জুয়েল ইসলাম, তারাগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি: রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায় চিয়া নামের নতুন এক ফসলের চাষ হতে দেখা গেছে। এটি দেখতে অনেকটা তিল, তিশির ন্যায় দানা জাতীয় রবি মৌসুমের ফসলের মত। এ অঞ্চলে নতুন এ ফসলের চাষ করেছেন উপজেলার ইকরচালী ইউনিয়নের পশ্চিম ইকরচালী গ্রামের মৃত কাচু প্রামানিকের ছেলে ছাদেকুল প্রামাণিক। তিনি তারাগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় পাওয়া বীজ দিয়েই মাত্র ২০ শতাংশ জমিতে এ ফসলের চাষ করেছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস পুষ্টি সমৃদ্ধ এ চিয়া ফসল চাষের জন্য গ্রামে-গঞ্জে ঘুরে-ঘুরে কৃষকদের মাঝে চিয়া বীজের পুষ্টিগুণ ও সফলতা সম্পর্কে জানান এবং চিয়া চাষে উৎসাহিত করেন। ফলে এ উপজেলায় এ বছর তামাকের বিকল্প হিসেবে নতুন এক ফসল চিয়া চাষে কৃষকরা আগ্রহ প্রকাশ করছে। এ বছরই উপজেলা কৃষি বিভাগ উপজেলার তিন কৃষকের ৬০ শতক জমিতে চিয়া চাষ শুরু করেছেন। এটি সাধারণত কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, আমেরিকা, চিলি, মেক্সিকো, নিউজিল্যান্ডসহ বিশ্বের উন্নত দেশে চাষ হয়। চিয়ার দাম বেশি হওয়ায় তা দেশের নিম্ন বা মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে। কেজি প্রতি দুই হাজার ৭শত টাকা দরে বিক্রি হয়। চিয়ার বীজ খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যে ভাবে ইসুবগুল এর ভূসি পানিতে ভিজিয়ে খেতে হয়, সেই ভাবে পানিতে ভিজিয়ে রাখলে এক ধরনের জেলি বের হয়। ওই জেলি খেতে হয়। এছাড়াও রুটি, পুডিং, কেক, পাউরুটির সাথেও তা খাওয়া যায়।

সরেজমিনে চিয়া ক্ষেতে গিয়ে দেখা গেছে, এটি অনেকটা তিল জাতীয় উদ্ভিদের মত। ৩-৪ ফুট উচ্চতা প্রায় ১৩ ইঞ্চি লম্বা বীজের ভারে সুইয়ে পড়েছে। কিছু দিনের মধ্যে এটি কাটা হবে।

চিয়া চাষি ছাদেকুল প্রামাণিক জানান, জমি প্রস্তুত করে কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাসে বীজ ছিটিয়ে বপন করা হয়। বিঘা প্রতি ২০০ গ্রাম বীজ লাগে। তিল, তিশি জাতীয় ফসলের মতো রোদে শুকিয়ে মাড়িয়ে বীজ ছাড়ানোর মতো চিয়া বীজ বের করতে হয়। পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কম বলে কীটনাশকের ব্যবহার লাগেনা। দুই/একবার সেচ দিলেই হয়। বীজ বপনের জন্য ১৫ থেকে ২০ দিন পরে সামান্য পরিমাণ ইউরিয়া, টিএসপি ও এমওপি প্রয়োগ করতে হয়।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রাসেল সরকার জানান, চিয়ার দাম বেশি হওয়ায় তা দেশের নিম্ন বা মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে। কেজিপ্রতি দুই হাজার ৭শত টাকা দরে বিক্রি হয়। চিয়ার বীজ খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। যে ভাবে ইসুবগুল এর ভূসি পানিতে ভিজিয়ে খেতে হয়, সেভাবে পানিতে ভিজিয়ে রাখলে এক ধরনের জেলি বের হয়। ওই জেলি খেতে হয়। এছাড়াও এটি রুটি, পুডিং, কেক, পাউরুটির সাথেও তা খাওয়া যায়।

তারাগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার ঊর্মি তাবাসসুম বলেন, পুষ্টি গুণ সম্পন্ন চিয়া আগামী রবি মৌসুমে প্রতি ইউনিয়নে চাষের জন্য কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে