ডেস্ক রিপোর্টঃ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ২০১৯-২০ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট দেশের আর্থ সামাজিক বিকাশ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে শক্তিশালী করবে।
তিনি বলেন, এ বাজেট মৌলিক সামাজিক দর্শনের একটি বাজেট, জনগণের কল্যাণের বাজেট। এই বাজেট টেকসই অর্থনীতিকে আরো মজবুত করবে।
ওবায়দুল কাদের আজ সকালে রাজধানীর ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে বাজেট পরবর্তী দলের এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপুমনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ এমপি, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল এমপি, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট মৃনালকান্তি দাস এমপি, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর ও কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী সংসদের সদস্য মারুফা আক্তার পপি প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ২০১৯-’২০ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবসম্মত, ভারসাম্যমূলক, গণকল্যাণমুখী, যুগোপযোগী ও দলের নির্বাচনী ইস্তেহারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বাজেট।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নত দেশ গঠনের সব উদ্যোগ ও লক্ষ্য অর্জনে কার্যকর বাজেট এটি। ২০২০ সাল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী, এ বাজেট বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা ও নির্বাচনী ইস্তেহার বাস্তবায়ন এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বাজেট।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এ বছরের বাজেটও দলের ঘোষণাপত্র ও নির্বাচনী ইস্তেহারের প্রতিফলন ঘটেছে। এ বাজেটের বিস্তৃতি ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ।
তিনি বলেন, এ বাজেটে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন, ২১০০ সাল ডেল্টা প্লানের বিস্তৃতি রয়েছে। সময়োপযোগী এ সকল পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
কাদের বলেন, এ বাজেটে বেসরকারী খাতকে পেনশন সুবিধার আওতায় আনার কর্মপরিকল্পনা নেয়া হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে এবং প্রবাসী শ্রমিকদের আয়ের ওপর প্রণোদনা দেয়ার জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এ বাজেট শুধু অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির বাজেট নয়, এটি একটি মানবিক বাজেট। প্রতিবন্ধীদের ভাতা দেয়ার জন্য বরাদ্ধ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ বাজেট টেকসই অর্থনীতিকে মজবুত করার বাজেট।
কাদের বলেন, দেশে ডিজিটাল প্রযুক্তির নিরব বিপ্লব সাধিত হয়েছে। তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ করে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে প্রস্তাবিত এই বাজেটে।
তিনি বলেন, তারুণ্যের শক্তি দেশের সমৃদ্ধি। তরুণদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্ধ রাখা হয়েছে। শিক্ষিত যুবকদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বিশেষ বরাদ্ধ রাখা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, ‘আমার গ্রাম, আমার শহর’ দলের নির্বাচনী ইস্তেহারকে বাস্তবায়নের জন্য গ্রামে সকল নাগরিক সুবিধা বাড়ানের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্ধ রাখা হয়েছে।
সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার প্রস্তাবিত এ বাজেট বাস্তবায়নে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নয়ন হয়, দেশের সম্পদ জনকল্যাণে ব্যয় হয়। আর সেজন্যই দেশ উন্নয়নের সকল সূচকে কাঙ্খিত উন্নতি সাধন করতে সক্ষম হয়েছে।
কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসাধারণ নেতৃত্বে দেশ ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হবে। তাঁর নেতৃত্বে আগামী প্রজন্মের জন্য আমরা একটি উন্নত দেশ গড়ে যেতে চাই।
বাজেট নিয়ে বিএনপির নেতাদের নেতিবাচক সমালোচনার জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা (বিএনপি) এ বছরের বাজেট ঘোষণার পরেও তাদের চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী মিথ্যাচার ও অপপ্রচার শুরু করেছে। তাদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বাজেটের বিস্তৃতি অনুধাবনের ক্ষমতা নেই।
তিনি বলেন, প্রস্তাবিত এই বাজেট এক বছরের জন্য দেয়া হয়েছে। পাঁচ বছরের জন্য দেয়া হয় নি। আর এক বছরের কর্মসূচী নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির কোন অবকাশ নেই।
কাদের বলেন, বর্তমান সরকার এ বাজেট নিয়ে ২০০৯ সাল থেকে টানা ১১টি বাজেট দিয়েছে। আর ১০ টি বাজেটের ফসল হিসেবে দেশের অর্থনীতি বর্তমানে শক্তিশালী ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত।
তিনি বলেন, বিএনপির নেতারা বিগত ১০ টি বাজেটের পরই বলেছিল, বাজেট বাস্তবায়িত হবে না। দেশের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়বে। তাদের এ ধরনের বক্তব্য বাস্তবে প্রতিফলিত হয় নি।
এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, এ বাজেট জনবান্ধব বাজেট, হতাশার কিছু নেই। এ বাজেট একটি অনন্য সাধারণ দলিল। এ বাজেট নেতিবাচক তাদের দৃষ্টিতে যারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরোধীতার জন্যই বিরোধীতা করে।
তিনি বলেন, যারা প্রস্তাবিত এ বাজেট নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেছেন, তাদের এ ধরনের মন্তব্য বিদ্বেষ প্রসূত মনোভাবেরই পরিচায়ক। গত দশ বছরই তারা বাজেট নিয়ে এ ধরনের মনোভাব প্রকাশ করেছেন। কিন্তু প্রতিটি বাজেট দেশকে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে গেছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, তিনি নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়লাভ করলেন, কিন্তু শপথ গ্রহন করলেন না, আসন শূণ্য ঘোষিত হওয়ার পর সে আসনের উপ-নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নও দান করলেন, তারপরও কিভাবে তিনি বর্তমান সরকারকে অনির্বাচিত সরকার বলেন তা কারো কাছেই বোধগম্য নয়।
বাসস