উজ্জ্বল রায়, নড়াইল থেকে: নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার জয়পুর শ্রী তারক ঠাকুরের মন্দির কমিটির মিটিং এ ১০-১৫ জন সনাতন ধর্মের সন্ত্রাসীরা অতকিত হামলা চালিয়ে ১০-১৫ জন মতুয়া হরিচাঁদ ভক্তদের আহত করে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন।

লক্ষ লক্ষ মতুয়া ভক্ত, নেতা কর্মীরা এ কু-কর্মের নিন্দা ও ধীক্কার জানিয়েছে। গত ০১(এক) মাস পূর্বে নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার জয়পুর তারক ধামের পরিচালনা কমিটি গঠন হয়।

উক্ত কমিটি গঠনের সময় শ্রী ধাম ওড়াকান্দি ধামের মতুয়া মহাসংঘের সভাপতি শ্রী সুব্রত ঠাকুর সহ প্রায় পাঁচ শতাধিক মতুয়া নেতা, কর্মী ও ভক্ত উপস্থিত ছিলেন। নির্বিগ্নে কমিটি তৈরি হয় তবে কয়েক জন তারা পদ পদবী না পাওয়ায় বিরাগভাজন হয়। কমিটি উক্ত সভায় ঘোষণা করা হয়।

এর পর ১০ই জানুয়ারি ২০২২ তারিখ উক্ত ধামে প্রথম মিটিং ডাকা হয়। উল্লেখ্য উক্ত মিটিং এর সময় তারক ধামের বিপক্ষ একটি চক্র উক্ত সভার সামান্য দূরে একই সময় আর একটি মিটিং শুরু করেন। তারক ধামের নতুন কমিটির মিটিং চলা কালীন সময় হটাৎ চেয়ার লাঠি নিয়ে বিরোধী চক্ররা মিটিং এ বসা মতুয়া ভক্তদের এলোপাতাড়ি ভাবে মারপিট শুরু করে।

তারা মারধর করে পালিয়ে চলে যায়। আহতদের লোহাগড়া হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। দশ পনের জন গুরুতর আহত হয়। জানা যায় এ ব্যাপারে থানায় কেচ করতে গেলে ধর্ম প্রতিষ্ঠানের ব্যাপার বিধায় প্রশাসন কেচ গ্রহণ করে নি।

এ ঘটনার পর উক্ত সন্ত্রাসী দল নিজেদের অপকর্ম ঢাকা দেওয়ার জন্য গত ২৩শে জানুয়ারি ২০২২ “দৈনিক চিত্র” নামে একটি পত্রিকায় সংবাদ পরিবেশ করে।

বানোয়াট, উদ্দেশ্য প্রনদিত, মিথ্যা তথ্য পরিবেশন করে পত্রিকায় প্রকাশ করায় লক্ষ লক্ষ মতুয়া ভক্তদের সরল বিশ্বাসে আঘাত হানা হয়েছে যা মানহানি কর। খবরে প্রকাশ হয়েছে পরিক্ষিত রায় নামে একজন ধামের ৫০ লক্ষ টাকা, কয়েক শত মন চাউল, ৩২ লক্ষ টাকার সম্পত্তি ক্রয়, ৩ লক্ষ ও ৫০,০০০/- টাকার অনুদান আত্মসাৎ করেছে।

এ সকল বিষয় সরজমিনে তদন্ত্র ও জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেছে একদল স্বার্থন্বেসী মহল ঐ তারকধামের সুনাম ও তার অবকাঠাম ধ্বংশ করার জন্যই এ হামলা পরিচালনা করে এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে কমিটিতে প্রবেশ করে তারাই অর্থ আত্মসাতের জন্য অপকৌশল পরিচালনা করছেন।

ধামের কর্তা ব্যক্তিদের নিকট জানা যায়, যে দুটি বাড়ীর নামে লক্ষ লক্ষ টাকার হিসাব পত্রিকায় দেওয়া হয়েছে তার পরিমান সঠিক নয় এবং উক্ত বাড়ীতে যে, টাকার খরচ হয়েছে তা দুইজন যৌথ মালিকের ব্যক্তিগত আয়ের অর্থ।

ইতিপূর্বে প্রতি বছরের হিসাব নিকাশ কমিটি দ্বারা অনুমোদিত। উদবৃত্ত অর্থ দ্বারা তারকচাঁদ মন্দির, নাট মন্দির, অতিথিশালা, পয়প্রনালী, স্নানাগার ও পানিয় জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

লক্ষ লক্ষ ভক্তের প্রসাদ বিতরণে ও প্রচুর অর্থ ব্যয় হয়েছে। তবে তারক ধামের লক্ষ লক্ষ ভক্ত, সাধূ, মতুয়া নেতা কর্মী পৃষ্ঠপোষক যারা মতুয়া ধর্ম পালন করেন তারা এ অপকর্মকে ধীক্কার ও নিন্দা জ্ঞাপন করেছেন বলে জানা যায়।

তারা আরও বলেন, যারা মতুয়া ধামের দশ হাতের মধ্যে আর একটি তারকচাঁদ মন্দির করেছে তারা নাকি পুরাতন আদী তারকচাঁদ মন্দিরের অস্তিত্ব বিলিন করে দেবে, কোন হরিগুরু তারক চাঁদের ভক্তদের পূরণ মন্দিরে ঢুকতে দেবে না। এ জন্যই তারা মতুয়া নেতা কর্মীকে মেরেছে।

পত্রিকা মারফত জানা যায়, যাদের নেতৃত্বে উক্ত হামলা পরিচালনা করেছিল বা কমিটিকে অবৈধ বলে দাবী করেছেন তারা হলেন কমল বালা কৃষ্ণভক্ত, বিনয় বাবু, বিশ্বনাথ রায়, কমলেশ দাশ প্রমুখ। তবে তারক ধামে পরিক্ষিত রায় বলে কাউকে খুজে পাওয়া যায়নি। আশে পাশের মতুয়া হরিভক্তদের কাছে জিজ্ঞাসাদ করে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ঐ কয়েক জন লোক ধামে একচেটিয়া অধিপত্ত ও দখল দারী করার জন্য এই কু-কর্ম ও অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। মতুয়া নেতারা জানিয়েছে এর পর যদি এ ঘটনা পুনরাবৃত্তি হয় তবে তারা জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ জানাবে তাদের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে