আন্তর্জাতিক রিপোর্টঃ হিলারি ক্লিনটনকে হারিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন গণমাধ্যম বলছে, হিলারি ক্লিনটন পরাজয় মেনে নিয়েছেন।
এক বছর আগেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণার সময় কেউ ভাবেননি যে ডোনাল্ড ট্রাম্প দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন। কয়েক সপ্তাহ আগেও ধারণা করা হচ্ছিল হিলারি ক্লিনটন হয়তো আগাম জয় পেয়ে যাবেন।
খুব কম মানুষই ভেবেছিলেন যে যুক্তরাষ্ট্রের এই ধনকুবের হবেন হোয়াইট হাউজের হর্তাকর্তা। কিন্তু নির্বাচনের ফলাফলে সমস্ত জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটলো।
ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন হিলারির থেকে এগিয়ে ছিলেন তখন যেমন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সরগরম ছিল, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবার পরও দেখা যাচ্ছে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ায় আনন্দ, হতাশা যেমন প্রকাশ পাচ্ছে তেমনি সামাজিক মাধ্যমে অভিনন্দনও জানানো হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনটি টুইট করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
তিনি প্রচারণার সময় ভারতীয়দের উদ্দেশ্যে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেবার জন্য মি. ট্রাম্পের প্রশংসা করেন এবং বলেন, ভারত-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন মাত্রা পাবেন বলে তিনি আশা করেন।
ট্রাম্পের জয়ের পর অনেক হিলারি ভক্ত যেমন দু:খ প্রকাশ করে ছবি পোস্ট করছেন বা টুইট করছেন তেমনি ডোনাল্ড ট্রাম্প সমর্থকদেরও উল্লাস দেখা যাচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে।
হিলারির প্রচারণা শিবিরে ছিলেন অনেক তারকা। এদের মধ্যে ছিলেন লেডি গাগাও।
লেডি গাগা যখন দেখেছেন হিলারির জয়ের কোনও সম্ভাবনা নেই তখন তিনি মঞ্চের পেছনে বসে কেঁদেছেন- টু্ইট করে এমন খবর দিয়েছেন এমএসএনবিসির রাজনৈতিক সংবাদদাতা কেসি হান্ট।
নির্বাচনের আগেই ধারণা করা হচ্ছিল যে, অনলাইন দুনিয়ায় গভীরভাবে বিভক্ত আমেরিকানদের একীভূত করে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেশ পরিচালনা করা খুবই কঠিন হবে।
প্রচারণার সময় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে হিলারি ক্লিনটন সমর্থকদের কন্ঠই যেমন উঁচু থাকতো, পরাজয়ের পরেও দেখা যাচ্ছে, তাঁর সমর্থকদের কন্ঠ এতটুকুও নিচু হয়নি।
হিলারি সমর্থকরা এখন অনলাইনে দুটি হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করছে।
একটি হচ্ছে, “এখনো তার সাথেই আছি”। আর আরেকটি “সে আমার প্রেসিডেন্ট নয়”।
এই দুটি হ্যাশট্যাগ দিয়ে মূলত অনলাইন দুনিয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বর্জন করছেন তার বিরোধীরা।
বাংলাদেশের মানুষও দেশ ও দেশের বাইরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জানাচ্ছে তাদের প্রতিক্রিয়া।
অনেকে আমেরিকানদের বোকা জাতি উল্লেখ করে বিভিন্ন মন্তব্য পোস্ট করছেন।
শামসুদ্দোহা সেলিম যেমন লিখেছেন “ট্রাম্পের উগ্রবাদকে প্রশ্রয় দিয়ে আমেরিকানরা প্রমাণ করলো ওরা এখনো বর্ণবাদে বিশ্বাসী।”
“বিশ্বের জন্য এটা একটা অন্ধকার দিন”-লিখেছেন সিফাত সাইদ অনা।
অন্যদিকে আহমেদ জাবিদ হাসান লিখেছেন “ঘরের খেয়ে বনের মেষ তাড়ানো…..! . হিলারি ও ট্রাম্প যেই হোক- ডেমোক্রেট আর রিপাবলিক কেউই ভিন্ন নয়। ..এরা কখনো হোয়াইট হাউসে কোন বিল বা আইন পাশের সময় বড়সড় বিরোধিতা করেনা”।
অনেকে ব্যাঙ্গাত্মক বা হাস্যরসাত্মক মন্তব্যও পোস্ট করছেন ফেসবুক, টুইটারসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে।
রুম্পা জামান যেমন লিখেছেন “যে দেশ নিজেই নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে এতো সন্দিহান, সে দেশ আবার এ বিষয়ে করে জ্ঞান দান..ট্রাম্পকে সম্ভাষণ..একদিন প্রিন্স মুসাও পাইতে পারে দেশের সিংহাসন”।
“নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প বিজয়ী!! মার্কিন জাতি যতই সভ্যতার মুখোশ পরে থাকুক না কেন, পুরো জাতিটাই আসলে আগাগোড়া বর্বরতায় পরিপূর্ণ”- বিবিসির ফেসবুক পাতায় লিখেছেন মোরশেদ আলম।
নির্বাচনেরআগে ট্রাম্প বিরোধীদের অনেকের মন্তব্য ছিল ডোানাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হরে তারা দেশ ছেড়ে কানাডায় চলে যাবে। আর তাই ট্রাম্পের জয়ের পর কানাডা থেকে অনেক বাঙালি লিখেছেন “আমেরিকার জনগণকে এবার কানাডায় স্বাগতম।”
বি/বি/সি/এন