করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন উৎপাদনের লক্ষ্যে দেশে ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (১৭ নভেম্বর) সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ার হোসেন খানের প্রশ্নের লিখিত উত্তরে তিনি এ তথ্য জানান।
এ অধিবেশনে স্পিকার ড. শিরীন শারমনি চৌধুরী সভাপতিত্ব করেন। বুধবারের প্রশ্ন উত্তর টেবিলে উত্থাপন হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মহামারি করোনা আবির্ভাবের পর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ভ্যাকসিন আবিষ্কার ও উৎপাদনের গুরুত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে। বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে ভ্যাকসিন নিয়ে অধিকতর গবেষণা ও উৎপাদনের প্রয়োজনীয়তা আরও বেশি অনুভূত হচ্ছে।
তিনি বলেন, মহামারি করোনা ভাইরাসসহ বিভিন্ন ভাইরাস প্রতিরোধে ভ্যাকসিন উৎপাদনের লক্ষ্যে দেশে একটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা এবং ভ্যাকসিন নীতিমালা প্রণয়নের পরিকল্পনা বর্তমান সরকারের রয়েছে। ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউট এবং ভ্যাকসিন নীতিমালা প্রণীত বেশ কিছু সুবিধা পাওয়া যাবে।
সরকারি দলের সংসদ সদস্য (এমপি) এ কে এম রহমতুল্লাহর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘ইউএন সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সলিউশন নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে ২০১৫-২০২০ সময়ে এসডিজি অর্জনে সর্বোচ্চ সাফল্যের জন্য আমাকে এসডিজি প্রোগ্রেস অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। এ সম্মাননা দেওয়ার পর করোনা মহামারির এই কঠিন সময়ে বাংলাদেশ ও বিশ্ব অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকার জন্য আমাকে ‘জুয়েল ইন দ্য ক্রাউন’ বলে অভিহিত করা হয়।
তিনি বলেন, করোনা মহামারিতে সৃষ্ট বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকোচন, ভ্যাকসিন বৈষম্য প্রভৃতি বিশ্বের অনেক দেশেরই উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করেছে। কিন্তু এ মহামারির মধ্যেও বাংলাদেশ যে অবিচলভাবে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে এগিয়ে যাচ্ছে- এ পুরস্কার তারই বিশ্ব স্বীকৃতি। এ পুরস্কার শত প্রতিকূলতার মধ্যেও দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে যেমন বিশ্ব দরবারে তুলে ধরেছে তেমনি দেশের সক্ষমতার ওপর বিশ্ববাসীর আস্থা দৃঢ়তর করেছে। দেশের জনগণই এ পুরস্কারের প্রকৃত অংশীদার। স্বাধীনতা অর্জন থেকে আজকের যত অর্জন, সবই হয়েছে দেশের মানুষের সমর্থন ও ভালোবাসার জন্য উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী এই পদক দেশের জনগণকে উৎসর্গ করেন।
বিরোধী দল জাতীয় পাটির সদস্য সৈয়দ আবু হোসেনের এক প্রশ্নে উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের নিজস্ব অর্থায়নে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ভায়াডাক্টসহ ৯ দশমিক ৮৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের বাংলাদেশের দীর্ঘতম পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ চলছে। অক্টোবর ২০২১ পর্যন্ত প্রকল্পের ভৌত কাজ ৮৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। জুন ২০২২ সালের মধ্যে স্বপ্নের এ সেতু যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া সম্ভব হবে বলে আশা করেন তিনি। পদ্মা সেতু নির্মিত হলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগ ব্যবস্থা দ্রুত ও সহজতর হবে। এটি এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গেও যুক্ত হবে, যা প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপিত হবে। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের নির্মাণ কাজ অক্টোবর ২০২১ পর্যন্ত ৭৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ। ঢাকা শহরে সাবওয়ে (আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রো) নির্মাণের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা চলছে। অক্টোবর পর্যন্ত সমীক্ষা প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৮০ শতাংশ। সম্ভাব্যতা সমীক্ষার মাধ্যমে এলাইনমেন্ট চূড়ান্ত করে যথাসময়ে সাবওয়ে বাস্তবায়ন কাজ শুরু হবে বলেও আশা করেন প্রধানমন্ত্রী।
ban/N
