নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার গয়াবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সামছুল হকের বিরুদ্ধে “এক্সসোলজার এসোসিয়েশন” -এর ৩৪ লক্ষ টাকা আত্মসাৎসহ ইউনিয়ন পরিষদের জায়গায় দখল এবং অলিখিত ভাবে টাকার বিনিময়ে বিভিন্নজনের কাছে মৌখিক চুক্তির গুরুতর অভিযোগ উঠে গয়াবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান সামছুল হক ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে।ডিমলা উপজেলা “এক্সসোলজার এসোসিয়েশন”-এর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সাক্ষরিত এক আবেদন পত্রে ৫ নং গয়াবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান সামছুল হকের বিরুদ্ধে ৩৪ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশের আবেদন করা করে।আবেদন সূত্রে জানা যায়, অবসরের শেষ প্রান্তে পেনশনের টাকা দিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে মোটামুটি সাচ্ছন্দ্যের সাথে সংসার পরিচালনা করে আসছিলেন। এমতাবস্থায়, ২০১৯ সালের মে মাসে নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার ৫ নং গয়াবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ সামছুল হকের সাথে অবসর প্রাপ্ত সেনা সদস্য মোঃ মোশারফ হোসেনের ব্যবসায়িক বিষয়ে আলোচনা হয়। এ প্রেক্ষিতে ডিমলা উপজেলাধীন তিস্তা নদীতে সরকারী অনুমতিক্রমে বালু ও নূড়ী পাথর উত্তোলণের প্রস্তাব দেয়। তার প্রস্তাবে প্রলুব্ধ হয়ে অবসর প্রাপ্ত সেনা সদস্য মোঃ মোশারফ হোসেন নিম্ন স্বাক্ষরকারী অন্যন্য অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যদের সাথে উক্ত বিষয়ে আলোচনা করে এবং প্রস্তাব দেয়। ইউপি চেয়ারম্যান সামছুল হক অবসর প্রাপ্ত সৈনিকদের সাংগঠনিক অফিসে এসে বিভিন্ন ভাবে প্রলুব্ধ করে এবং প্রতারণার ফাঁদে ফেলে। সামসুল হক বলেন, আমার ছেলের নামে (বৈধ ঠিকাদার) লাইসেন্স করা আছে। আমি একজন সনামধন্য ব্যাক্তি,আমি যা বলবো তাই হবে। আপনারা কোন চিন্তা করবেন না। আপনাদের টাকার গ্যারান্টি আমি। আপনারা ২০,০০,০০০/-(বিশ লক্ষ) টাকা নগদ দিবেন এবং ১৪,০০,০০০/-(চৌদ্দ লক্ষ টাকা ব্যাংক ড্রাফট (বিডি) করবেন। তার কথায় আমরা নিম্ন স্বাক্ষরকারীগন সঠিক ভাবে উপলব্ধি করতে না পেরে সরল বিশ্বাসে তাকে এবং তার ছেলেকে (মোঃ আজারুল ইসলাম রাজা, ঠিকানাঃ বাবার অনুরুপ, আইডিঃ৭৩১১২২৮৩০৯২৮) “এক্সসোলজার এসোসিয়েশন”র অফিসে ২০,০০,০০০/-(বিশ লক্ষ) নগদ দেয় এবং ১৪,০০,০০০/- (চৌদ্দ লক্ষ) টাকা ব্যাংক ড্রাফট (বিডি) করেছে। ২০,০০,০০০/- টাকা প্রদানের সাপেক্ষে নোটারী পাবলিক কার্যালয়,নীলফামারী কর্তৃক গত ১৬/৬/২০১৯ ইং সালে সাক্ষরিত হলফনামা রয়েছে এবং ১৪,০০,০০০/- টাকা সোনালী ব্যাংক,নীলফামারী শাখা কর্তৃক প্রদত্ত ব্যাংক ড্রাফটের রশিদের ফটোকপিও রয়েছে। পরবর্তীতে বিভিন্ন দাপ্তরিক জটিলতার কারণে উক্ত কাজ টি বন্ধ হয়ে গেলে প্রতারনার শিকার ১।(মোঃ মোশারফ হোসেন আইডি নংঃ১৫৯০৬৯৮০৮১৭৪১; ২। (মোঃ তহিদুল ইসলাম) আইডি নং-৮৫৫৪৯৯৮১৯৪৩৫৯; ৩। (মোঃ আজগর আলী) আইডি নং-৭৭৫৭০৬৩৩৩৯; ৪। (মোঃ আহসান হাবিবুল্লাহ) আইডি নং- ৮৫৫৪৯৯৮১৯৩৫৩৭; ৫। (মোঃ আব্দুর রশিদ) আইড নং-৭৩১১২১৩১৭৭৬৫৯; ৬। (মোঃ আশরাফ আলী) আইডি নং-২৬৫০৮৯৮৪৮১০২১আমরা নিম্ন সাক্ষরকারীগন তাকে আমাদের কর্তৃক প্রদত্ত ৩৪,০০,০০০/- (চৌত্রিশ লক্ষ) টাকা ফেরৎ চাইলে তিনি টাকা ফেরৎ দিতে অস্বীকৃতি জানান এবং বিভিন্ন প্রকার হুমকি প্রদান করেন। আমরা উপায়ন্ত না পেয়ে ডিমলা থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তার শরণাপন্ন হই কিন্তু অতীব দুঃখের বিষয় ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা মহোদয় আমাদেরকে কোন প্রকার আইনী সহায়তা না দিয়ে এবং সাধারণ ডাইরী নিতেও অনিহা প্রকাশ করে। এর পরে আমরা স্থানীয় সংসদ সদস্য এর স্বরণাপন্ন হলে তিনি এই বিষয়টি সুরাহা করার অনেক চেষ্টা করেন কিন্তু তার প্রস্তাবেও ইউপি চেয়ারম্যান সামসুল হক তোয়াক্কা না করে আমাদেরকে হুমকি ধামকি দিতে থাকেন। বিধায় প্রার্থনা এই যে, দুর্নীতি বিরোধী নেত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং দেশের আপমর জনসাধারণের কাছে আকুল আবেদন অবসর প্রাপ্ত সেনাসদস্যদের সার্বিক সহযোগিতা করে প্রদত্ত অর্থ ফেরৎ দানে বাধিত করবেন। এছাড়াও ৫ নং গয়াবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান সামছুল হকের বিরুদ্ধে প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া অবৈধভাবে সরকারি গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে। ইউপি চেয়ারম্যান সামছুল হক ইউনিয়নের তিন নং ওয়ার্ডে অবৈধভাবে গাছ কাটলে এলাকায় সমালোচনার ঝড় উঠে। এছাড়াও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজনকে বিধবা ভাতা দেয়ার নামে ৫০০০ টাকা দাবি। গত ১৯ তারিখ শুটিবাড়ি শাহিন নামে একজনের দোকানে মালামাল লুটের অভিযোগ উঠে সামসুল হকের বিরুদ্ধে যদিও পরে তা মীমাংসা হয়। সামছুল হকের নামে তৎকালিন চার দলীয় জোট সরকারের আমলে একাধিকবার দুর্নীতির অভিযোগ উঠে এবং তার নিজ বাড়ি থেকে প্রশাসন সরকারি মালামাল উদ্ধার করে। এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান সামসুল হকের সাথে বহুবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন বলেন, কোন যায়গা থেকে ফোনে আসলে তাতে যদি তার ক্ষতি হয়ে যায় সেই ভয়ে চেয়ারম্যান ফোন বন্ধ করে রাখে। জিডি না নেয়ার ব্যাপারে ডিমলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে মুঠো ফোনে জানতে চাইলে তিনি গণমাধ্যমকে জানান, সুনিদিষ্ট অভিযোগ থাকলে আমি জিডি নিতে বাধ্য। বিধবা ভাতার ব্যাপারে নীলফামারী জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নুরুন্নাহার শাহজাদীর কাছে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে জেলা প্রসাশকের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি।

Fa/Ba

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে