মোঃ আমজাদ হোসেন, জয়পুরহাট: জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে খরিপ ১মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ জমিতে ভুট্টার চাষাবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুল থাকায় ও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে অল্প খরচে অধিক ফলনে লাভের আশা করছেন কৃষকরা। একদিকে বাম্পার ফলন অন্যদিকে ভুট্টা চাষে প্রান্তিক কৃষকদের অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জন করার সম্ভাবনায় এ উপজেলায় ভুট্টা চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বাগজানা,ধরঞ্জী, আয়মারসুলপুর, বালিঘাটা, আটাপুর ও কুসুম্বা ইউনিয়সহ উপজেলা আরও প্রত্যন্ত অঞ্চলের মাঠ গুলো ভুট্টা চাষ করা হয়েছে যা চোখে পড়ার মত। মাঠগুলো সবুজ রঙের গাছে পরিপূর্ণ। খেতগুলোতে কীটনাশক,পানি দেয়া ও আগাছা পরিষ্কার করাসহ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন পরিচর্যার ব্যস্ত সময় পার করছেন ভুট্টাচাষীরা। ভুট্টা ক্ষেতের প্রতিটি গাছে তিন থেকে চারটি করে মোচা ধরেছে সেগুলো আর অল্প কিছু দিনের মধ্যে কর্তন করা হবে বলে জানা কৃষকরা।

স্থানীয় কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, ভূট্টা চাষের পর এখনো কোন বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পরিনি। বড় ধরনের কোন প্রকৃতিক দুর্যোগ দেখা না দিলে এবার ভূট্টার বাম্পার ফলনের আশা তাদের। তবে কৃষকরা আরো জানায়, গত বছরের তুলনায় এবার ভূট্টা চাষে ব্যায় বেশী হয়েছে প্রতি বিঘা ভুট্টা চাষ থেকে কাটামাড়া পর্যন্ত খরচ পরবে ১০-১৫ হাজার টাকার মত

বাজারে দাম ভাল থাকলে কিছুটা লাভের মুখ দেখবেন তারা। তবে শ্রমিক সংকটের কারণে চাষিরা ক্ষেত থেকে ভুট্টা ঘরে তুলতে অধিক খরচের কারনে রীতিমত দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় মোট ৩৫০ হেঃ জমিতে ভূট্টা চাষ হয়েছে। গত বছর চাষ হয়েছিল ৩৩০ হেক্টর জমিতে। গত বছরের তুলনায় এবার ২০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ বেশি হয়েছে।

উৎপাদন লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করেছেন ৩ হাজার ৫৭০ মেঃটন। তারা জানায়, মুরগির ও গরুর খাদ্য ফিড হিসেবে এটি ব্যাপক ব্যবহার হয়ে থাকে। এ কারণে বাজারে ভুট্টার চাহিদা থাকায় এবং কম খরচে অধিক লাভ হওয়াই ভুট্টা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে কৃষকরা। বাগজানা ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের ভুট্টাচাষী সুবাস চন্দ্র ও ধরঞ্জী গ্রামের লিটন হোসেন জানান, এক বিঘাতে খরচ হয় ১০-১১ হাজার টাকা। কিন্তু আলুর জমিতে ভুট্টা চাষে একটু খরচ কম হয়। কারণ হিসাবে তারা জানান, ঐ জমিতে আগে থেকেই সার দেওয়া থাকে, তাই ভুট্টার চাষের সময় কম সার প্রয়োগ করতে হয়।

শ্রীমন্তপুর গ্রামের ভ‚ট্টা চাষী হাবিবুর রহমান বলেন, প্রতি বিঘায় ৩০-৩৫ মণ ভুট্টার ফলন হয়।একই গ্রামের মো: মোজাম্মেল ও এনামুল হোক (ভুট্টু ) জানান গত বছর প্রতিমণ ভুট্টা ১হাজার ১২শ টাকা করে বিক্রি হয়েছিল। এবার এখনও বাজারে ভুট্টা আসেনি। আর অল্প কিছুদিনের মধ্যেই আগাম রোপন করা ভুট্টা কাটা ও মাড়াই করা শুরু হয়ে যাবে।

পাঁচবিবি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ লুৎফর রহমান বলেন “কোন রোগবালাই না থাকায় ও আবহাওয়া ভাল হওয়ায় ভুট্টার কাঙ্খিত ফলন পাবেন কৃষকরা। ভুট্টার চাষাবাদ ভাল হওয়াই এবার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে সাম্ভাবনা রয়েছে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে