বেশি ভাড়া নেওয়া পরিবহনের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।

মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে ব্রিফিংকালে এ কথা জানান সেতুমন্ত্রী।

পরিবহন মালিক-শ্রমিক ফেডারেশনের নেতাদের পুনঃনির্ধারিত হারের চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় এবং যাত্রী ভোগান্তি থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, তা না হলে দায়ী পরিবহনের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পরিবহন মালিক সমিতি ও শ্রমিক ফেডারেশনের নেতারা পুনঃনির্ধারিত হারে ভাড়া আদায়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হলেও গত সোমবার (৯ নভেম্বর) বিভিন্ন পরিবহনে অধিক হারে ভাড়া আদায়ের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এ কথা বলেন।

ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্যবৃদ্ধিতে সরকার ডিজেলচালিত যাত্রীবাহী পরিবহনের ভাড়া পুনঃনির্ধারণ করেছে বলেও জানান সেতুমন্ত্রী।

অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিরুদ্ধে আজ থেকে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে বিআরটিএ’র ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচ্ছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ইতোমধ্যে দেশব্যাপী অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার জন্য মাঠ পর্যায়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

তিনি বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, হাইওয়ে পুলিশ, জেলা পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ বিষয়ে কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান। মালিক ও শ্রমিক নেতাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ভাড়া নেওয়া না হলে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, কিছু কিছু গণমাধ্যম দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করলেও দু-একটি গণমাধ্যম বিরূপ ও অপমানজনক সমালোচনা করছে, যা প্রত্যাশিত নয়। যাত্রী কল্যাণ সমিতি নামে একটি ভুয়া সংগঠন বিষয়টি না জেনে, না বুঝে যা নয় তা সমালোচনা করছে। তাহলে পরিবহন ধর্মঘট অব্যাহত থাকলে সেটা কী জনগণের জন্য কল্যাণকর হতো? যাত্রী ভোগান্তি কমাতে অতীতের ধারাবাহিকতায় গণমাধ্যমের মূল্যবান পরামর্শ আমাদের কাছে অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ।

বিএনপির আমলে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি ছিল নৈমিত্তিক ঘটনা, সেটা বিএনপি ভুলে গেলেও জনগণ ভোলেনি উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির পাঁচ বছরে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছিল আট বার। তারা মূল্য কমাতে পারেনি। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কম থাকলেও দেশে তারা দাম বাড়িয়েছিল।  

আওয়ামী লীগ গত ১৩ বছরে পাঁচ বার মূল্যবৃদ্ধি করলেও পাঁচ বার মূল্য হ্রাসও করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণের সাত দিনের মধ্যে জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাস করেছিলেন।

তিনি বলেন, বিএনপি নেতাদের বক্তব্য শুনলে মনে হয় দেশ যেন যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, কিংবা দুর্ভিক্ষ চলছে এবং জনগণের পিঠ নাকি দেয়ালে ঠেকে গেছে। আসলে এসব নেতিবাচক বক্তব্য একটি দায়িত্বহীন রাজনৈতিক দলের হতাশার বহিঃপ্রকাশ ছাড়া আর কিছু নয়।

জনগণের পিঠ দেয়ালে ঠেকেনি, দেশের জনগণ এগিয়ে চলছে সম্মুখ পানে, এ মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে বিএনপির।

এর আগে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক এডিবির বাংলাদেশের নতুন কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিন্টিং এবং বিদায়ী কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশের নেতৃত্বে এডিবির একটি প্রতিনিধিদল সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অফিস কক্ষে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশে এডিবির সহায়তায় যেসব প্রকল্পের কাজ চলমান সেগুলোর অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়।

ban/N

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে