ডেস্ক রিপোর্ট : প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের সদস্যরা এটি দেশকে আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পথ নির্দেশ বলে উল্লেখ করেছেন।তারা বলেন, বর্তমান সরকারের ৯ বছরে বাজেটের আকার বিগত বিএনপি সরকার আমলের তুলনায় দশ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সময়ে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আকার বেড়েছে সাড়ে ৩ গুণেরও বেশি। পাশাপাশি ধারাবাহিকভাবে সরকার সাফল্যের সাথে বাজেট বাস্তবায়ন করেছে। প্রস্তাবিত এ বাজেটও সফলভাবে বাস্তবায়িত হবে।স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে আজ সকাল ১০টা ৫৯মিনিটে অধিবেশনের শুরুতে মন্ত্রীদের জন্য প্রশ্ন-জিজ্ঞাসা-উত্তর টেবিলে উপস্থাপন শেষে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনা শুরু হয়।

গত ১ জুন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেন।
২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেট আলোচনার ৮ম দিনে আজ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, পরিবেশ ও বন উপমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, সরকারি দলের মুহাম্মদ ফারুক খান, ফরহাদ হোসেন, ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন, খন্দকার আবদুল বাতেন, কামাল আহমেদ মজুমদার, আলী আজম, কামরুল আশরাফ খান, সৈয়দা সায়রা মহসিন, বেগম আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী, সাবিনা আক্তার তুহিন, বেগম হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, বেগম উম্মে রাজিয়া কাজল, জাসদের বেগম লুৎফা তাহের, জুয়েল আরেং, জাতীয় পার্টির এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, মোহাম্মদ নোমান ও সৈয়দ আবু হোসেন আলোচনায় অংশ নেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক তাঁত শিল্পের ওপর ভ্যাটের হার কম ধরা, ব্যাংক আমানতের ওপর আবগারী শুল্ক কমানো, হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে অর্থপাচার বন্ধ করার ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানান।

বিগত বাজেটের তুলনায় স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়ানো, জীবন রক্ষাকারী ওষুধ ও স্বাস্থ্য যন্ত্রপাতির উপর নতুন ভ্যাট আরোপ না করায় তিনি অর্থমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।তিনি বলেন, মেয়াদোত্তীর্ণ ও ভেজাল ওষুধ বিক্রি রোধে মডেল ফার্মেসী চালু, ঢাকা মেডিকেল কলেজকে ৩ হাজার বেডে উন্নীত করাসহ এই হাসপাতালের আধুনিকায়নে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ২৮টি ভেজাল ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।পরিবেশ ও বন উপমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে যাচ্ছে। তাঁর সুযোগ্য নেতৃত্বে দেশের রেমিটেন্স, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়েছে এবং দেশের দারিদ্র্যতার হার কমেছে। দেশের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি খাতে অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে।

তিনি বলেন, অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে দেশের পরিবেশ পরিস্থিতি অনেক সন্তোষজনক। বন্য প্রাণী সংরক্ষণ, মরুময়তা রোধসহ পরিবেশ রক্ষায় দেশের মোট ভূমির ২০ ভাগ বনভূমি করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বাসযোগ্য করতে ঢাকার চারপাশের নদীগুলোকে দুষণমুক্ত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কারখানাগুলোতে ইটিপি স্থাপনে বাধ্য করা হচ্ছে।আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের অন্য সদস্যরা ব্যাংক হিসাবে ওপর আবগারি শুল্কারোপ প্রস্তাব প্রত্যাহার এবং ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব পুনর্বিবেচনার আহবান জানান।
জাতীয় পার্টির এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, মানুষের উপর অপ্রত্যাশিত ভ্যাটের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। এতে দেশে বেকার সমস্যা প্রকট হওয়া এবং বিদেশে টাকা পাচার হওয়ার আশঙ্কার রয়েছে। তিনি অপ্রত্যাশিত এসব ভ্যাট ও কর প্রত্যাহারের দাবি জানান।

তিনি ১ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যাংক আমানতকারীদের আবগারী শুল্কের আওতা বহির্ভূত রাখা, কৃষি যন্ত্রপাতি থেকে সকল ধরনের ভ্যাট প্রত্যাহারের আহবান জানান।সংবাদপত্র শিল্পে উচ্চ হারে করারোপের প্রস্তাব প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বিরোধীদলের সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বলেন, এই কর প্রস্তাব প্রত্যাহার করা না হলে সংবাদপত্র শিল্পে অস্থিরতা দেখা দেবে। সংবাদপত্র শিল্প অবাধে কর্মী ছাটাইয়ের কবলে পড়বে।তিনি ব্যাংক আমানতের ওপর আবগারী শুল্ক প্রত্যাহার, ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রস্তাব পুনর্বিবেচনা করাসহ তামাকের ওপর অধিক হারে করারোপের সুপারিশ করেন।

বি/এস/এস/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে