orrange

ডেস্ক রিপোর্টঃ চা-চাষের পর এবার পঞ্চগড়ে কমলা চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বাসাবাড়ি ও স্বল্প পরিসরে ছোট ছোট বাগানে আশানুরূপ কমলার ফলন আসায় কৃষকরাও খুশি। স্থানীয়রা জানিয়েছে, এখানে উৎপাদিত কমলার স্বাদ পাশ্ববর্তী দেশ ভারতের দার্জিলিংয়ের কমলার মতো। স্থানীয় কৃষি বিভাগের কারিগরী সহায়তায় জেলায় কমলা চাষ বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে।
পঞ্চগড়ে দিনদিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে কমলার চাষ। বাজার চাহিদা ও লাভজনক হওয়ায় জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে অনেকে কমলার বাণিজ্যিক চাষ শুরু করেছেন। এসব বাগানে উৎপাদিত কমলার আকার, রং ও স্বাদ পাশ্ববর্তী দেশ ভারতের দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ি জেলার কমলার মতো।
স্থানীয় কৃষি বিভাগ জানায়, জেলার মাটিতে অম্লত্ব (পিএইচ) ও আবহাওয়া কমলা চাষের উপযোগী। এ লক্ষ্যে কৃষি মন্ত্রণালয় ২০০৭ সালে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে কমলা উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয়। কমলা আমদানি হ্রাস, আবাদ বৃদ্ধি, পুষ্টি চাহিদা মেটানো ও কৃষকদের বাড়তি আয়ের লক্ষ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ণে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়।
জেলার সদর উপজেলার, সাতমেরা, হাফিজাবাদ, হাড়িভাসা, চাকলাহাট ইউনিয়নের বেশ কয়েকজন কৃষক বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কমলার বাগান করে লাভবান হয়েছেন। কৃষকদের বাগানে কমলার ফলন ভাল হওয়ায় এসব এলাকায় অনেকে কমলা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে। সদর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, এবার ৭৫ হেক্টর জমিতে ৫০টি প্রদর্শনী প্লট ৪শ ২০টি বসত বাড়িতে কমলা চাষ করা হয়েছে।
পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাফিজাবাদা ইউনিয়নের বামনপাড়া গ্রামের কমলার বাগানের মালিক সেফালি বেগম জানান ৬ বিঘা জমিতে কমলার চাষ করি। কমলার চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছি। গত বছর ১ (এক ) লক্ষ টাকার কমলা বিক্রি করেছি। এবার ২ (দুই) লক্ষ টাকার কমলা বিক্রি করবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন।
একই এলাকার কমলার বাগান মালিক হাবিবুন নবী প্রধান বলেন, ২০০৯ সালে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে কমলার চারা নিয়েছি। ৩ বছর পর ফল পাই। পর পর তিন বার কমলা বিক্রি করি। এবার চতুর্থ বার কমলা বিক্রি করছি। কমলার চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছি। কমলার বাজার চাহিদা ভাল থাকায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ বাড়ছে। কমলা বিক্রি করতে কোন সমস্যা হয় না। কমলা বাড়ি থেকেই পাইকাররা নিয়ে যাচ্ছে।
কমলার বাগান মালিক মো. সিদ্দিক তিনি বলেন, দুই একর জমিতে কমলার চাষ করেছি। গতবার ১ লাখ টাকার কমলা বিক্রি করেছি। এবারোও বর্তমানে ৬০/৭০ হাজার টাকার কমলা বিক্রি করা হয়েছে। কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় আমরা কমলার বাগান করে লাভবান হয়েছি। দেশের বিভিন্ন জায়গায় থেকে লোকজন কমলার বাগান দেখতে আসে এবং কমলা কিনে নিয়ে যায়।
পঞ্চগড়ের কমলার বাগান থেকে আসা দর্শনার্থী আব্দুল জলিলও হাসি আকতার জানান, পঞ্চগড়ের বাগানের কমলা দার্জিলিংয়ের কমলার মতোই। স্বাদ, রং ও গন্ধে অন্যান্য কমলার চেয়ে কোন অংশে কম নয়। খেয়ে দেখলাম খুব স্বাদ।
পঞ্চগড় সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল মতিন বাসসকে জানান,পঞ্চগড় জেলার গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফসল কমলা। পঞ্চগড় সদর উপজেলায় ৫০টি প্রদর্শনী প্লটও ৪২০টি বসত বাড়িতে কমলা চাষ করা হয়েছে। যা গতবারের তুলনায় বেশি। পঞ্চগড়ে কমলার চাষ করে লাভবান হওয়ায় কৃষকরা কমলা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। কৃষি বিভাগ চাষিদের কমলার চাষের সকল প্রকার উপকরণসহ সহায়তা প্রদান করে আসছে।

বি/এস/এস/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে