ডেস্ক স্পোর্টসঃ পেপ গার্দিওলার সেই দলটির কথা কেউ ভোলেনি। লিওনেল মেসি, আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা, জাভি হার্নান্দেজের বার্সেলোনাকে এক মৌসুমে ছয়টি শিরোপা জিতিয়েছিলেন এই স্প্যানিশ কোচ। সম্ভাব্য সব কটি শিরোপা জিতে গার্দিওলার সেই বার্সা পেয়েছিল ইতিহাসের অন্যতম সেরা দলের মর্যাদা। এরপর জার্মান বুন্দেসলিগা জিতে গত মৌসুমে ম্যানচেস্টার সিটিকে নিয়ে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ জয়ের মিশনে নেমেছেন গার্দিওলা। প্রথম মৌসুমে ব্যর্থ হলেও এবার বেশ আটঘাট বেঁধেই নেমেছেন পেপ। তার প্রমাণ, ‘সিটিজেন’রা লিগে এখনো হারেনি!

তবে লিগের শুধু অর্ধেক পথ শেষ হয়েছে। এর মধ্যেই গার্দিওলার সেই বার্সার সঙ্গে এই ম্যানসিটির তুলনা হয়তো বাড়াবাড়ি মনে হতে পারে। কিন্তু লক্ষণ কিন্তু সে রকমই। ইউরোপের সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ লিগে ১১ পয়েন্ট ব্যবধানে শীর্ষস্থান কায়েম করাটা চাট্টিখানি কথা নয়। পরশু রাতে লিগে টানা ১৪তম জয় তুলে নেন আগুয়েরো-সিলভারা। গার্দিওলার অতীত দলগুলোর সঙ্গে তাঁর বর্তমান দলটির তথ্য-উপাত্তভিত্তিক তুলনাটা তাই সময়ের দাবি—

ম্যাচ জয় ও গড় পয়েন্ট
ম্যানসিটি এই মৌসুমে ৯৩.৮ শতাংশ ম্যাচ জিতেছে। একমাত্র এভারটনের বিপক্ষেই জিততে পারেননি গার্দিওলা, সেবার প্রথমার্ধেই লাল কার্ড দেখেছিলেন কাইল ওয়াকার। বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে ৮৫.২৯ শতাংশ ম্যাচ জিতেছিলেন পেপ। বার্সেলোনার হয়ে তাঁর জয়ের হার ৮৩.৭৭ শতাংশ।

পাস
গার্দিওলার দল মানেই পাসের ফুলঝুরি। প্রথম মৌসুমে ম্যাচ প্রতি ৫৪৬টি পাস খেলেছে বার্সেলোনা। তৃতীয় মৌসুমে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৭৪৭ পাস। ম্যানসিটির হয়ে গত মৌসুমে গার্দিওলার শিষ্যরা গড়ে ৫৯৮টি পাস খেললেও এবার তা ইতিমধ্যেই ৭২৪ এ গিয়ে ঠেকেছে।

বল দখল
রোববার ওল্ড ট্রাফোর্ডে মরিনহোর ইউনাইটেডের বিপক্ষে ৬৪.৬ শতাংশ বল দখলে রেখেছিল ম্যানসিটি, যা এই মৌসুমে হোসে মরিনহোর দলের বিপক্ষে সর্বোচ্চ। পুরো মৌসুমে ৭১.৮ শতাংশ বল দখলে রেখেছে গার্দিওলার শিষ্যরা। ২০১০-১১ মৌসুমে এই একই কোচের অধীনে ৭২.৮ শতাংশ বল দখলে রেখেছিল বার্সা।

গোল
১৬ ম্যাচে ৪৮ গোল করেছে ম্যানসিটি, ম্যাচপ্রতি গড়ে ৩ গোল। ২০১১-১২ মৌসুমে বার্সেলোনাও ম্যাচপ্রতি ৩ গোল করেছিল। শটের হিসাবে গার্দিওলার দলের ম্যাচপ্রতি শটের সংখ্যা কখনোই ১৫.৬-এর নিচে নামেনি। তবে লক্ষ্যে শট নিতে গতবারই তলানির চেহারা দেখেছেন গার্দিওলা। গত মৌসুমে ৫.৭ শতাংশ শট লক্ষ্যে রেখেছিলেন তাঁর শিষ্যরা।

রক্ষণ
বল দখল বেড়ে যাওয়ায় অনুমিতভাবেই কমেছে বল জেতার পরিসংখ্যান। ম্যাচপ্রতি ১৫টি ট্যাকল আর ৯.৫টি ‘ইন্টারসেপশন’ করেছে গার্দিওলার ম্যানসিটি।

গার্দিওলার ম্যানসিটিকে এখনো অনেক পথ পারি দিতে হবে। ফেলে আসা পথের আলোকে দেখে মনে হচ্ছে, স্প্যানিশ কোচের জয়ক্ষুধা এতটুকু কমেনি। বরং তাঁর জাদুকরি ছোঁয়ায় আমূল বদলে গিয়েছে ম্যানচেস্টারের নীল অংশ। তাই তো নগর প্রতিদ্বন্দ্বী ‘রেড ডেভিল’ খ্যাত ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে হারিয়ে গার্দিওলার দৃপ্ত উচ্চারণ, ‘সবাই বলেছিল আমরা বার্সেলোনায় যা করেছি, তা ইংল্যান্ডে সম্ভব নয়। এটা সম্ভব। বল পায়ে রাখা, ফুটবল খেলা কিংবা খেলার সাহস দেখানো সব দেশেই সম্ভব।’ সূত্র স্কাইস্পোর্টস, সকারওয়ে, ফোরফোরটু।

 

 

 

Pr/A/N.

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে