জাতীয় পার্টি থেকে পদত্যাগ করেছেন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র প্রযোজক, পরিচালক ও ড্যাসিং হিরো খ্যাত জনপ্রিয় চিত্রনায়ক মাসুদ পারভেজ ওরফে সোহেল রানা ।
গত ১০ ই অক্টোবর শনিবার জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বরাবর রেজিষ্টার্ড ডাকযোগে পাঠানো এক চিঠিতে তিনি তার পদত্যাগের সিদ্ধান্তের কথা জানান।
মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা নিজের পদত্যাগের বিষয়টি সংবাদ সংস্থা বিডিপ্রেস এজেন্সিকে নিজেই নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম মেম্বার, জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির কেন্দ্রীয় সভাপতিসহ জাতীয় পার্টির সকল পর্যায়ের কমিটি থেকে আমি স্ব ইচ্ছায় পদত্যাগ করেছি।
পদত্যাগের কারণ সর্ম্পকে বিডিপ্রেস এজেন্সিকে সোহেল রানা বলেন, তৃনমূলের কর্মিদের যথাযথ মূল্যায়ন না করা ও দেশজুড়ে নিবেদিতপ্রান নেতাদের অবমুল্যায়ন, দুর্বল সাংগঠনিক কার্যক্রমসহ পার্টির নানা হটকারি সিদ্ধান্ত আমাকে ব্যথিত করেছে।
তিনি বলেন, অনেক হয়েছে আর নয়, সন্মান নিয়ে আছি, থাকতে চাই তবে এ দলের সাথে আর নয়।
সোহেল রানার পদত্যাগ বিষয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বিডিপ্রেস এজেন্সিকে বলেন, চিঠি আমার হাতে আসেনি, বিষয়টা আমি জানিও না। সোহেল রানা দীর্ঘদিন ধরে জাপার রাজনীতিতে নিস্ক্রিয় বলেও জানান তিনি।
এদিকে চিঠি পাঠানো কিংবা সোহেল রানার পদত্যাগের বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন দলের যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলম।
মাসুদ পারভেজের জন্ম: ১৯৪৭ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি। তিনি চলচ্চিত্রের একজন প্রখ্যাত অভিনেতা, প্রযোজক ও পরিচালক।
বাংলা চলচ্চিত্র অভিনয়ে নতুন একটি ধারা সৃষ্টির মুল কারিগর তিনি।
তার হাত ধরে কয়েক ডজন শিল্পী কলাকুশলী চলচ্চিত্র জগতে প্রথম পা রাখেন।
তিনি চলচ্চিত্রে নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন সোহেল রানা নাম ধারণ করে।
কিন্তু ১৯৭২ সালে মাসুদ পারভেজ নামে চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেন।বাংলাদেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র ওরা ১১ জন ছবির প্রযোজক হিসেবে চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করেন। এটি পরিচালনা করেন চাষী নজরুল ইসলাম। ১৯৭৩ সালে সোহেল রানা নাম ধারণ করে কাজী আনোয়ার হোসেন এর বিখ্যাত কাল্পনিক চরিত্র মাসুদ রানা একটি গল্প অবলম্বনে মাসুদ রানা ছবির নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন এবং একই ছবির মাধ্যমে তিনি মাসুদ পারভেজ নামে পরিচালক হিসেবেও যাত্রা শুরু করেন।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পে তার অসামান্য অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকারের নিকট থেকে তিনি তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।
মাসুদ পারভেজ ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের তুখোড় নেতা ছিলেন।
ছিলেন ঢাবির ইকবাল হলের নির্বাচিত ভিপি।
তিনি ২০০৯ সালে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্যপদ গ্রহণ করে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন।
ছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের নির্বাচন বিষয়ক উপদেষ্টা।
১৯৯০ সালে জনপ্রিয় এই চিত্রনায়ক ডা. জিনাত বেগমকে বিয়ে করেন। তাদের একমাত্র সন্তান পুত্র মাশরুর পারভেজ জীবরান।
অভিনেতা মাসুম পারভেজ রুবেল তার ছোট ভাই।
BB/P