আঘাত হানতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা করছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের দ্য ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটির কৃষি, পরিবেশ এবং উন্নয়ন অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী ওই অধ্যাপকের উদ্ধৃত করে সোমবার এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। প্রতিবেদনে এ আশঙ্কার কথা বলা হয়।

জয়েস জে চেন জলবায়ু পরিবর্তন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের মধ্যেকার জটিল সম্পর্কের ওপর গবেষণা করছেন। বাংলাদেশ বিষয়ে তার মতামত নিয়ে ওই প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন উইলিয়াম পার্ক।

জয়েস জে চেন বলেছেন, চলতি শতাব্দীর শেষে, বাংলাদেশের উপকূল বরাবর সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা দেড় মিটার বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই সময়ে উপকূলে অস্থিরতা চরম আকার ধারণ করবে।

সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশের প্রথাগত জীবনযাপন অসম্ভব হয়ে পড়েছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বন্যা-উপদ্রুত দেশটির মানুষ নতুন নতুন বিষয় প্রবর্তন, পরিবর্তন যোগ্যতা, প্রাণোচ্ছ্বাসের সমন্বয়ে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে টিকে রয়েছে। তবে পরিবেশের চরম অবস্থা তাদের যেদিকে ঠেলে দিচ্ছে তাতে যে কারও সহিষ্ণুতার মাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারে।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ক্রমাগত বাড়তে থাকায় গ্রামের বাংলাদেশিদের ওপর তা পর্বত সমান চাপ সৃষ্টি করেছে বলে মন্তব্য করেন জে চেন। তিনি বলেন, আগে লোকজন মৌসুমি বন্যার সবচেয়ে খারাপ সময়ে বাড়ি ঘর ছেড়ে অন্য কোথাও সরে যেতে পারত। তবে এখন নিয়মিত জলাবদ্ধতা ফসল উৎপাদনকে অসম্ভব করে তুলছে। নোনা পানিতে ফসল টিকছে না। বিকল্প কাজের ব্যবস্থাও সীমিত।

জে চেন বলেন, চলতি শতাব্দীর শেষে, বাংলাদেশের উপকূল বরাবর সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা ১ দশমিক ৫ মিটার বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। ২১০০ সালের মধ্যে প্রতি বছর তিন থেকে ১৫ বার নিয়মিত সর্বনাশা ঝড় ও অস্বাভাবিক উচ্চতার জোয়ারের শিকার হতে পারে বাংলাদেশ। এ অবস্থায় গ্রামের মানুষেরা তাদের পথ বেছে নেয়ার কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে। তাদের হয় জীবনযাপনে পরিবর্তন আনতে হবে অথবা কাজ ও ঘর খুঁজে নিতে হবে অন্য কোথাও।

চেন সতর্ক করেছেন, এখনও অনেক মানুষ সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। অস্বাভাবিক উচ্চতার জোয়ারের কারণে ওই শহরগুলো ভবিষ্যতে বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠতে পারে। এর ফলে লাখ লাখ মানুষকে নতুন আশ্রয়ের সন্ধান করতে হতে পারে।

D/S/N

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে