মারুফ সরকার, ঢাকা থেকেঃ বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসা বলেন, জাতিসংঘের ৭৫ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী এমন সময় পালিত হয়েছে যে সময় সারা বিশ্বের মানুষ করোনায় আক্রান্ত।১৯৪৮ সাল থেকে প্রতি বছরের ২৪ শে অক্টোবর জাতিসংঘ দিবস হিসেবে পালন করে আসছে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলো, বিশ্বের শান্তি রক্ষায় ১৯৪৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো এই সংস্থাটি। এবারের দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে, ‘সামাজিক ন্যায়বিচার অর্জনে, দূর কর সকল অসামঞ্জস্যতা’।  জাতিসংঘকে আরো কার্যকর ভূমিকা পালন করার আহ্ববান জানান।

জাতিসংঘের ৭৫ তম বার্ষিকী উপলক্ষে স্বাধীনতা সংসদ ও সাপ্তাহিক বিপ্লবী জনতা এর যৌথ উদ্যোগে “করোনাকালীন মহামারীতে মানবতার সেবায় জাতিসংঘ” এক আলোচনা সভা ও পুরষ্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ২৮ অক্টোবর ২০২০ ইং বুধবার বিকাল ৫:৩০ মিনিটে ঢাকার সেগুনবাগিচাস্থ বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল মিলনায়তনের অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেনে স্বাধীনতা সংসদের নির্বাহী চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ প্রিন্স। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাউথ ইষ্ট ইউনিভার্সিটির ট্রাষ্টি বোর্ডের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আ ন ম মেশকাত উদ্দিন, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অগ্রণী ব্যাংক লিঃ এর পরিচালক ড. মোঃ ফরজ আলী, নরসিংদী মনোহরদী সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ গোলাম ফারুক, নরসিংদী মডেল কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ কামরুল ইসলাম, অধ্যাপক জাহানারা সুলতানা রাজিয়া, সংগঠনের ভাইস চেয়ারম্যান আলী আশরাফ আখন্দ, মোঃ শফিকুল ইসলাম, সংগঠনের মহাসচিব সাহেদ আহাম্মদ, যুগ্ম মহাসচিব আর কে রিপন, বিপ্লবী জনতার নির্বাহী সম্পাদক মোঃ গোলাম ফারুক মজনু, মিলন মল্লিক সহ প্রমূখ।

প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, জাতিসংঘ ৪৬টি রাষ্ট্রের অনুসমর্থন নিয়ে যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে এর সদস্য সংখ্যা ১৯৩টি দেশ। এর সদর দফতর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অবস্থিত। তবে জাতিসংঘের ৩টি অতিরিক্ত সহায়ক ও আঞ্চলিক সদর দফতর রয়েছে। করোনা মহামারির কারণে স্বল্পোন্নতের তালিকায় উঠে আসা দেশগুলোর জন্য ২০৩০ সাল পর্যন্ত নতুন আন্তর্জাতিক সহায়তার ব্যবস্থা রাখার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বক্তব্য কোভিড-১৯ সংকট মোকাবিলায় আমাদের সু-সমন্বিত বৈশ্বিক রোডম্যাপ প্রয়োজন। এক্ষেত্রে ২০২০ এজেন্ডা, প্যারিস চুক্তি, আদ্দিস আবাবা অ্যাকশন এজেন্ডা এই সংকট কাটিয়ে ওঠার নীলনকশা হতে পারে। এক্ষেত্রে জাতিসংঘকে অব্যাহতভাবে কার্যকর ভূমিকা রেখে যেতে হবে।

শেখ হাসিনা কোভিড-১৯ সংকটের মোকাবিলা করতে আরও উন্নত সমন্বিত রোডম্যাপ তৈরি করার জন্য বিশ্বনেতাদের সামনে ছয় দফা প্রস্তার তুলে ধরেন।

প্রথমত: জি-৭, জি-২০, ওইসিডি দেশগুলো, এমডিবি এবং আইএফআইগুলোকে অর্থনৈতিক প্রণোদনা দিতে হবে এবং ঋণ মওকুফে পদক্ষেপ নিতে হবে। উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোতে ওডিএ এর ০.৭ প্রতিশ্রতির বাস্তবায়ন করতে হবে।

দ্বিতীয়ত: আমাদের আরও বেশি বেসরকারি অর্থ ও বিনিয়োগ উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সরিয়ে নিতে হবে। ডিজিটাল বিভাজন বন্ধ করার জন্য আমাদের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনকে কাজে লাগাতে হবে।

তৃতীয়ত: কোভিড-পরবর্তী শ্রম বাজারে এবং প্রবাসী শ্রমিকদের সহায়তা করার মাধ্যমে রেমিট্যান্স প্রবাহের নিম্নমুখী প্রবণতার বিপরীতমুখে নেয়ার জন্য সঠিক নীতিমালা করার পদক্ষেপ প্রয়োজন।

চতুর্থত: উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোকে অবশ্যই উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য শুল্ক এবং কোটামুক্ত বাজারে প্রবেশাধিকার, প্রযুক্তি সহায়তা এবং আরও প্রবেশযোগ্য অর্থায়নের বিষয়ে তাদের অদম্য প্রতিশ্রুতি অবশ্যই পূরণ করতে হবে।

পঞ্চম: কোভিড-১৯ মহামারির কারণে স্বল্পন্নোত দেশ থেকে উত্তরণের পর যাতে পেছনে যেতে না হয়, এজন্য অন্তত ২০৩০ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক সহায়তার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

ষষ্ঠ: পরিশেষে, জলবায়ু সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড এবং স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারের জন্য অর্থ সংগ্রহে আরও জোর প্রচেষ্টা করা দরকার। এই ঐতিহাসিক বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের বক্তব্য।

অনুষ্ঠান শেষে গুণীজনদের মাঝে সম্মাননা পুরষ্কার প্রদান করা হয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে